কাশ্মীর ইস্যুতে এবার পাকিস্তানের মুখের সামনেই আয়না ধরলেন উপত্যকার সমাজকর্মী তসলিমা আখতার। বিশ্বমঞ্চে রীতিমতো তথ্য পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি দাবি করলেন, কেন্দ্রশাসিত কাশ্মীরের তুলনায় পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের পরিস্থিতি কতটা শোচনীয়। ঠিক কী বলেছেন তসলিমা? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও কাশ্মীর ইস্যুতে চরমে ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ। কাশ্মীর দখলের জন্য পাকিস্তানের চোরাগোপ্তা আক্রমণ, জঙ্গি হামলা থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়া, এ সব কিছু লেগেই রয়েছে। এই প্রেক্ষিতেই এবার বিশ্বমঞ্চে পাকিস্তানকে তুলোধোনা করলেন উপত্যকার সমাজকর্মী তসলিমা আখতার। সত্যি বলতে, কাশ্মীর নিয়ে লাগাতার ভারতের দিকে যেভাবে আঙুল তোলে পাক সরকার, সেই আয়নাটাই এবার পাকিস্তানের দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছেন তসলিমা। রীতিমতো তথ্য পরিসংখ্যান তুলে ধরে দেখিয়েছেন, পাক অধিকৃত কাশ্মীরের আসল অবস্থাটা কেমন। আর তার সঙ্গে ভারতের কেন্দ্রশাসিত জম্মু কাশ্মীরের তুলনা টেনে তাঁর দাবি, ভালো আছে কাশ্মীর।
আরও শুনুন: ‘ভিখারি’, ‘পকেটমার’-দের পাঠাবেন না, হজ যাত্রীদের নিয়ে পাকিস্তানকে কড়া বার্তা সৌদির
জেনেভায় বসেছে রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কমিটির ৫৪তম অধিবেশন। আর সেই অধিবেশনেই কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানকে একহাত নিয়েছেন উপত্যকার ওই সমাজকর্মী। তিনি বলেন, উপত্যকার বাসিন্দাদের জীবনযাপন সুগম করতে চেষ্টা করে চলেছে ভারত সরকার। তাই জম্মু ও কাশ্মীরে নানারকম উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হচ্ছে, যাতে সেখানকার বাসিন্দাদের কাজের সুযোগ বাড়ে। পাশাপাশি উপত্যকায় শান্তি ও সমৃদ্ধি বজায় থাকে। শুধু তাই নয়, শিক্ষা এবং সাক্ষরতার হারেও অনেকটাই এগিয়ে এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। জাতীয় প্রকল্প থেকে স্বাস্থ্য খাতেও সুবিধা পান বাসিন্দারা। অন্যদিকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে প্রাথমিক চাহিদাটুকু মেটাতেই হিমশিম খান মানুষ। তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রশাসিত কাশ্মীরের পার ক্যাপিটা ইনকাম প্রায় ২৫০০ ডলার, পাক অধিকৃত কাশ্মীরে এই আয় মোটামুটি ১০০০ ডলারের মতো, গিলগিট বালতিস্তানের মতো জায়গায় তা নেমে গিয়েছে মাত্র ২৫০ ডলারের কাছে। বিশেষ করে উপত্যকায় পর্যটক টানার জন্য সবসময়েই তৎপর কেন্দ্র, যা সেখানকার আয়ের একটি বড় অংশ। পাকিস্তানের ক্ষেত্রে সেই সুযোগও যথেষ্ট কম। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তান সরকারের দয়াদাক্ষিণ্যেই বেঁচে থাকতে হচ্ছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বাসিন্দাদের, যা মানবতার পক্ষেই অপমানজনক বলে মনে করছেন তসলিমা। তাঁর দাবি, পাক সরকার এখনও তাঁদের জন্য সামান্য উন্নয়ন কাঠামোও গড়ে তুলতে পারেনি। মাথার উপরে ছাদ থেকে শৌচাগার বা পরিষ্কার জল, সবই এখনও অপ্রতুল। সেখানে না আছে শিক্ষার সুযোগ বা কাজের সুযোগ, না আছে প্রাকৃতিক সম্পদের যথাযথ ব্যবহার। উলটে ভারতের বিরুদ্ধে জঙ্গি হামলা চালাতে এখানকার বাসিন্দাদেরই ব্যবহার করে চলেছে পাকিস্তান, এই দাবিতেই পড়শি দেশটিকে কড়া তোপ দেগেছেন তসলিমা। আসলে রাজনৈতিক স্বার্থে কাশ্মীর ও তার মানুষদের ব্যবহার করা ছাড়া তাদের জন্য কোনও পদক্ষেপই করেনি পাকিস্তান, এমনটাই দাবি তাঁর। আর সরাসরি বিশ্বমঞ্চ থেকেই তাঁর খোলা অভিযোগের জেরে এবার সরগরম আন্তর্জাতিক মহলও।