কুম্ভমেলায় পদপিষ্ট হয়ে ৩০ জনের মৃত্যু! ঘটনায় গোটা দেশে শোকের ছায়া। ভিড় নিয়ন্ত্রণে মেলায় একাধিক কড়া নিয়ম চালু করেছে প্রশাসন। এই আবহে সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মুসলিম নেতা। ঠিক কী দাবি তাঁর? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
পুণ্যের টানে কুম্ভে গিয়েছিলেন। বাড়িতে ফিরল নিথর দেহ! একই পরিবার একাধিক সদস্যের প্রাণ কাড়ল কুম্ভের দুর্ঘটনায়। আহতের সংখ্যাও অনেকে। তবে এই দলে কোনও বিশেষ ব্যক্তি নেই! অর্থাৎ মৃত আর আহতের তালিকায় নেই কোনও ভিআইপি। এই দাবিতেই সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মুসলিম সংগঠনের নেতা।
আরও শুনুন:
শুধু পুরুষ নয়, কুম্ভে হাজির মহিলা নাগা সাধুরাও, কেমন তাঁদের জীবন?
কুম্ভের আবহে হিন্দু-মুসলিম বিতর্ক মাথা চাড়া দিয়েছিল। আশঙ্কা করা হয়েছিল, মেলায় জোর করে ধর্মান্তরণ করানো হবে মুসলিমদের। সেই নিয়ে সরব হয়েছিলেন মুসলিম সংগঠনের অনেকেই। পাশাপাশি এই দাবিও শোনা গিয়েছিল, কুম্ভে কোনও মুসলিম ব্যবসা করতে পারবেন না। যদিও এমন কোনও সরকারি ফতোয়া জারি হয়নি। খোদ প্রধানমন্ত্রীও কুম্ভকে সামনে রেখে সম্প্রীতির বার্তাই দিয়েছিলেন। নানা বিতর্ক পেরিয়ে সুষ্ঠ ভাবেই শুরু হয় কুম্ভমেলা। ভিড় জমাতে শুরু করেন কোটি কোটি ভক্ত। নেটদুনিয়াও ভরে ওঠে কুম্ভমেলার রিলসে। ভাইরাল কনটেন্টের কমতি ছিল না শুরু থেকেই। এর মাঝে স্নান করে গিয়েছেন অমিত শাহ, যোগি আদিত্যনাথের মতো ব্যক্তিত্বরা। বলাই বাহুল্য এঁদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা ছিল। আর এই সূত্র ধরেই মুসলিম সংগঠন জামাত-ই-ইসলামির নেতা সেলিম ইঞ্জিনিয়রের প্রশ্ন, ‘মেলার দুর্ঘটনায় স্রেফ সাধারণ মানুষ কেন মরল?’ দুর্ঘটনা মানেই দুঃখের বিষয়। বিশেষ করে সেখানে যদি মৃত্যুর পরিস্থিতি তৈরি হয়। কুম্ভমেলার ৩০ জনের পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুতেও দুঃখ প্রকাশ করেছেন সেলিম। তবে এই ঘটনার দায় নিতে সরকারকে, এই দাবিও করেছেন। একযোগে রাজ্য ও কেন্দ্রের সরকারকে নিশানায় রেখেছেন তিনি। আসলে, কুম্ভের ভিড় নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রীতিমতো বড়াই করতে শোনা গিয়েছিল যোগী আদিত্যনাথকে। এখানকার ক্রাউড ম্যানেজমেন্ট দেখে সকলের শিক্ষা নেওয়া উচিত, এমনটাও দাবি করেছিলেন অনেকে। সেলিমের মন্তব্যে সেই প্রসঙ্গও ফিরেছে।
আরও শুনুন:
সর্বধর্ম সমন্বয়ের কুম্ভ! ১৩ আখড়ায় নানক থেকে শিব রয়েছেন নানা ধর্মমতের অনুগামীরা
তাঁর ইঙ্গিত, ভিআইপি-দের মতো গুরুত্ব দিয়ে যদি সাধারণ মানুষকেও দেখা হত, তাহলে এমনকিছু হয়তো হতই না। প্রত্যেকেই মেলায় আসছেন ভক্তি নিয়ে, সকলের সমান অধিকার থাকা উচিত, এমনটাই দাবি মুসলিম নেতার। যদিও, এই ঘটনার পর প্রশাসনের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কুম্ভে কোনও ভিআইপি ব্যবস্থা থাকবে না। এমনকি গাড়ি নিয়ে মেলায় প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আগামীতে এই ধরনের ঘটনা কোনওভাবেই যেন না ঘটতে পারে, সেদিকে কড়া নজর রাখা হয়েছে। তবে যা হারিয়েছে, তা আর ফিরে আসবে না। কুম্ভমেলায় চিরতরে হারিয়ে যাওয়া নিজেদের কাছের মানুষকেও ফিরে পাবেন না পরিবারের লোকজন। তাতে ক্ষতিপূরণ হয়তো মিলবে, কিন্তু ব্যক্তিগত ক্ষতি পূরণ হবে না কোনওভাবেই! এই আবহে মুসলিম নেতার বক্তব্য বিতর্ক উসকে দিল নতুন করে।