করোনার প্রভাব খানিকটা কাটিয়ে উঠেছে দেশ। তবে দেশের অর্থনীতি যে সুস্থির হয়েছে, এখনই তা বলা যাচ্ছে না। আশঙ্কা বাড়িয়ে এর সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বেকারত্বের হার। মার্চের তুলনায় এপ্রিলে বেকারত্বের হার কতটা বাড়ল? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
করোনার ছোবলে দেশের অর্থনীতি যথেষ্ট বিপর্যস্ত। করোনার প্রভাব যখন খানিকটা কেটেছে, ঠিক তখনই বেধেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যার ফলে একদিকে যেমন পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে লাগামছাড়া, তেমনই বেড়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম। ঠিক এই পরিস্থিতিতেই দেশে বাড়ছে বেকারত্বের হারও। পরিসংখ্যান বলছে, গত মার্চের তুলনায় গত এপ্রিলে বাড়ল দেশের বেকারত্ব।
আরও শুনুন: দেশরক্ষাই প্রকৃত ধর্ম… মনে করিয়ে একযোগে নমাজ আদায় ভারতীয় সেনার
সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি নামক সংস্থার দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী এপ্রিলে দেশে বেকারত্বের হার বেড়ে হয়েছে ৭.৮৩ শতাংশ। গত মার্চে এই হার ছিল ৭.৬০ শতাংশ। সরকারি তরফে এখনও এই পরিসংখ্যান প্রকাশিত না হলেও মুম্বইয়ের এই সংস্থার পরিসংখ্যান যথেষ্ট নির্ভরযোগ্য বলেই দাবি করেন অনেকে। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদদের তত্ত্বাবধানেই প্রকাশিত এই CMIE-র পরিসংখ্যান। তা জানান দিচ্ছে, গত এপ্রিলে নাগরিক পরিসরে বেকারত্বের হার বেড়ে হয়েছে ৯.২২ শতাংশ। গত মার্চে যা ছিল, ৮.২৮ শতাংশ। অন্যদিকে গ্রামীণ অর্থনীতির নিরিখে বেকারত্বের হার ৭.২৯ শতাংশ থেকে হয়েছে ৭.১৮ শতাংশ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী বেকারত্বের নিরিখে শীর্ষে আছে হরিয়ানা, সেখানে বেকারত্বের হার ৩৪.৫ শতাংশ। ২৮.৮ শতাংশ বেকারত্ব নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে রাজস্থান।
আরও শুনুন: ‘লাউডস্পিকার যখন ছিল না, তখন কি ভগবান প্রার্থনা শুনতেন না?’
অর্থনীতিবিদদের মতে, মহামারীর পেরিয়ে দেশের অর্থনীতি এখনও প্রত্যাশিত জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি। বেকারত্বের পরিসংখ্যানে তারই ছাপ পড়ছে। করোনাকালে চাকরি হারিয়েছিলেন বহু মানুষ। তাঁদের সকলেই যে পুনরায় কাজে নিযুক্ত হয়েছেন বা হতে পেরেছেন এমনটা নয়। বেকারত্ব বৃদ্ধির এটি একটি অন্যতম দিক বলেই মনে করছেন বিশিষ্টরা। CMIE জানিয়েছিল, ডিসেম্বর ২০২১-এ দেশে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা ছিল অন্তত ৫৩ মিলিয়ন অর্থাৎ ৫ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ। তাঁদের মধ্যে মহিলাদের সংখ্যা ছিল উল্লেখ করার মতোই। একই সময়পর্বে চাকরির সন্ধান করছেন ৩ কোটির বেশি মানুষ, যাঁদের মধ্যে ২৩ শতাংশ মহিলা। অর্থাৎ সাম্প্রতিক এই বেকারত্বের হার যে মহিলাদের উপরও বড় প্রভাব ফেলেছে সেই আশঙ্কা থাকছে আগের মতোই।
আরও শুনুন: ‘বেকারত্বের উপর বুলডোজার চালাবেন কবে?’, তরুণীর ‘সাহসী’ প্রশ্ন বিজেপি মুখপাত্রকে
বেকারত্ব বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গেই বেড়েছে আত্মহত্যার সংখ্যাও। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে কেবল কর্মহীনতার কারণে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছিলেন অন্তত ৯১৪০ জন। ২০২২-এ এসে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে এমনটাই প্রত্যাশিত ছিল। যদিও যুদ্ধ পরিস্থিতি সামগ্রিক অবস্থাকেই অনেকটা জটিল করে তুলেছে। মূল্যবৃদ্ধিতে নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ মানুষের। গোদের উপ বিষফোড়া হয়ে বাড়ল বেকারত্ব। এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ কোন পথে, তা এখনও স্পষ্ট নয় কারোর কাছেই।