প্রিয়জনের মৃতদেহ দিনের পর দিন ঘরে আগলে রাখার মতো ঘটনা শোনা গিয়েছে একাধিক বার। কিন্তু যদি মৃত নয়, জীবিত মানুষের সঙ্গেই ঘটে প্রায় এমন ঘটনা? হ্যাঁ, এমন হাড় হিম করা অভিজ্ঞতারই সাক্ষী এক মহিলা এবং তাঁর দুই যুবক পুত্র। প্রায় দুই দশক ধরে একটি ভাঙাচোরা কুঠুরিতে তাঁদের বন্দি করে রেখেছিলেন এক ব্যক্তি। সম্পর্কে যিনি ওই মহিলার স্বামী এবং ছেলেদুটির বাবা। কী ঘটেছিল ঠিক? শুনে নেওয়া যাক।
সাত বছর ধরে এক যুবতিকে একটি ছোট্ট ঘরে বন্দি করে রেখেছ এক ব্যক্তি। সেই অন্ধকূপেই জন্ম নিয়েছে তার সন্তান, দিনে দিনে যার বয়স গড়িয়েছে পাঁচ বছরে। অথচ তখনও পর্যন্ত কোনও দিন মুক্ত আকাশ দেখার সুযোগই মেলেনি সেই বাচ্চাটির। এমনই এক গল্প জানিয়েছিল ‘রুম’ নামের একটি বিখ্যাত সিনেমা। কিন্তু কল্পনায় বানিয়ে তোলা গল্প নয়, বাস্তবেও যে এমন ঘটনা ঘটতে পারে, তা বোধহয় কল্পনাও করা যায় না। অথচ তেমনটাই ঘটেছে এক মহিলা এবং তাঁর দুই যুবক পুত্রের সঙ্গে। একটি ভাঙাচোরা পরিত্যক্ত কুঠুরিতেই জীবনের প্রায় দুটি দশক কাটিয়ে ফেলতে হয়েছে তাঁদের। আর এই অমানুষিক নির্যাতন তাঁদের উপহার দিয়েছেন যিনি, তিনি কোনও অজ্ঞাত আততায়ী নন। সম্পর্কে তিনি ওই মহিলার স্বামী এবং ছেলেদুটির বাবা। আর সেই কারণেই এই ভয়ংকর ঘটনার কথা শুনে এমন শিউরে উঠতে হয়।
আরও শুনুন: মারা গিয়েছেন ৩০ বছর আগে, জমিয়ে বিয়ের আসর বসল সেই মৃতদের
ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরো শহরে ঘটেছে এই ভয়াবহ ঘটনাটি। সেখানেই একটি পরিত্যক্ত কুঠুরিতে নিজের স্ত্রী এবং দুই ছেলেকে আটকে রেখেছিল লুই আন্তনিও স্যান্টোস সিলভা নামের এক ব্যক্তি। কুঠুরিটি রীতিমতো স্যাঁতসেঁতে, ভাঙাচোরা। বিছানাপত্রও ছিল চূড়ান্ত নোংরা। এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকতে বাধ্য করার পাশাপাশি ঠিকমতো খাবারেরও জোগান দিত না ওই ব্যক্তি। তা ছাড়াও তিনজনের উপর চলত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। আর নির্যাতিতদের চিৎকার চাপা দিতে জোরে গান বাজিয়ে রাখত সিলভা। এমনকি হাত পা বেঁধেও রাখা হত তিন বন্দিকে। পালানোর চেষ্টা করলে তাদের খুন করে ফেলা হবে বলে হুমকি দিত ওই ব্যক্তি। আর এই ভয়ংকর পরিস্থিতিতেই ১৭টি বছর বন্দি ছিলেন ওই মহিলা ও যুবকেরা। যদিও বয়সে যুবক হলেও তাঁদের কাউকে দেখেই ১০-১১ বছরের বেশি মনে হয় না, এমনটাই বলেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। আসলে এতদিনের অপুষ্টি এবং নির্যাতনের ফলে শারীরিকভাবেই সুগঠিত হয়ে উঠতে পারেননি তাঁরা।
আরও শুনুন: রজঃস্বলা হয়ে বৃক্ষরোপণে লাগবে আগুন, ছাত্রীদের গাছ লাগাতে বাধা শিক্ষকের
সম্প্রতিই উড়ো খবরের ভিত্তিতে তিনজনকে উদ্ধার করেছে ব্রাজিলের পুলিশ। গ্রেপ্তার হয়েছে অপরাধীও। আর সেই সূত্রেই সামনে এসেছে এই হাড় হিম করা ঘটনা। যা শুনে আতঙ্কে কেঁপে উঠছেন নেটিজেনেরা।