মাইলের পর মাইল জঙ্গল পুড়ে যাচ্ছে নিমেষে। সবুজ ম্যানগ্রোভ পুড়িয়ে তৈরি হচ্ছে কয়লা, জ্বালানি। এ দিকে, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কপালে ভাঁজ পরিবেশবিদদের। বেড়েই চলেছে উষ্ণায়ন। এমনকী গলতে শুরু করেছে উত্তর মেরুর বরফও। এ ভাবে চলতে থাকলে পৃথিবীর আয়ু যে হাতে গোনা, তা অজানা নয় কারওরই। কিন্তু এই বন ধ্বংস করেই যাঁদের দিন গুজরান হয, তাঁদের অসহায়তাও কিন্তু কম নয়। আসুন শুনে নিই তাঁদের কথা।
পৃথিবী জুড়ে বেড়েই চলেছে উষ্ণায়ন। ইতিমধ্যে গলতে শুরু করেছে উত্তর মেরুর বরফও। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মেরু অঞ্চল বাকি পৃথিবীর চেয়ে আরও ৩ গুণ বেশি হারে গরম হচ্ছে। ক্রমশ পাতলা হচ্ছে সেখানকার বরফস্তর। অবস্থা যা দাঁড়িয়েছে, তাতে বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, এ ভাবে চলতে থাকলে পৃথিবীর হাতে আর খুব বেশিদিন সময় নেই।
এ সব বোধহয় আমরা সকলেই কমবেশি জানি। তবে মাথা ঘামাই না। যেমন ঘামাচ্ছে না পানামা সরকার। সেখানে নির্বিবাদে চলছে ম্যানগ্রোভ ধ্বংস। তার পর সে সব পুড়িয়ে হাতে উঠে আসছে কয়লা, জ্বালানি। যা পৌঁছে যাচ্ছে একের পর এক রেস্তঁরা, পিৎজা তৈরির কারখানায়। কিন্তু ওই কাজ করেই তো পেট ভরে পানামার এল এস্পেভ এলাকার অন্তত দু-শো পরিবারের। অন্য কোনও বিকল্প নেই উপার্জনের। তাই জঙ্গল পোড়ানোই ওঁদের একমাত্র জীবিকা।
আরও শুনুন: খালি পায়েই পদ্ম সম্মানের মঞ্চে, দেশবাসীকে চমকে দেওয়া এই পরিবেশবিদকে চেনেন?
গত তিরিশ বছর ধরে এ ভাবেই জীবন নির্বাহ করে আসছেন এল এস্পেভ-র বাসিন্দা এলাইজার রডরিজ। সরু খাঁড়ি-পথ বেয়ে নৌকা নিয়ে প্রতি সকালে বেরিয়ে পড়েন রডরিজের মতোই আরও অনেকে। খুঁজে ফেরেন মোটা গুঁড়ি গাছপালা। তার পরেই চলে সেই গাছ কাটার পর্ব। বাপ-দাদাদের আমল থেকে চলে আসছে এই রেওয়াজ। রডরিজের বক্তব্য, এই পেশায় হাড়ভাঙা খেটেও সঞ্চয় বলতে কিছুই না, শুধু বেঁচে থাকার জন্য যেটুকু না-হলেই নয়। “কাঠ না কাটলে খাব কী?”- একই প্রশ্ন সেখানকার বহু বাসিন্দাদেরই। অভিযোগ, এঁদের জন্য কখনও কোনও বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবেনি সেখানকার সরকার।
আরও শুনুন: মৃত্যু হবে আফ্রিকার বড় হিমবাহগুলির, পৃথিবীর বুকে কি নামবে বিপর্যয়?
রাষ্ট্রপুঞ্জের পরিবেশ বিষয়ক প্রকল্প অনুযায়ী, উপকূল এলাকার ভাঙন রুখতে অত্যন্ত জরুরি এই ম্যানগ্রোভ অরণ্য। শুধু তাই নয়, জলের মান ধরে রাখতেও সাহায্য করে এই উপকূল অঞ্চল। সামুদ্রিক প্রাণীদের বাঁচিয়ে রাখার জন্যও অত্যন্ত জরুরি এই ম্যানগ্রোভ। রাষ্ট্রপুঞ্জেরই একটি গবেষণায় জানা গিয়েছে, বছরে অন্তত ২ কোটি ২৮ লক্ষ টন কার্বনকে বায়ু থেকে আলাদা করে ম্যানগ্রোভ বনভূমি। পানামা সরকারের পরিবেশ মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, দেশের এক লক্ষ সাতাত্তর হাজার হেক্টর এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে ম্যানগ্রোভ বনভূমি। যার মধ্যে সংরক্ষিত মাত্র ৩৫ শতাংশ।
বাকি অংশ শুনে নিন