অযোধ্যার মন্দিরে রোজই নতুনভাবে সাজবেন রাম। তার জন্য দরকার হবে পোশাকের পাহাড়। এই কাজ কি আর একজনের পক্ষে সম্ভব! তাই গোটা দেশের সাধারণ মানুষকে রামের নামে সুতো বোনার আহবান জানিয়েছে পুনের সংস্থা। ঠিক কী দাবি তাদের?আসুন শুনে নিই।
কেউ ব্যাঙ্কে চাকরি করেন, কেউ বা সরকারি অফিসার। রামমন্দির উদ্বোধনের আবহে এঁরা নিজেদের পেশাগত পরিচয় ভুলেছেন। সকলেই মন দিয়েছেন সুতো বোনার কাজে। যা ব্যবহার করে তৈরি হবে রামলালার পোশাক। সম্প্রতি এমনই এক অভিনব প্রকল্প চালু করেছে পুনের সংস্থা।
আরও শুনুন: সেজে উঠবে অযোধ্যার মন্দির, রামের মূর্তি বানাচ্ছেন বাংলার জামালউদ্দিন
নতুন বছরের শুরুতেই রামমন্দিরের উদ্বোধন। লোকসভা ভোটের আগে এই উদ্বোধনকে সামনে রেখেই নতুন রাজনৈতিক পালে হাওয়া লাগাবে গেরুয়া শিবির। রাজনৈতিক মহলের একাংশ অন্তত তেমনটাই দাবি করছে। এদিকে উদ্বোধনের দিন যত এগিয়ে আসছে তত বেশি করে সামনে আসছে রামলালা সম্পর্কিত তথ্য। বাংলার মুসলিম শিল্পী যেমন মন্দির চত্বর সাজাতে রামের মূর্তি গড়ছেন, তেমনই গোটা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তৈরি হয়ে আসছে মন্দিরের ঘণ্টা, দরজা আরও কত কী! এই আবহে সামনে এল আরও এক তথ্য। মহারাষ্ট্রের এক সংস্থার অভিনব উদ্যোগে শামিল হয়ে রামের জন্য পোশাক তৈরির সুযোগ পাচ্ছেন লাখ লাখ সাধারণ ভক্ত। আসলে মন্দির সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রতিদিন নতুনভাবে সাজানো হবে রামলালার মূর্তি। সপ্তাহের সাতদিন সাতটি আলাদা আলাদা রঙের পোশাক পরানো হবে রামলালাকে। এরজন্য আগেভাগে পোশাক তৈরি শুরু না করে উপায় নেই! এমনকি কয়েকজনের পক্ষেও এত পোশাক তৈরি সম্ভব নয়। তাই অভিনব এক উদ্যোগ নেয় মহারাষ্ট্রের সংস্থা।
আরও শুনুন: রাম নামে মুছবে ভেদাভেদ! অযোধ্যার মন্দির উদ্বোধনে আমন্ত্রণ মুসলিমপ্রধান দেশগুলিকেও
‘দো ধাগে শ্রীরাম কে লিয়ে’, এই ছিল উদ্যোগের পোশাকি নাম। যা আসলে সকলকে রামের নামে পোশাক তৈরির আহ্বান জানাচ্ছে। গোটা দেশের মানুষ এই উদ্যোগে শামিল হতে পারে। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই অনলাইনে প্রায় ৩ লক্ষ ভক্ত এতে শামিল হওয়ার আবেদনও জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়, রামের জন্য পোশাক তৈরির আশায় ওই সংস্থার অফলাইন স্টোরেও ভিড় জমাচ্ছেন অনেকেই। সেখানে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ তাঁতিরাই সুতো বোনার কাজ শেখাচ্ছেন। সংস্থার দাবি, রামের নামে বয়নশিল্পীদের প্রতি সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা বাড়ানোই তাঁদের আসল উদ্দেশ্য। কীভাবে দীর্ঘ অধ্যাবসায় আর কঠিন পরিশ্রমের মাধ্যমে কোনও পোশাক তৈরি করেন তাঁতিরা তা সকলের সামনে আসুক এমনটাই চায় ওই সংস্থা। এবং রামের নামে সেই কাজে তাঁরা যথেষ্টই সফল হতে পেরেছেন বলেই মনে করছেন। এদিকে যাঁরা সুতো বোনার কাজে যোগ দিয়েছেন তাঁরাও বেজায় খুশি। নিজেদের রোজকার কর্মব্যস্ততা ভুলে রামের জন্য সুতো বুনছেন মন দিয়ে। সেই দলে যেমন বয়স্করা রয়েছেন তেমনই রয়েছেন তরুণ তুর্কিরাও। যদিও ডিসেম্বরের শেষের দিকে আপাতত এই ক্যাম্পেন শেষ করা হবে। কারণ স্রেফ সুতো বুনলেই তো হল না, তার উপর জরি বসিয়ে, রামলালার মূর্তি অনুযায়ী তৈরি হবে বিশেষ পোশাক। সেসবের দায়িত্ব অবশ্য পেয়েছেন বারানসীর এক অভিজ্ঞ শিল্পী। তবু রামের মূর্তিতে যে পোশাক চাপবে, তার সামান্য টুকরোও যদি বানানোর সুযোগ মেলে তাহলে নিজেকে ধন্য মনে করবেন বলে দাবি অনেকের। তাই দলে দলে এই সুতো বোনার কাজে যোগ দিয়েছেন রামলালার ভক্তরা।