মার যেতে পারে ব্যবসা। তাও কানওয়ার নির্দেশকে স্বাগত জানাচ্ছেন যোগীরাজ্যের মুসলিম ব্যবসায়ী। যাত্রার সময় দোকান বন্ধ রাখতেও আপত্তি নেই তাঁর। ঠিক কী বলছেন এই ব্যবসায়ী? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
সব দোকানের সামনে লিখতে হবে মালিকের নাম, কানওয়ার যাত্রার আবহে যোগীরাজ্যের এই নির্দেশ ঘিরে উসকে উঠেছে বিতর্ক। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবি, এইভাবে মুসলিম দোকানিদের বিপাকে ফেলার চেষ্টা করছে প্রশাসন। যদিও যোগীরাজ্যের এক মুসলিম ব্যবসায়ী এ বিষয়ে কোনও আপত্তিই তোলেননি। বরং সরকারি নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি।
:আরও শুনুন:
ব্যবসা বাঁচাতে মুসলিম কর্মী ছাঁটাই, কানওয়ার যাত্রা নিয়ে যোগীর নির্দেশে পেটে টান ব্যবসায়ীদের
শ্রাবণ মাস পড়তেই শুরু কানওয়ার যাত্রার তোড়জোড়। শিবভক্তরা প্রায় কয়েকশো কিমি হেঁটে পৌঁছবেন নির্দিষ্ট গন্তব্যে। দীর্ঘ যাত্রাপথে তাঁদের কোনওরূপ অসুবিধা যাতে না হয়, সে দিকে বিশেষ নজর উত্তরপ্রদেশ সরকারের। আর সেই প্রসঙ্গেই জারি হয়েছে নয়া নিয়ম। পুলিশের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কানওয়ার যাত্রীরা যে পথ ধরে হাঁটবেন তার আশেপাশে থাকা সমস্ত ধাবা-দোকান বা অস্থায়ী ঠেলার সামনে স্পষ্ট করে লিখতে হবে মালিকের নাম। আসলে খাবারের দোকানের মালিক ও কর্মীদের ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ্যে নিয়ে আসাই এই নির্দেশের উদ্দেশ্য, এমনটাই বলছেন অনেকে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কথায়, এই নির্দেশে আসলে পেটে টান পড়ছে মুসলিমদের। ইতিমধ্যেই অনেক দোকান, মুসলিম কর্মীদের ছাঁটাই করতে শুরু করেছে। দোকানের মালিক হিন্দু হলেও, মুসলিম কর্মী দেখে যদি তীর্থযাত্রীরা পিছিয়ে যান, তাই আগেভাগেই ব্যবস্থা সেরে রাখছেন তাঁরা। তবে সবাই যে সেই দলে নাম লিখিয়েছেন এমনটা নয়। কানওয়ার যাত্রার পথেই রয়েছে ‘ভির জি দা ধাবা’। মালিকের নাম ইবরার। সরকারি নির্দেশে তাঁকেও দোকানের বাইরে নিজের নাম লিখতে হচ্ছে। এতে ব্যবসা যে মার যেতে পারে সেকথাও ভালো মতো জানেন তিনি। কিন্তু তাই বলে দোকানের কোনও কর্মীকেই ছাঁটাই করার পক্ষপাতী নন। এমনকি সরকারি নির্দেশের বিরোধিতাও করছেন না। যাত্রার কদিন দোকান বন্ধ রাখতেও আপত্তি নেই ইবরারের। যদিও তিনি মনে করছেন, কে কোন দোকানে খাবে সেটা সম্পূর্ণভাবে গ্রাহকের পছন্দ। এর সঙ্গে ধর্মের যোগ টানতে নারাজ ওই মুসলিম ব্যবসায়ী।
:আরও শুনুন:
মালিকের নাম লিখতেই হবে, কানওয়ার যাত্রীদের ‘মুসলিম’ দোকান চেনাতে তৎপর প্রশাসন
যোগীরাজ্যের এই নির্দেশ ঘিরে এমনিতেই জোর বিতর্ক চলছে। বিরোধী পক্ষের নেতারাও এ বিষয়ে সরব হয়েছেন। পালটা গেরুয়া শিবিরের দাবি, কানওয়ার যাত্রীরা যেন মুসলিম দোকানে খাবার না খেয়ে ফেলেন তা নিশ্চিত করতেই এই ব্যবস্থা। তবে কানওয়ার যাত্রীরা যে ঠিক তেমনটাই ভাবছেন তা নয়। বরং নিজেদের ভক্তিতেই বিশ্বাস রাখছেন তাঁরা। কোনও নির্দিষ্ট দোকানে খাবার খেলে পাপ হবে এমনটা মনে করতে চাইছেন না তীর্থযাত্রীদের একাংশ। তবে এই ব্যবস্থায় বিশেষ কিছু সুবিধা হবে বলে মনে করছেন কানওয়ার যাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, যাত্রার সময় ইচ্ছা করে খাবারের দাম বাড়িয়ে দেন অনেক ব্যবসায়ী। খাবারের মান নিয়েও নানা সমস্যা হয়। দোকানের মালিকের নাম জানতে পারলে এই ধরনের সমস্যায় সঠিকভাবে অভিযোগ জানাতে পারবেন তীর্থযাত্রীরা। তাই এই নির্দেশের সঙ্গে হিন্দু মুসলিম যোগ টানতে নারাজ খোদ তীর্থযাত্রীরাই।