পুরোদমে চলছে পাত্র কিংবা পাত্রীর সন্ধান। নিজেদের সম্ভাব্য জীবনসঙ্গীকে খুঁজে পেতে উৎসাহী অনেক মানুষ। না, কোনও সংবাদপত্রের পাত্র-পাত্রী চাই কলাম, কিংবা কোনও অনলাইন ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটের কথা হচ্ছে না। এই কাজ চালাচ্ছে আসলে একটি পঞ্চায়েত।
অভিনব ভূমিকায় অবতীর্ণ হল কেরলের একটি গ্রামীণ পঞ্চায়েত। প্রশাসনিক কাজকর্মের পাশাপাশি ঘটকালির কাজেও নেমে পড়ল এই পঞ্চায়েতটি। ভাবছেন তো, কেন এই কাজ? সে কথাই বলছি।
আরও শুনুন: কেরালার এই গ্রামে যমজের ছড়াছড়ি, কেন বলুন তো?
স্থানীয় অভাব অভিযোগের মোকাবিলা করাই একটি পঞ্চায়েতের কাজ। কেরলের এই পঞ্চায়েতটি যে ম্যাচ-মেকিংয়ের কাজ শুরু করেছে, তার পিছনেও অবশ্য দায়ী একরকমের অভাব। কী অভাব?
আরও শুনুন: মডেলের চুলে ভুল ছাঁট, তাতেই ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে দিল্লির সালোঁকে
অভাব মানুষের। বলা ভাল, কাছের মানুষের। ওই অঞ্চলে দিনে দিনে বাড়ছিল একা মানুষের সংখ্যা। অবিবাহিত যুবক যুবতি, এবং স্বামী বা স্ত্রীকে হারানো মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি হয়ে উঠছিল। এই পরিস্থিতিতে এগিয়ে আসে স্থানীয় পঞ্চায়েত। সিপিএম-শাসিত থিড়ানাড়ু পঞ্চায়েত রাজ্য জুড়ে পাত্র-পাত্রী সন্ধান করার জন্য পরিষেবা দেওয়ার কথা ঘোষণা করে। উল্লেখ্য, পেশাদার ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটের মতো এই পরিষেবার জন্য কোনও আর্থিক মূল্য ধার্য করা হয়নি। তবে যাঁরা এই পরিষেবার সুবিধা নেবেন, তাঁদের গোপনীয়তা রক্ষার সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পঞ্চায়েত।
অনেক মানুষই থাকেন, যাঁরা বিয়ে না হওয়া নিয়ে চিন্তিত। সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার সমস্যাও রয়েছে অনেকের। ওই এলাকায় এমন যে সব মানুষ রয়েছেন, তাঁরা এবার পঞ্চায়েতের চালু করা ‘ম্যারেজ ডায়েরি’-র সুবিধা নিতে পারবেন। দক্ষিণের রাজ্যটির যে কোনও পঞ্চায়েতের মানুষই এই ডায়েরিতে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। এর জন্য অনলাইনে একটি ফর্ম পূরণ করতে হবে তাঁদের। যেখানে জানাতে হবে নিজেদের ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক তথ্য। অনলাইনে এই ফর্মটি জমা দেওয়ার পর পঞ্চায়েত সেইসব তথ্যের সত্যাসত্য খতিয়ে দেখবে। তাতে সন্তুষ্ট হলে শুরু হবে সম্ভাব্য পাত্র বা পাত্রীর খোঁজ।
চার দিন আগে শুরু হওয়া এই প্রকল্পে এখনই নাম নথিভুক্ত করিয়ে ফেলেছেন ২৫০০ মানুষ। তাদের মধ্যে রয়েছেন থিরুবনন্তপুরম, কোল্লাম, ইদুক্কি, মালাপ্পুরম, কোঝিকোড়-এর মতো বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ, বলে জানিয়েছেন শেরিন পেরুমাক্কুনেল। সমস্ত প্রকল্পটি পরিচালনার দায়িত্বে আছেন তিনিই। ইতিমধ্যেই দুজন মানুষের বিয়ের কথাবার্তাও প্রায় পাকা করে ফেলেছে এই ‘ম্যারেজ ডায়েরি’ পোর্টাল।