সার দিয়ে বসে নমাজ পড়ছেন জনাকয় মুসলিম ব্যক্তি। কিন্তু মসজিদ বা প্রার্থনার জন্য নির্দিষ্ট কোনও জায়গায় নয়। তাঁদের নমাজ পড়তে দেখা গিয়েছে বিমানবন্দরের ভিতর। ঘটনায় বেজায় ক্ষুব্ধ সহযাত্রীরা। কী প্রতিক্রিয়া তাঁদের? আসুন শুনে নিই।
ধর্মের অনুসারী হয়ে কেউ নমাজ পড়তেই পারেন। আরাধ্যের কাছে জানাতে পারেন প্রার্থনা। তবে, বিমানবন্দরের মতো জায়গা, যেখানে অহরহ ব্যস্ততা, সেখানে বেশ কয়েকজন যদি একই সঙ্গে নমাজ পড়তে বসেন, তাহলে অসুবিধা অনেকেরই। সম্প্রতি এমনই এক ঘটনা ঘিরে উসকে উঠেছে বিতর্ক। বিমানবন্দরের ভিতরে বসেই নমাজ পড়তে দেখা গিয়েছে কয়েকজন ধর্মপ্রাণ ইসলাম ধর্মাবলম্বী ব্যক্তিকে। আর সেই ভাইরাল ছবি ঘিরেই উত্তাল নেটদুনিয়া।
আরও শুনুন: ‘লাভ জিহাদে’র ছল! হিন্দু মেয়েদের মেহেন্দি পরাতে পারবেন না মুসলিম শিল্পীরা, ফতোয়া যোগীরাজ্যে
ইসলাম ধর্মের নিয়ম অনুযায়ী, সারাদিনে ৫ বার নমাজ পড়তে হয়। এর জন্য তাঁরা মূলত মসজিদেই যান। আবার কেউ কেউ বাড়িতেই প্রার্থনা করেন। সময়ের হিসাব মিলিয়ে একসঙ্গে নমাজ পাঠ করতে বসাও নিয়মের মধ্যেই পড়ে। কিন্তু ওই নির্দিষ্ট সময় কেউ যদি বাড়ির বাইরে থাকেন বা মসজিদে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি না থাকে, তাহলে যে কোনও জায়গাতেই নিয়ম মেনে নমাজ পড়তে দেখা যায় তাঁদের। এমনকী বিশেষ কোনও ইসলামিক পরবে, অনেকে একসঙ্গে নমাজ পড়তে গেলে, সেক্ষেত্রেও মসজিদে জায়গার অভাব দেখা যায়। তখন খোলা জায়গায় নমাজ পড়তে দেখা যায় মুসলিমদের। ইদ বা রমজানের সময় এমন ছবি হামেশাই চোখে পড়ে নেটদুনিয়ায়। সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া ছবিটিও ঠিক তেমনই। তবে এক্ষেত্রে নমাজ পড়া হয়েছে বিমানবন্দরের মধ্যে। জানা গিয়েছে, প্রায় মিনিট ১০ দশেক ধরে প্রার্থনা সারে ওই দল। আর এতেই রীতিমতো বিরক্ত হয়েছেন বিমানবন্দরে ফ্লাইটেরত অপেক্ষায় থাকা অন্যান্য অনেক যাত্রীই। একইসঙ্গে ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষও। আসলে, জনসমক্ষে প্রার্থনা নিষিদ্ধ বহু জায়গায়। কোনও নির্দিষ্ট ধর্ম নয়, এই নিয়ম সব ধর্মের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। নিতান্তই প্রার্থনা জানাতে চাইলে, যেতে হবে নির্দিষ্ট একটা ঘরে। সেখানেই ব্যক্তিগত পরিসরে নিজের ধর্মের উপাসনা করতে পারেন যে কেউ। তবে এই ঘটনা যেখানে ঘটেছে সেখানে এই নিয়ম আরও কড়া। শুধু বিমানবন্দর নয়, সে-দেশে স্কুল কলেজ কোথাও জনসমক্ষে প্রার্থনার নিয়ম নেই।
আরও শুনুন: জল পর্যন্ত নেই, মুঠো মুঠো ওষুধ খেয়ে পিরিয়ডস পিছোতে মরিয়া গাজার মহিলারা
ঘটনাটি ফ্রান্সের এক বিমানবন্দরের। সে দেশে জনসমক্ষে প্রার্থনা জানানোর কোনও নিয়ম নেই। তাই বিমানবন্দরে নমাজ পাঠের ছবি দেখে বেজায় ক্ষুব্ধ অনেকেই। প্রশাসনের তরফেও ঘটনার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, সেখানকার দায়িত্বে থাকা পুলিশ অফিসারদের নিয়েও। আসলে স্রেফ সরকারি নিয়ম নয়, গাজা-ইজরায়েল যুদ্ধ নিয়েও রীতিমতো উত্তপ্ত গোটা প্যারিস। তাই এরকম আবহে এই ঘটনা আলাদা মাত্রা যোগ করেছে। সেইসঙ্গে আগুনে ঘি ঢেলেছে নেটিজেনদের কটাক্ষ। সেদিন ওই বিমানবন্দরে এমন অনেকেই ছিলেন যাঁদের এই ঘটনা একেবারেই পছন্দ হয়নি। তাই ভাইরাল ছবিতে অনেকেই মন্তব্য করেছেন, ‘বিমানবন্দরটাও এবার মসজিদে পরিণত হল?’ এতে সায় দিয়েছেন আরও অনেকেই। সব মিলিয়ে নমাজ পাঠের ঘটনাকে সামনে রেখে মুসলিমদের প্রতি রীতিমতো কটাক্ষ ধেয়ে এসেছে নেটদুনিয়ার একাংশের তরফে। যদিও সরকারের তরফে এই ধরনের মন্তব্যকে একেবারেই প্রশ্রয় দেওয়া হয়নি।