ওমিক্রন এসে আবার আমাদের ঘরবন্দি করে রেখেছে। সকলকেই সাবধানে থাকতে হবে, বিশেষত বয়স্কদের তো এই সময় বেশি সতর্ক থাকা উচিত। সংক্রমণ সম্ভাবনা বেশি, এমন জায়গায় যাওয়া থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়। তাই যে কোনও প্রয়োজনে এখন তাঁদের ব্যাঙ্কে না যাওয়াই ভাল। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে ব্যাঙ্কের কাজকর্ম তাহলে তাঁরা করবেন কী করে! এই সমস্যা এড়াতেই অনেক ব্যাঙ্কে চালু আছে পরিষেবা ঘরে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ। তা চালু আছে কি-না কীভাবে জানবেন? তার খরচখরচাই বা কত? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
বয়স্ক যাঁরা, এই ওমিক্রন ঝড়ে তাঁদের সাবধানে থাকতে হবে। বাড়তি সতর্কতার প্রয়োজন তাঁদের। আবার সতর্ক থাকতে গিয়ে ব্যাঙ্কের কাজকর্মে যে ঢিলে পড়বে, তা-ও তো হয় না। এই উভয় সংকটে পড়েছেন অনেকেই। জরুরি কাজ হবে না ভেবে কপালে চিন্তার ভাঁজ। না, চিন্তার কিছু নেই। এহেন সংকট কাটানোর রাস্তাও অবশ্য আছে। অনেক ব্যাঙ্কেই চালু আছে পরিষেবা বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা। সামান্য খরচেই সেক্ষেত্রে ঘরে বসে জরুরি কাজ করে নিতে পারবেন গ্রাহকরা। এই ওমিক্রন আবহে যা আরও জরুরি হয়ে উঠেছে।
আরও শুনুন – খুলবে শক্তির অফুরন্ত ভাঁড়ার, পৃথিবীকে বিস্মিত করে নয়া রেকর্ড গড়ল চিনের ‘কৃত্রিম সূর্য’
প্রথমত, কীভাবে জানা যাবে যে, বাড়ি বসে পরিষেবা পাওয়া যাবে কি-না? ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইটে গিয়ে এই সংক্রান্ত তথ্য দেখে নেওয়া যেতে পারে। যে ব্যাঙ্ক এই পরিষেবা দিচ্ছে, কোন কোন বিষয়ে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে, তা ওয়েবসাইটে বিস্তারিত লেখা থাকে। কিন্তু যাঁরা ওয়েবসাইট ঘুরে দেখতে সেভাবে স্বচ্ছন্দ নন, তাঁরা কাস্টমার কেয়ারে ফোন করে এই ব্যাপারে জেনে নিতে পারবেন। পাশাপাশি এটাও দেখতে হবে যে, এই মুহূর্তে কোভিডের কারণে এলাকাভিত্তিতে আলাদা নিয়মকানুন জারি হয়েছে। সেক্ষেত্রে গ্রাহকের নিকটবর্তী শাখা বা হোম ব্রাঞ্চ এই পরিষেবা জারি রাখতে পেরেছে কিনা, ব্যাঙ্কের কাস্টমার কেয়ারে ফোন করলে, এটিও আলাদা করে জেনে নেওয়া উচিত।
আরও শুনুন – ওমিক্রনের প্রভাবে শরীর মাত্রাতিরিক্ত দুর্বল! নিজেকে চাঙ্গা রাখবেন কীভাবে?
যদি ব্যাঙ্ক এই পরিষেবা চালু রাখে তবে পরিষেবার জন্য আবেদন জানালেই কাজ শুরু হবে। বয়স্করা এবং যাঁরা শারীরিক ভাবে সক্ষম নন, তাঁরা এই পরিষেবা চাইতে পারেন। যেমন, এইচডিএফসি-র গ্রাহকরা ফোন ব্যাঙ্কিং সার্ভিসের জন্য বরাদ্দ নম্বরে ফোন করে এই পরিষেবার আবেদন জানাতে পারেন। সর্বনিম্ন ৫০০০ থেকে সর্বোচ্চ ২৫,০০০ টাকা তুলতে পারবেন গ্রাহকরা। আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে বাড়ি বসে পরিষেবা নেওয়ার খরচ ২০০ টাকা, সেই সঙ্গে দিতে হবে ট্যাক্স। অন্যান্য কাজের জন্য, প্রতিবার এই খরচ হবে ১০০ টাকা এবং সেইসঙ্গে ধার্য হবে ট্যাক্সও।
এসবিআই-এর গ্রাহকরাও এই পরিষেবা পেতে পারেন। আর্থিক লেনদেন হতে পারে দৈনিক ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত। সেক্ষেত্রে খরচ ১০০ টাকা এবং তার সঙ্গে যোগ হবে ধার্য জিএসটি। এ ছাড়া অন্যান্য কাজের জন্য খরচ ৬০ টাকা ও নির্ধারিত ট্যাক্স। পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক এই পরিষেবা চালু রেখেছে সত্তর বা তার বেশি বয়সিদের জন্য। কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে এই বয়সসীমা ৬০। খরচ সব ক্ষেত্রেই প্রায় একই রকম।
টাকা তোলা বা জমা দেওয়ার মতো আর্থিক লেনদেন ছাড়াও অন্তত দশরকম কাজ গ্রাহকরা এইভাবে করতে পারবেন। চেক জমা দেওয়া, চেকবুক আনানো, অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্ট হাতে পাওয়া থেকে ‘১৫জি’ বা ‘১৫ এইচ’ ফর্ম জমা দেওয়ার মত কাজও করা যাবে সহজেই। করোনাকালে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা মহৌষধের থেকে কম কিছু নয়। সংক্রমণ যাতে না ছড়ায়, বয়স্করা যাতে সুরক্ষিত থাকেন সেদিকে নজর রাখতেই হবে। পাশপাশি ব্যাঙ্কের জরুরি কাজগুলিও করে নেওয়া যাবে এভাবেই।