ফের ধর্মকে কেন্দ্র করেই উসকে উঠল বিতর্ক। জোর করে ‘জয় শ্রীরাম’ বলানোর চেষ্টা করা হয়েছে এক ইমামকে, সম্প্রতি এমনই অভিযোগ উঠল যোগীরাজ্যে। ঘটনায় রীতিমতো মারধরও করা হয়েছে তাঁকে। কী ঘটেছে ঠিক? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
“আমার খোদা যে, হিন্দুর হরি সে”… এমন কথা বলতে পেরেছিলেন সাধক কবি অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি। কিন্তু এমন করে ভাবতে পারেন আর কজন! তাই যে ধর্মের অর্থ আসলে ধারণ করা, সেই ধর্মকে কেন্দ্র করেই বিভেদের বিষ উসকে ওঠে মাঝে মাঝেই। সম্প্রতি তেমনই এক ঘটনার প্রেক্ষিতে বিতর্ক শুরু হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। জানা গিয়েছে, একজন ইমামকে জোর করে ‘জয় শ্রীরাম’ বলানোর চেষ্টা করেছে জনা তিনেক যুবক। ইমাম সে কথা বলতে রাজি না হওয়ায় তাঁকে রীতিমতো মারধরও করেছে তাঁরা, অভিযোগ এমনটাই।
আরও শুনুন: মুসলিম দেশের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক গড়েছেন মোদিই, প্রশংসায় পঞ্চমুখ শশী থারুর
ইমাম মুজিবুর রহমান উত্তরপ্রদেশের বাঘপত এলাকার বাসিন্দা। সম্প্রতি মসজিদ থেকে সন্ধ্যার প্রার্থনা সেরে ফেরার সময়েই এহেন আক্রমণের মুখে পড়েন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ফেরার পথেই তাঁর পথ আটকায় তিনজন যুবক। ওই যুবকেরা একটি গেরুয়া চাদর জড়িয়ে দেয় ইমামের গলায়। ধমকের সুরে তাঁকে নির্দেশ দেওয়া হয় ‘জয় শ্রীরাম’ বলার জন্য। শুধু তাই নয়, তাঁকে ‘হিন্দুস্তান জিন্দাবাদ’ বলতেও বলা হয়, এমনটাই অভিযোগ করেছেন ইমাম। কিন্তু সে কথা বলতে রাজি হননি তিনি।
আর এরপরেই তাঁকে লাথি ঘুসি মারতে শুরু করে ওই যুবকেরা। তাঁকে রীতিমতো মারধর করা হয় বলেই দাবি করেছেন ইমাম।
এই ঘটনার জেরে অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন আক্রান্ত ইমাম। তবে কোতোয়ালি-তে তাঁর অভিযোগ নিতে টালবাহানা করা হয় বলেই দাবি করেছেন তিনি। এরপর সরাসরি পুলিশের সুপারিনডেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাঁরা। উপরমহলের হস্তক্ষেপে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। সিসিটিভি-র ফুটেজ দেখে তিন অভিযুক্তের মধ্যে দু’জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ সুপার অর্পিত বিজয়ভার্গিয়া জানিয়েছেন, ধৃত দুই অভিযুক্তের নাম রাহুল কুমার এবং জিতেন্দ্র কুমার। দুজনেই বাঘপত এলাকার বাসিন্দা।
আরও শুনুন: AIMIM রাজনৈতিক ভাবে অস্পৃশ্য! বিরোধী জোটের ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ নিয়ে প্রশ্ন ওয়েইসির দলের
কোনও মুসলিম ব্যক্তিকে দিয়ে জোর করে ‘জয় শ্রীরাম’ বলানোর চেষ্টা করা হয়েছে, এর আগেও এমন অভিযোগ উঠেছে হিন্দুত্ববাদীদের বিরুদ্ধে। বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশে এহেন সাম্প্রদায়িক বিতর্ক একেবারেই নতুন নয়। বাঘপত এলাকাটি ২০১৩-তে মুজফফরনগরের হিংসার সময়েও যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এই এলাকায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা, বিবাদের ঘটনার একাধিক নজির রয়েছে। একটি সেই তালিকাতেই নয়া সংযোজন এই ঘটনা।