বাড়ছে বিবাহবিচ্ছেদের হার। সম্পর্কের ভাঙনে বাঁধ দিতে তাই এবার মাঠে নামল কেরলের এক গ্রাম পঞ্চায়েত। সম্পর্কের টানাপোড়েনের মোকাবিলা করার জন্য নেওয়া হল অভিনব উদ্যোগ। কী ঘটেছে ঠিক? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
বিয়ের অনুষ্ঠান ঘিরে যত আশা আকাঙ্ক্ষা আনন্দের জোয়ার, ততখানিই আশঙ্কা আর অন্ধকার ঘিরে আছে বিচ্ছেদ শব্দটিকে। কিন্তু আজকের দিনে তাকে আর এড়াবার উপায় নেই। বড়সড় সমস্যার কথা যদি বাদও দিই, জীবনের নানাবিধ চাপে, ছোটবড় ভুল বোঝাবুঝির জেরে, সম্পর্কের মধ্যে দূরত্ব বাড়ে, আর তারপরেই অনিবার্য হয়ে ওঠে বিচ্ছেদ। গোটা দেশ জুড়েই ক্রমশ বেড়ে চলেছে বিবাহবিচ্ছেদের হার। কিন্তু এই সমস্যাকে লাগাম পরাতেই এবার অভিনব উদ্যোগ নিল কেরলের এক গ্রাম পঞ্চায়েত। না, জোর করে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার কথা বলা হয়নি সেখানে। কিন্তু নিজেদের সমস্যাগুলিকে চিনে নিয়ে যদি তার মোকাবিলা করা যায়, আর তার দরুন যদি প্রাণ ফেরে সম্পর্কেও, সেই বিষয়টিকেই গুরুত্ব দিতে চাইছে কেরলের পেরুভায়াল গ্রাম পঞ্চায়েত। স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, এই ধরনের উদ্যোগ কেরলে এই প্রথম।
আরও শুনুন: প্রেমের জোয়ারে ভেসে গেল সাধনা! প্রথমে মন দেওয়া-নেওয়া, পরে বিয়ে দুই সন্ন্যাসীর
ঠিক কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই পঞ্চায়েত?
সম্পর্কের ভাঙন রুখতে কেরলের কোঝিকোড়ের পেরুভায়াল গ্রামে শুরু হয়েছে ‘ম্যারেজ কাউন্সেলিং’-এর ব্যবস্থা। স্থানীয় ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পঞ্চায়েত সদস্যরা। পঞ্চায়েতের এই উদ্যোগটিকে সমর্থন জানিয়েছেন তাঁরাও। প্রকল্পটি পরিচালনা করতে পেশাদার মনোবিদ নিয়োগ করা হচ্ছে বলে দাবি প্রশাসনের।
আরও শুনুন: বাবা অকালে প্রয়াত, ২৫ বছর পর মায়ের ফের বিয়ে দিলেন তরুণী
পেরুভায়াল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অনিস পলত-এর মতে, বর্তমানে সদ্যবিবাহিত তরুণ-তরুণীদের মধ্যে সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা দিচ্ছে সহজেই। মাঝেমধ্যেই দেখা যাচ্ছে খুব তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ঝগড়াঝাঁটি হচ্ছে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে। অত্যধিক চাপের কারণেই হোক বা যে কারণেই হোক, সমস্যাগুলিকে ঠান্ডা মাথায় সমাধান করার মতো ধৈর্য কমে যাচ্ছে। ফলে ছোটখাটো মতবিরোধ, কথা কাটাকাটির জেরেই ভেঙে যাচ্ছে এক-একটি দাম্পত্য সম্পর্ক। কিন্তু সেই চূড়ান্ত পরিণতিতে পৌঁছনোর আগেই যাতে কোনও বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলতে পারেন দম্পতিরা, সেই উদ্যোগ নিয়েছে ওই পঞ্চায়েত। তাদের আশা, নিজেরা আলাপ আলোচনা করে যেখানে সমাধানের পথে আসা যাচ্ছে না, কোনও নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ হয়তো সে বিষয়ে সাহায্য করতে পারবেন। তবে কেবল অল্পবয়সি ব্যক্তিরাই নন, সব বয়সি দম্পতিকেই পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগে অংশ নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পে সাড়া মিলতে শুরু করেছে বলেও জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।