কঙ্গনার চড়ে কৃষকদের রাগের ছাপ দেখছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান। এদিকে তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রীর কুরসিতে বসেই কৃষকদের জন্য বিশেষ পদক্ষেপ করেছেন মোদি। নতুন দফার শুরু থেকেই কি কৃষকবন্ধু হওয়ার চেষ্টা মোদির? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
নবনির্বাচিত সেলিব্রিটি সাংসদকে চড় মেরে দেশ জুড়ে চর্চায় উঠে এসেছেন মহিলা জওয়ান কুলবিন্দর। একইসঙ্গে চড়ের কারণ নিয়ে কাটাছেঁড়া চলছে। কুলবিন্দর নিজে অবশ্য কৃষকদের অপমানের প্রসঙ্গই দেখিয়েছেন চড়ের কারণ হিসেবে। এবার সেই সুরেই সুর মেলালেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান।
লোকসভা ভোট মিটতেই দেশজুড়ে চড় নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। সেলিব্রিটি সাংসদকে চড় মেরে রাতারাতি জনপ্রিয় হয়েছে মহিলা জওয়ান কুলবিন্দর। একদিকে তাঁর বিরুদ্ধে যেমন সমালোচনার ঝড় বইছে। অন্যদিকে ঘরের মেয়ের এহেন কাজের জন্য গর্ববোধ করছেন আন্দোলনরত কৃষকরা। সরাসরি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই চড় কাণ্ডের পর মিষ্টি বিতরণ করেছেন। যদিও কুলবিন্দর নিজে এই কাজের জন্য অনুতাপ প্রকাশ করেছেন উচ্চমহলে। ঘটনার তদন্তে সিট ঘটন করেছে মুম্বই পুলিশও। মোটের উপর এই নিয়ে চর্চা চলছেই। এই আবহে, বিশেষ মন্তব্য করতে শোনা গেল পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান-কে। চড়ের ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বললেও, কঙ্গনার মন্তব্য নিয়ে সরব হয়েছে ভগবন্ত। তাঁর কথায়, অভিনেত্রী যেভাবে গোটা পাঞ্জাবের গায়ে সন্ত্রাসবাদের তকমা লাগিয়েছেন, তা কোনওভাবেই সমর্থন করা যায় না। একইসঙ্গে কৃষক আন্দোলন নিয়ে কঙ্গনার মন্তব্যেরও তীব্র বিরোধিতা করেছেন ভগবন্ত। সুতরাং কুলবিন্দরের চড় যে সামগ্রিকভাবে কৃষকদের রাগের বহিঃপ্রকাশ তা মনে করছেন খোদ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীও। শুধু তাই নয়, নিজের বক্তব্যে দেশের প্রতি পাঞ্জাবের কৃষকদের অবদানও মনে করিয়ে দিয়েছেন ভগবন্ত।
এই আবহে রাজধানীতে তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন মোদি। কঙ্গনা তাঁর দলেরই সাংসদ। এখনও অবধি চড়ের ঘটনার সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে মন্তব্য করতে শোনা যায়নি। তবে কেন্দ্র সরকারের প্রতি দেশের কৃষকদের মতি ফেরাতে প্রথম দিনেই পদক্ষেপ করেছেন মোদি। অবশ্য আলাদা করে কোনও যুগান্তকারী পদক্ষেপ করা হয়নি। তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ শুরুর প্রথম দিনে ‘প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধি’র ১৭ তম কিস্তি প্রদানের ফাইলে স্বাক্ষর করেছেন মোদি। ১৯’র লোকসভার আগে চালু হওয়া এই প্রকল্প ভোটে ভালো মাইলেজ দিয়েছিল বিজেপিকে। এবারের নির্বাচনে অবশ্য আলাদা করে কৃষকদের এই সুবিধা বিজেপির লাভের কারণ হয়নি। বরং বিভিন্ন দেশজুড়ে ইস্যুতে কৃষক আন্দোলন বিজেপির প্রতি কৃষকদের বিরূপতাই তুলে ধরেছে। এরই মাঝে চড় কাণ্ডে নতুন করে কৃষকদের ক্ষোভের কথা সামনে আসতে শুরু করেছে। তাই হয়তো কাজ শুরুর প্রথমদিনেই কৃষকদের জন্য এই পদক্ষেপ করতে দেখা গেল মোদিকে। তবে এই পদক্ষেপে নতুন কোনও আশার আলো খুঁজে পাননি বিরোধীরা। তাই এই নিয়ে পালটা কটাক্ষই এসেছে। তবে আগামীদিনে দেশের কৃষকদের ক্ষোভ মেটাতে তৎপর হতেই হবে বিজেপিকে, এমনটা মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহলের অনেকেই।