সংবিধান অনুযায়ী ভারতের কোনও রাষ্ট্রভাষা নেই। তবু দেশের অধিকাংশ রাজ্যে এই ভাষার প্রাধান্য চোখে পড়ে। বিশেষত উত্তরভারতের রাজ্যগুলিতে হিন্দিই যোগাযোগের প্রধান ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। কেন্দ্রের তরফেও গোটা দেশে হিন্দি ভাষার প্রসারে একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়। এবার সেই প্রসারের আঁচ পড়ল বিদেশেও। এবার বিশ্বব্যাপী হিন্দির প্রসারে রাষ্ট্র সংঘকে মোটা অঙ্কের অনুদান দিল ভারত। আসুন শুনে নিই।
‘নানা ভাষা নানা মত নানা পরিধান, বিবিধের মাঝে দেখ মিলন মহান’। এই কথাই বলে ভারতের সংবিধান। বিশ্বের দরবারেও বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ভারতবর্ষ। তাই সেখানে যে কোনও একটি ভাষার রাজত্ব চলবে না, একথা বলাই বাহুল্য। সংবিধান অনুসারে তা হয়ও না। আমাদের দেশে ২২টি সরকারি ভাবে স্বীকৃত ভাষা থাকলেও, রাষ্ট্রভাষার তকমা পায়নি এগুলির কোনওটিই। তবু হিন্দি যেন সেসবের ব্যতিক্রম। বরাবরই কেন্দ্রের তরফে হিন্দিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। আর এবার সেই গুরুত্ব কেবল দেশেই সীমাবদ্ধ রইল না, তা পৌঁছল বিদেশেও। এবার বিশ্বব্যাপী হিন্দির প্রসারে রাষ্ট্র সংঘকে মোটা অঙ্কের অনুদান দিল ভারত।
আরও শুনুন: ‘মুসলিম নেই আর’, প্রেমের টানে ভারতে আসা পাক বধূকে ফেরাতে নারাজ পরিবার, পড়শিরাও
এমনিতে উত্তর ভারতের অধিকাংশ রাজ্যের প্রচলিত ভাষা হিন্দি। সেক্ষেত্রে প্রশাসনিক কাজেও অনেকে হিন্দিই ব্যবহার করেন। কেন্দ্র সরকারি স্কুলগুলিতেও হিন্দি শেখা বাধ্যতামূলক। আর একটা বিরাট অংশ জুড়ে এই একটি ভাষার আধিপত্য চলে বলে হিন্দিকে গোটা দেশের প্রধান ভাষা করার কথাও বলে থাকেন অনেকেই। এই নিয়ে যদিও বরাবরই সরব হয়েছে দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলি। বিশেষত কেন্দ্র সরকারের বেশিরভাগ পরীক্ষাতেই প্রশ্নপত্র স্রেফ ইংরাজি ও হিন্দি ভাষায় করা হয়। এর বিরুদ্ধে দক্ষিণের রাজ্যগুলি একাধিকবার প্রতিবাদে সরব হয়েছে। তবে সম্প্রতি কেন্দ্রের তরফে হিন্দির প্রসারে বিশেষ এক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। স্রেফ ভারতে নয়। বিদেশের মাটিতেও হিন্দির প্রসারে উদ্যত হয়েছে কেন্দ্র সরকার। সম্প্রতি হিন্দির প্রসারের জন্য রাষ্ট্রসংঘে প্রায় ৮ কোটি ২০ লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। ২০১৮ সাল থেকেই রাষ্ট্রসংঘে হিন্দির প্রসারে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়াতেও যথেষ্ট সক্রিয়ভাবে প্রচার করা হয়। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম মিলিয়ে প্রায় ৫০০০০ মানুষ এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছেন। প্রতিদিন গড়ে ১০০০টি পোস্ট করা হয় সেখানে। মূল উদ্দেশ্য হিন্দির প্রসার ঘটানো। সেই উদ্যোগ আরও জোরদার করতে কেন্দ্রের তরফে এই বিপুল অনুদান দেওয়া হল রাষ্ট্রসংঘে।