প্রশাসনিক আধিকারিকদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। তাতেও ধর্মের ভেদ। হিন্দু এবং মুসলিমদের জন্য আলাদা গ্রুপ তৈরি করে কাঠগড়ায় আইএএস অফিসার। কেন এমনটা করলেন ওই অফিসার? ঠিক কী দাবি তাঁর? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ভারতের সংবিধান ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে। আইনের রক্ষকরা তা মেনে চলেন। তবে সম্প্রতি এক ঘটনা এই বিষয়টিকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। অনেকেই মনে করেন, রাজনীতির সঙ্গে ধর্মের যোগ থাকলেও, প্রশাসনিক কাজে ধর্মের ভেদ প্রশ্রয় পায় না। তবে এবার এই নিয়ে বিতর্ক হতেই পারে।
ঠিক কী ঘটেছে?
তৈরি হয়েছে দুটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। এবং তা তৈরি করেছেন এক আইএএস অফিসার। বাকি আমলাদেরও সেখানে জুড়েছেন তিনি। এমনিতে এমন পদক্ষেপে সামগ্রিক আপত্তি না থাকারই কথা। তবে এখানে প্রায় সমস্ত আধিকারিকই তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন ওই গ্রুপ নিয়ে। কারণ দুটি গ্রুপের নাম। যেখানে স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলছে, একটি গ্রুপ হিন্দু অন্যটি মুসলমানদের জন্য তৈরি। সেখানে সরকারি আমলাদের যুক্ত করা হয়েছে সেই ভাবেই। প্রথমে বিষয়টি খেয়াল করেননি অনেকে। পরে ভালোভাবে লক্ষ করে আইএএস অফিসাররা বুঝতে পারেন সবটা। যিনি হিন্দু তাঁর গ্রুপে স্রেফ হিন্দুরাই। একইভাবে মুসলিম গ্রুপে স্রেফ মুসলমান। কিন্তু কে করলেন এমন কাজ? সকলের কাছে তো এতজন আমলার ব্যক্তিগত নম্বর থাকার কথা নয়। আবার সরকারের তরফেও এই ধরনের কাজ করা সম্ভব নয়। তাহলে? খোঁজ করে দেখা যায়, গ্রুপগুলি তৈরি করেছেন কেরলের আইএএস অফিসার গোপালকৃষ্ণ। তিনিই দেশে বিভিন্ন প্রান্তের প্রশাসনিক কর্তাদের ওই গ্রুপে জুড়েছেন। অথচ, গোপালকৃষ্ণের দাবি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না তিনি। বরং তাঁকে ফোন করে এইসব গ্রুপের কথা জানিয়েছেন অন্য এক আইএএস অফিসার। এমনটাই দাবি করেন গোপালকৃষ্ণ।
বিষয়টি নিয়ে শোরগোল শুরু হয়। এইভাবে প্রশাসনিক আধিকারিকদের মধ্যে ধর্মের ভেদ একেবারেই কাম্য নয়। সরব হন সরকারি আমলারা। তবে এই কাজ যে গোপালকৃষ্ণ করেননি, তা মোটের উপর বিশ্বাস করে নিয়েছেন সকলেই। উঠছে হোটাসঅ্যাপ হ্যাক করার অভিযোগ। কোনওভাবে গোপালকৃষ্ণের হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে কেউ এমন কাজ করেছে। গ্রুপগুলি ডিলিট করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। তবে এমন কাজ কে করলেন, সেই নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। একইসঙ্গে ঠিক কী উদ্দেশ্য নিয়ে এই কাজ তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সত্যিই যদি হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক করার মতো ঘটনা হয়ে থাকে, তবে তা চিন্তার বিষয়। কারণ, একজন প্রশাসনিক আধিকারিকের নাম্বার নিয়ে জালিয়াতি করা যে এত সহজ নয় তা সকলেরই জানা কথা। অথচ এমনটাই করে দেখানোর সাহস দেখিয়েছে কেউ, তাই বিষয়টি নিয়ে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে অনেকের কপালেই।