দুর্গাপুজো মানেই রাত জেগে ঠাকুর দেখার ভিড়। এদিকে শেষ মেট্রোর সময় গড়াতে গড়াতে এসে ঠেকেছে সাড়ে নটায়। ঘড়ির কাঁটা আর ঠাকুর দেখার ইচ্ছে, দুয়ের তাহলে মিল হবে কেমন করে? মুশকিল আসান করল কলকাতা মেট্রো। পুজোর কদিন মিলবে বাড়তি সুবিধা।
দুর্গাপুজোর ঢাকে কাঠি। বাঙালির মনে এখন উৎসবের মেজাজ। উৎসবের দিনগুলির আনন্দ যাতে উপভোগ করতে পারেন তাঁরা, সেইজন্য নয়া সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা মেট্রো। সপ্তমী থেকে নবমী, মাঝরাত পর্যন্ত চলবে মেট্রো। বুধবার নয়া বিজ্ঞপ্তি জারি করল কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষ। পুজোর মুখে এই বাড়তি সুবিধার আশ্বাস স্বভাবতই স্বস্তি দিচ্ছে শহরবাসীকে।
আরও শুনুন: দশ প্রহরণ ধারণ করেন দেবী দুর্গা, কী উদ্দেশ্য বহন করে এই দশ অস্ত্র
করোনার সংক্রমণ কমলেও এখনও পুরোপুরি মুক্তি নেই। রাজ্যে জারি রয়েছে কোভিড বিধিনিষেধ। রাতে ১১টা থেকে ৫টা পর্যন্ত বহাল থাকছে কারফিউ। তার সঙ্গে তাল মিলিয়েই যানবাহন চলাচলের ব্যাপারে ক্রমে ক্রমে ছাড় মিলেছে। বর্তমানে দমদম এবং কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশন থেকে শেষ মেট্রো পাওয়া যাচ্ছে রাত সাড়ে নটায়। কিন্তু পুজোর মূল তিন দিনে এই নিয়মে বদল আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। সারা রাত মেট্রো না চালিয়ে মাঝরাত পর্যন্ত পরিষেবা দেওয়া হবে এবার।
আরও শুনুন: করোনার ছোবল থেকে কৃষকমৃত্যু… উৎসব কি এবার সত্যিই সবার?
সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমী— পুজোর এই মূল তিন দিন সকাল ১০টায় শুরু হবে মেট্রো চলাচল। সকাল ১০টায় দমদম এবং দক্ষিণেশ্বর থেকে ছাড়বে কবি সুভাষ-গামী মেট্রো। দমদম এবং কবি সুভাষ থেকে দক্ষিণেশ্বরগামী মেট্রোও ছাড়বে একই সময়ে। আর রাত ১১টায় দমদম থেকে কবি সুভাষের উদ্দেশে রওনা দেবে শেষ মেট্রো। কবি সুভাষ থেকে একই সময় ছাড়বে শেষ মেট্রো। আসবে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত। রাত ১০.৪৮ মিনিটে দক্ষিণেশ্বর থেকে ছাড়বে শেষ মেট্রো। দু’দিকেই বিকেল চারটে থেকে রাত আটটা পর্যন্ত ছয় মিনিট অন্তর চলবে মেট্রো। দশমীর দিন অবশ্য পুরনো নিয়মেই ফিরে যাচ্ছে মেট্রোর সময়সূচি। সেদিন দমদম এবং কবি সুভাষ থেকে শেষ মেট্রো ছাড়বে রাত সাড়ে ন’টায়। দক্ষিণেশ্বর থেকে কবি সুভাষের উদ্দেশে শেষ মেট্রো ছাড়বে ৯টা ১৮ মিনিটে।
যাত্রীসংখ্যা বাড়ার কথা মাথায় রাখলেও স্মার্ট কার্ডের উপরেই ভরসা রাখছে মেট্রো। কোনও পরিস্থিতিতেই টোকেন এবং কাগজের টিকিট ব্যবহার করা হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেট্রো। এর জন্য অতিরিক্ত কয়েক লক্ষ স্মার্ট কার্ডের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে। নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও বরাবরের মতোই বিশেষ প্রস্তুতি নিচ্ছে মেট্রো। জনবহুল স্টেশনগুলিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে নিরাপত্তার কড়াকড়িতে। নজরদারির জন্য সচল থাকছে সব স্টেশনের স্ক্যানার। প্রয়োজনে অতিরিক্ত রক্ষী মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে মেট্রোর তরফে।
পুজোর কদিন সন্ধ্যার পর থেকেই ঠাকুর দেখার জন্য মানুষের ঢল নামে কলকাতার রাস্তায়। কেবল শহরবাসী নন, তাতে শামিল হন মফসসলের বাসিন্দারাও। দক্ষিণেশ্বর তথা দমদমমুখী শেষ মেট্রোর সময় বাড়ানোর ফলে সুবিধা পাবেন লোকাল ট্রেনের যাত্রীরাও। যদিও লোকাল ট্রেন চালানো নিয়ে কোনও ঘোষণা করা হয়নি এখনও পর্যন্ত।