ডিসেম্বর প্রায় শেষের দিকে। বিগত দু-বছর মোটেও ভাল যায়নি আমাদের। অতিমারির দু-দুটো ঢেউ, মৃত্যু, লকডাউন, ঘূর্ণিঝড়, পরিবেশ দূষণ- সব মিলিয়ে দু-টো বছর ছিল প্রায় অভিশাপের মতোই। আগামী বছরটা যেন সে সবের ছায়া পেরিয়ে নতুন ও সুন্দর হয়ে ওঠে, গোটা বিশ্ববাসীর প্রার্থনা এখন এটাই। তবে কী লেখা আছে ২০২২-এর কপালে? কেমন যাবে নতুন সাল? কী ভবিষ্যদ্বানী করেছিলেন ভাঙ্গাবাবা? শুনে নিন।
২০২০-২১ সালে অতিমারীর ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন ফরাসি দার্শনিক ও জ্যোতিষবিদ নস্ত্রাদামুস। কয়েকশো বছর আগে বলে যাওয়া সেই ভবিষ্যদ্বাণী অক্ষরে অক্ষরে মিলেছে। বুলগেরিয়ার বাসিন্দাদের কাছে তাঁদের নস্ত্রাদামুস এই মানুষটিই। তিনি ভাঙ্গা বাবা। নস্ত্রাদামুসের মতোই তিনিও একজন ভবিষ্যৎদ্রষ্টা।
মাত্র বারো বছর বয়সের চোখের দৃষ্টি হারান এই মহিলা। খুলে যায় অন্তর্দৃষ্টি। তখন থেকেই তিনি ভবিষ্যৎ দেখতে পেতেন বলে দাবি করা হয়। ১৯১১ সালে বুলগেরিয়ায় জন্ম তাঁর। ১৯৯৬ সালে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত নানা বিষয়ে নানা সময়ে বহু কিছু ভবিষ্যদ্বাণী করে গিয়েছেন। তাঁর মধ্যে মিলে গিয়েছে আমেরিকায় সন্ত্রাস হামলা থেকে ইন্দোনেশিয়ায় সুনামি- অনেক কিছুই। ২০২২ সালে সব অন্ধকার কেটে নতুন ভোর আসুক। এই আশায় বুক বেঁধেছি আমরা সকলেই। কিন্তু ২০২২ নিয়ে কী ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন ভাঙ্গাবাবা? আসুন শুনে নিই।
আরও শুনুন: ‘টোকেন’ ছাড়া করা যাবে না অনলাইনে কেনাকাটা, নয়া এই নিয়ম জানেন তো?
না ভাঙ্গা বাবা কিন্তু তেমন আশার গল্প কিছু শোনাতে পারেননি। বরং রয়েছে আশঙ্কার কথাই!
ভাঙ্গা বাবার মতে, ২০২২ সালে রয়েছে সুনামি ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা। এশিয়ার বিভিন্ন দেশ ও অস্ট্রেলিয়ায় হতে পারে বন্যাও।
একুশেই শেষ নয় অতিমারীর। বাবা ভাঙ্গার কথা অনুসারে, সাইবেরিয়ায় জন্ম নিতে পারে নতুন কোনও মারণ ভাইরাস। যা হয়ে উঠতে পারে করোনার থেকেও সাংঘাতিক। সেই ভাইরাস নাকি বরফের মধ্যে ঘুমিয়ে রয়েছে এখনও। কিন্তু যে ভাবে বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মেরুপ্রদেশের বরফ গলতে শুরু করেছে, তাতে অচিরেই সেই ভাইরাসের ঘুম ভাঙবে, এবং তা ছড়িয়ে পড়বে বিশ্বে। ফল ফের আরেকটা অতিমারী।
এমনিতেই আমরা তেমন পরিবেশ সচেতন নই। অপচয় নিয়েও একেবারেই মাথাব্যথা নেই আমাদের। বাবা ভাঙ্গা কিন্তু বলে গিয়েছেন, ২০২২ সালে তীব্র জলসংকটে পড়তে চলেছে পৃথিবীর বহু শহরই। অমিল হতে পারে পানীয় জলও।
অন্য গ্রহের প্রাণীরা এসে হামলা করতে পারে পৃথিবীতে। অ্যাস্ট্রয়েড থেকে ছুটে আসতে পারে এলিয়নদের যুদ্ধজাহাজ। হ্যাঁ, শুনতে কল্পবিজ্ঞানের গল্প মনে হলেও তেমনটাই ভবিষ্যদ্বাণী ভাঙ্গাবাবার।
আরও শুনুন: কতটা ভয়াবহ হতে পারে ওমিক্রন? স্পষ্ট করে জানালেন বিজ্ঞানীরা
প্রবল গরমের মুখোমুখি পড়তে হবে ভারতবাসীকে। তেমনটাই বলেছেন ভাঙ্গা বাবা। ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে উঠে যাবে তাপমাত্রা। ভারতে হতে পারে পঙ্গপাল হামলাও। যা নিমেষে শেষ করে দেবে সমস্ত শস্য ও ফসল।
না, এখানেই শেষ নয়। গত দুবছরে অতিমারির ফলে মানুষ এমনিতেই ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে। মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। বেড়েছে আমাদের স্ক্রিন টাইম। টিভি, মোবাইল, কম্পিউটার, আন্তর্জালেই কাটে আমাদের জীবনের অনেকটা। ২০২২ সালে নাকি আমাদের স্ক্রিন টাইম আরও বাড়তে চলেছে। ভার্চুয়াল বিশ্বেই নাকি আরও বেশি সময় কাটাতে চলেছি আমরা। তেমনটাই জানিয়েছেন বুলগেরিয়ান এই মিস্টিক।
আগের কয়েক বছরের দিকে তাকালেই আমরা বুঝতে পারি, তেমন ভুল কিছু বলে যাননি এই ভাঙ্গাবাবা। এমনিতেই চোখ রাঙাচ্ছে ওমিক্রন। আর কয়েক মাসের মধ্যেই শিখরে পৌঁছবে সংক্রমণের গ্রাফ, তেমনটা তো জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরাই। যে ভাবে পরিবেশ দূষণ ও গ্লোবাল ওয়ার্মিং বাড়ছে তাতে জলসংকট খুব দূরে নয়। গত কয়েক বছরে বেশ কয়েক বার পঙ্গপাল হামলার মুখোমুখি হয়েছে ভারত-সহ বহু দেশই। ভাঙ্গাবাবার ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি করে এ বার এলিয়নদের জাহাজ সত্যিই পৃথিবীতে ঢুকে পড়ে কি না, সেটাই এখন দেখার!