রাজনীতি নিয়ে আবেগের কমতি নেই। তাই বলে নিজের অঙ্গ বলি দিতে হবে! লোকসভা নির্বাচনের পর এমনটাই করেছেন এক বিজেপি সমর্থক। এনডিএ-র জয়ে নিজের হাতের আঙুল কেটে মা কালীকে উৎসর্গ করেছেন তিনি। কোথায় ঘটেছে এই কাণ্ড? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
রেজাল্টের দিন মন্দিরে পুজো দিতে ছোটেন অনেকেই। ভোটের বেলাতেও ব্যতিক্রম হয় না। নেতা থেকে শুরু করে দলের সমর্থক, সকলেই জেতার আশায় মন্দিরে পুজো দিতে ছোটেন। মানতও করেন কেউ কেউ। এমনই এক ব্যক্তি মন্দিরে মানত করেছিলেন, বিজেপি জিতলে নিজের অঙ্গ বলি দেবেন। বাস্তবে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও, জাদুসংখ্যা পেরিয়েছে এনডিএ। আর তাতেই মন্দিরে গিয়ে নিজের মানত পূরণ করেছেন ওই ব্যক্তি।
আরও শুনুন: যত দোষ আমিষে! অথচ মাছ-মাংস নয়, ভোটের হাওয়া ঘোরাল ডাল-সবজিও
ঘটনাটি ছত্তিশগড়ের। সেখানকার বলরামপুর এলাকার বাসিন্দা বছর ৩০-র দুর্গেশ পাণ্ডে, নিজেকে বিজেপি সমর্থক হিসেবেই দাবি করেন। স্বাভাবিকভাবেই লোকসভা নির্বাচনে দেশজুড়ে পদ্ম ফোটার স্বপ্ন দেখেছিলেন। এক্সিট পোলের হিসাব সেই আভাস দিয়েওছিল। মোটের উপর অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে চলেছে বিজেপিই। তৃতীয়বারের জন্য মোদিই হতে চলেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু ভোটের ফলে দেখা যায়, এক্সিট পোলের হিসাব কার্যত মেলেনি। শেষমেশ বিজেপি শাসিত এনডি-এ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও, ফল ঘোষণার দিন শুরু থেকেই ছিল ‘কাঁটো কা টক্কর’। পছন্দের দলের সেই অবস্থা দেখেই বেজায় ঘাবড়ে যান দুর্গেশ। তড়িঘড়ি ছোটেন স্থানীয় কালি মন্দিরে। যুবকের দাবি, সেদিন মন্দিরে গিয়েই ঠাকুরের কাছে বিজেপির জয় প্রার্থনা করেন। শুধু তাই নয়, দল জিতলে নিজের অঙ্গ বলি দেবেন বলে মানতও করেন। আশ্চর্যভাবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেখা যায়, সামগ্রিকভাবে এনডিএ-র পাল্লা ভারি হচ্ছে। আর সেই সংখ্যা ম্যাজিক ফিগার পেরোতেই আবার মন্দিরে ছোটেন দুর্গেশ। মনে মনে ধন্যবাদ জানিয়ে, কেটে ফেলেন নিজের বাঁ হাতের আঙুল। ঝোঁকের বশে এই কাজ করলেও, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ দেখে বেজায় ঘাবড়ে যান দুর্গেশ। মন্দির ততক্ষণে রক্তে ভেসে যাচ্ছে। সেই সময় যে কজন মন্দিরের আশেপাশে ছিলেন তাঁরাই, দুর্গেশকে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। কাটা আঙুল জোরা লাগানো সম্ভব হয়নি। তবে প্রাথমিক চিকিৎসার পর দুর্গেশের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলেই জানিয়ে দেন চিকিৎসকরা। তবে আঙুল নিয়ে কোনও আক্ষেপ নেই দুর্গেশের। বরং বিজেপি ৪০০-র গণ্ডি পেরোলে আরও খুশি হতেন বলেই জানিয়েছেন তিনি। একসময় গঙ্গাসাগরে সন্তান বিসর্জনের চল ছিল, এমনকি দেবতার পায়ে নিজের অঙ্গ বলি দেওয়ার ঘটনাও নতুন নয়। কিন্তু এই সময় দাঁড়িয়ে এই ধরনের ঘটনা বেশ অবাক করে, তাও রাজনীতির জন্য!