কোয়েম্বাটুরে মন্দিরের সামনে বিস্ফোরণের ঘটনার নিন্দায় সোচ্চার জামাত। সম্প্রীতির বার্তা দিতে মন্দিরে উপস্থিত মুসলিম নেতৃত্ব। বিস্ফোরণের প্রেক্ষিতে কী বলছেন তাঁরা? শুনে নেওয়া যাক।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে বিঘ্নিত করা যাবে না কোনোভাবেই। কোয়েম্বাটুর বিস্ফোরণের প্রেক্ষিতে সাফ বার্তা দিল কোয়েম্বাটুর জামাত। আর এই বার্তা দিতেই উলেমা সহ জামাতের ১৩ সদস্যের দল হাজির হলেন কোট্টাই ইশ্বরন মন্দিরে। পুরোহিত ও মন্দিরের অন্যান্য সেবায়েতদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বললেন তাঁরা। দিলেন মিলেমিশে থাকার আশ্বাসও। এহেন আচরণের সামনে দাঁড়িয়ে সমন্বয়ের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন মন্দির কর্তৃপক্ষও।
আরও শুনুন: ‘ভারতমাতা বিধবা নয়’, টিপ না পরায় মহিলা সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলতে নারাজ সমাজকর্মী
সম্প্রতি তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটুর অঞ্চলে গাড়ি বিস্ফোরণের ঘটনাকে ঘিরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। তামিলনাড়ু সরকারের সুপারিশেই ঘটনার তদন্ত করছে এনআইএ ওরফে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গাড়িবোমা বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে জামিশা মুবিন নামে এক ব্যক্তির, যাকে এই ঘটনার অভিযুক্তদের মধ্যে অন্যতম বলে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। এ ছাড়াও আরও ছয় সন্দেহভাজনকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কাণ্ডে জেরা করা হচ্ছে জেলবন্দি লস্কর-ই-তৈবা নেতা সারফার নওয়াজকে। তবে বিস্ফোরণের লক্ষ্য নিয়ে এখনও তাঁরা নিশ্চিত নন বলেই জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। কিন্তু যেহেতু বিস্ফোরণ হয়েছে মন্দিরের কাছাকাছি, ফলত এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক ইস্যু টেনে এনেছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। বলা হচ্ছে, ওই ঘটনা ‘জঙ্গি নাশকতা’। তামিলনাড়ু বিজেপির অভিযোগ, নিহত জামেশা মুবিন নিজের হোয়াটসঅ্যাপ স্ট্যাটাসে যা লিখেছেন তা জঙ্গি সংগঠন আইএসআইএসকে অনুকরণ করে। তাই এই ঘটনাকে ‘আত্মঘাতী হামলা’-র তকমা দিতে হবে, এই দাবিতে সোচ্চার তারা। কিন্তু এই পরিস্থিতিতেই পালটা সমন্বয়ের বার্তা ছড়ালেন এলাকার মুসলিম ও হিন্দু উভয় পক্ষই।তামিনাড়ুর
আরও শুনুন: ‘এ ফর অর্জুন’, ‘বি ফর বলরাম’… যোগীরাজ্যে হিন্দু পুরাণেই শুরু ইংরেজি বর্ণপরিচয়
কোয়েম্বাটুর ডিস্ট্রিক্ট ফেডারেশন অফ অল জামাত অ্যান্ড উলেমাজ-এর পক্ষ থেকে ওই মন্দিরে গিয়েছিলেন একদল সদস্য। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ইদায়াতুল ইসলাম শফিয়া জামাত, তারেকাতুল ইসলাম শফিয়া জামাত এবং কেরালা মুসলিম জামাতের সদস্যরা। মন্দিরের কর্মকর্তা ভি প্রভাকরণ এবং অন্যান্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন তাঁরা। ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি হাজি এম এ ইনায়াতুল্লা জানিয়েছেন, “এই অঞ্চলে বিগত সাত পুরুষ ধরে মুসলিমরা বসবাস করে আসছে। ভিন্ন ধর্ম বা ভিন্ন বিশ্বাসের মানুষেরা এখানে শান্তিপূর্ণভাবেই একসঙ্গে বাস করে।” কোনও পরিস্থিতিতেই সেই সম্প্রীতির পরিবেশ ক্ষুণ্ণ হবে না বলেও কড়া বার্তা দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি এহেন বিস্ফোরণের ঘটনারও নিন্দায় সরব হয়েছে মুসলিম পক্ষ। তাঁদের এই অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছেন মন্দির কর্তৃপক্ষও।