লোকসভা নির্বাচনে ওয়ানড় এবং রায়বরেলি, দুই কেন্দ্রেই কংগ্রেস প্রার্থী রাহুল গান্ধী। হাত শিবিরের এই পদক্ষেপে বেজায় চটেছেন বিপক্ষ নেতৃত্ব। দুই কেন্দ্রে জিতলে কোনটা বাছবেন রাহুল সেই নিয়েই তরজা। এ ব্যাপারে কী ভাবছেন ওয়ানড়ের আমজনতা? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
২০১৯-এর নির্বাচনে আমেঠি থেকে হারলেও, ওয়ানড়ে জিতে সাংসদ হন রাহুল। এবারও সেখান থেকেই ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি। তবে গুঞ্জন ছিল অন্য কেন্দ্র থেকেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন রাহুল। মনে করা হয়েছিল আমেঠিতেই ফের প্রার্থী হবেন। তবে জল্পনা মিথ্যে করে রায়বরেলি থেকে প্রার্থী হয়েছেন তিনি। আর এই নিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
আমেঠি ও রায়বরেলি, দুই কেন্দ্রেরই পরিচয় ছিল কংগ্রেসের দুর্গ হিসেবে। কিন্তু উনিশের ভোট হিসেব উলটে দেয়। সেবার আমেঠিতে স্মৃতি ইরানির কাছে ৫৫ হাজার ভোটে হারেন রাহুল গান্ধী। তাই এবার আর পুরনো কেন্দ্রে নয়। বরং মায়ের ছেড়ে আসা কেন্দ্র রায়বরেলি থেকেই দাঁড়াচ্ছেন রাহুল। রায়বরেলিই উত্তরপ্রদেশের একমাত্র আসন যেখানে ২০১৯-এ জিতেছিল হাত শিবির। সেখানে সোনিয়া গান্ধী জয়ী হলেও এবার বয়সের কারণে প্রার্থী হবেন না তিনি। চলে গিয়েছেন রাজ্যসভায়। ভাবা হয়েছিল এবার রায়বরেলির প্রার্থী হবেন প্রিয়াঙ্কা। কিন্তু একাধিক কারণ দেখিয়ে প্রার্থী হননি প্রিয়াঙ্কা। আচমকাই কংগ্রেসের তরফে রায়বরেলির প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয় রাহুলের নাম। এর মধ্যেই ওয়ানড়ের নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। সুতরাং রাহুল যে আরও এক কেন্দ্রে প্রার্থী হচ্ছেন, তা না জেনেই ভোট দিয়েছেন সেখানকার জনতা। গতবারের জেতা প্রার্থী হিসেবে এবারও নিজের জয় নিয়ে কার্যত নিশ্চিত হাত শিবিরের নেতা। তবে এই পদক্ষেপকে ওয়ানড়ের প্রতি অন্যায় হিসেবেই দেখছেন সেখানকার বাম প্রার্থী অ্যানি রাজা। তাঁর আশঙ্কা, রাহুল যদি দুই কেন্দ্রেই জেতেন তাহলে ওয়ানড়ে ফিরবেন না। যদিও সেখানকার জনতাও যে একইরকম ভাবছে তা নয়। বরং রাহুলের দুই কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হওয়ায় বিশেষ আপত্তি নেই ওয়ানড়ের আমজনতার।
গত নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনেই ওয়ানড়ের ভোটারদের দাবি, রাহুলের পদক্ষেপে কোনও আপত্তি নেই তাঁদের। বরং তাঁরা মনে করিয়ে দিয়েছেন, গত নির্বাচনে এই কেন্দ্রই রাহুলকে বাঁচিয়েছিল। তাঁদের বিশ্বাস ওয়ানড়ের প্রতি অন্যায় হবে এমন কিছুই করবেন না রাহুল। অনেকেই মনে করছেন ওয়ানড়ে রাহুলই জিতবেন। একইসঙ্গে রায়বরেলিতেও কংগ্রেস নেতার ঝুলিতে ভোট বেশি পড়বে বলেই বিশ্বাস তাঁদের। এমনটা হলে, রাহুলকে বেছে নিতে হবে যে কোনও একটি কেন্দ্র। নিয়ম অনুযায়ী অন্য কেন্দ্র থেকে দিতে হবে ইস্তফা। এ প্রসঙ্গে ওয়ানড়ের জনতার দাবি, রাহুল তাঁদের ভাইয়ের, সন্তানের মতো। কাজেই ওয়ানড়কে রাহুল ভুলে যাবেন না বলেই মনে করছেন তাঁরা। পাশাপাশি ইন্ডিয়া জোটের প্রসঙ্গ তুলেও রাহুলকে সমর্থন জানিয়েছেন কেউ কেউ। বিজেপির বিরুদ্ধে এই জোটে রাহুল প্রথম সারির নেতা। সেই হিসেবে তিনিও দুটি আলাদা কেন্দ্র থেকে দাঁড়াতেই পারেন। অর্থাৎ এর মধ্যে স্বাভাবিক বলে মনে করছেন অনেকেই।