ভারতের চেয়ে সুরক্ষিত দেশ পাকিস্তান। এমনটাই দাবি করল এক সাম্প্রতিক সমীক্ষার রিপোর্ট। আর সেই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই উসকে উঠেছে বিতর্ক। এই ফলাফলকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে তোপ দেগেছে মোদি সরকার। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
বিশ্বের সবচেয়ে সুরক্ষিত দেশ কোনটি? ১২১টি দেশে সমীক্ষা চালিয়ে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজল ‘গ্যালপ ল অ্যান্ড অর্ডার ইনডেক্স’ নামে একটি সংস্থা। আর সেই সমীক্ষাতেই সুরক্ষার বিচারে ভারতের চেয়ে পাকিস্তানকে এগিয়ে রেখেছে সংস্থাটি। যা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই উসকে উঠেছে বিতর্ক। এই রিপোর্টে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ভারতকে নিচু করে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে, এই মর্মে সরব হয়েছে মোদি সরকার। এমনকি সমীক্ষার আসল উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। কেন্দ্রের বক্তব্য, “সমীক্ষকরা কি পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলিকে দেখতে পাননি? আফগানিস্তান সীমান্ত লাগোয়া খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বালুচিস্তানে যে ক্রমাগত রক্ত ঝরছে, তা তাঁরা বুঝতে পারছেন না? এগুলিই কি তাঁদের চোখে স্বর্গ?” কোন কোন মাপকাঠির ভিত্তিতে এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কেন্দ্র।
আরও শুনুন: ভারতবর্ষে মুসলমানও প্রশাসনের শীর্ষে যেতে পারে, পাকিস্তানকে জবাব IAS শাহ ফয়জলের
জানা গিয়েছে, বিশ্বের ১২১টি দেশে সমীক্ষা চালিয়েছে ওই সংস্থা। ১২১টি দেশের প্রায় দেড় লক্ষ মানুষের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে বলে দাবি সমীক্ষকদের। রাতে শহরের রাস্তায় তাঁরা নিরাপদে হাঁটতে পারেন কি না, অথবা দেশের ল অ্যান্ড অর্ডার তথা পুলিশ প্রশাসনের উপর তাঁদের আস্থা কতখানি, এমনই সব প্রশ্ন করা হয়েছিল তাঁদের। আর তার ভিত্তিতেই ১ থেকে ১০০ পর্যন্ত র্যাঙ্ক হিসেবে সাজানো হয়েছে দেশগুলিকে। ৯৬ নম্বর পেয়ে তালিকার একেবারে শীর্ষে রয়েছে সিঙ্গাপুর। প্রথম পাঁচের মধ্যে জায়গা পেয়েছে তাজিকিস্তান, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড এবং ইন্দোনেশিয়াও। এদিকে ৮০ নম্বর পেয়ে ৬০তম স্থানে রয়েছে ভারত। অন্যদিকে ৮২ পেয়ে ৪২ নম্বরে ঠাঁই হয়েছে পাকিস্তানের। আশ্চর্যের কথা হল, হিজাব বিতর্কে যে ইরান বর্তমানে অগ্নিগর্ভ, যেখানে নারীর অধিকার খর্ব হওয়া নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন দলে দলে মহিলা, সেই ইরানের এই তালিকায় জায়গা হয়েছে পাকিস্তানের সঙ্গেই। আবার তার থেকে মাত্র এক ধাপ উঁচুতে, অর্থাৎ ৪১তম স্থানে রয়েছে আমেরিকা, ইতালি এবং জার্মানি। আবার ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশের থেকেই নিচে চলে গিয়েছে ব্রিটেন এবং রাশিয়া। কিছুদিন আগেই গদি বদলে যাওয়া শ্রীলঙ্কার ঠাঁই হয়েছে ভারতের সঙ্গেই। সব মিলিয়ে এই রিপোর্টের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে নানা মহলে। বিশেষত চিরশত্রু পাকিস্তানের থেকে সুরক্ষার বিচারে পিছিয়ে থাকার ঘটনাকে যে কোনও মতেই মানতে নারাজ ভারত, তা সাফ বুঝিয়ে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকার।