একাধিক মানবাধিকার মামালার পরিচিত মুখ। আদালতে তাঁর সওয়াল সামলাতে ভয় পান অনেকেই। প্রধান বিচারপতির বাড়িতে মোদির উপস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন। এবার আর জি কর মামলায় জুনিয়র ডাক্তারদের হয়ে সওয়াল করবেন সেই ইন্দিরা জয় সিং। কোন প্রসঙ্গে মোদি-চন্দ্রচূড় সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন তিনি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
আইনের চোখে সবাই সমান। সংবিধান বলে, অপরাধ করলে কেউ পার পাবে না। সেক্ষেত্রে আইনের রক্ষকদের নিরপেক্ষা হওয়াই কাম্য। কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা সেই নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বারবার। এমনই এক ঘটনায় মুখ খুলেছিলেন বর্ষীয়ান আইনজীবী ইন্দিরা জয় সিং। আর জি কর মামালায় জুনিয়র ডাক্তাররা তাঁকেই আইনজীবী হিসেবে বেছেছেন। এই আবহে, বিচারব্যবস্থা নিয়ে তোলা ইন্দিরার প্রশ্ন নতুন করে চর্চায় ফিরেছে।
ঘটনার কেন্দ্রে দেশের প্রধান বিচারপতি এবং দেশের প্রধানমন্ত্রী, দুজনেই রয়েছেন। সম্প্রতি গণেশপুজো উপলক্ষে এঁদের দুজনকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছে। কোনও নামকরা পুজো মণ্ডপে নয়, বরং প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বাড়িতেই। সেখানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের বাড়ির গণেশপুজোয় আরতি করতে দেখা গিয়েছে মোদিকে। কিন্তু সোশাল মিডিয়ায় এই ছবি ছড়িয়ে পড়তেই শোরগোল পড়ে যায়। নানা রকম প্রশ্ন ওঠা শুরু হয়। বিজেপিকে বিঁধে বিরোধীরা প্রশ্ন তোলেন, সংবিধানের রক্ষাকর্তাকে ব্যক্তিগত পরিসরে শাসকের সঙ্গে একফ্রেমে দেখা কতটা শোভনীয়? এই প্রসঙ্গ ধরে প্রধান বিচারপতির নিরপেক্ষতা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন অনেকেই। এই সুরে সুর মেলান বর্ষীয়ান আইনজীবী ইন্দিরাও। সোশাল মিডিয়ায় তিনিও এ প্রসঙ্গে বিশেষ মন্তব্য করেন। সাফ জানান, ‘দেশের প্রধান বিচারপতি, নির্বাহী ও বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার বিভাজনে আপস করেছেন।’ আক্ষেপের সুরে বলেন, প্রধান বিচারপতির স্বাধীনতার উপর সমস্ত আস্থা হারিয়ে ফেলছেন তিনি। শুধু তাই নয়, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোশিয়েশনের তরফে বিষয়টির নিন্দা করা হচ্ছে বলেও জানান ইন্দিরা। তাঁকে সমর্থন জানিয়ে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব কর্তব্য এবং নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আরও অনেক আইনজীবী।
আসলে, বছর চুরাশির ইন্দিরা জয় সিং আইনজীবী হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। তাঁর ঝুলিতে আগে থেকেই বেশ কয়েকটি নামী মামলার সাফল্য রয়েছে। তার মধ্যে সাম্প্রতিকতম এবং গুরুত্বপূর্ণ, সমাজকর্মী তিস্তা শেতলবাদের জামিন, নুপূর শর্মার মামলা। এবার প্রধান বিচারপতির সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের হয়েও সওয়াল করবেন তিনি। মনে করা হচ্ছে, ১৭ সেপ্টেম্বর তাঁকে আদালত কক্ষে দেখা যাবে।