পরিচয়পত্র হিসাবে এই মুহূর্তে আধার কার্ডের গ্রহণযোগ্যতা সবার উপরে। যে কোনও অফিসিয়াল কাজেই এর প্রয়োজন একরকম অবধারিত। কিন্তু আপনার আধার নম্বর জেনে কেউ কি অন্য কাজে তা ব্যবহার করছেন? যদি করে থাকেন, তাহলে আপনি তা বুঝবেন কীভাবে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
১২ ডিজিটের পরিচয়পত্র। ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার তরফে প্রত্যেক ভারতবাসীর জন্য ধার্য হয়েছে আলাদা আই-কার্ড। যাকে আমরা আধার নামে চিনি। গত কয়েক বছরে আমাদের কাছে অত্যন্ত জরুরি এবং গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে এটি। ব্যাংকিং পরিষেবা থেকে প্রভিডেন্ট ফান্ড – প্রায় সবরকম কাজেই আধার থাকা বাধ্যতামূলক। অনলাইনে আমাদের পরিচয় নিশ্চিত করে এই পরিচয়পত্রটিই। এখন এই ভারচুয়াল দুনিয়ায় আধার যেমন আমাদের নিরাপত্তা দেয়, তেমন তা নিয়ে খানিক দুশ্চিন্তার কারণও আছে বৈকি। বিভিন্ন জায়গায় আধার দেখানো বা আধারের প্রতিলিপি জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন জাগে, কারোর আধার নম্বর যদি অন্য কেউ জেনে যান, তা তিনি অন্যত্র ব্যবহার করছেন না তো? সোজা কথায় আপনার আধারের অপব্যবহার হওয়ার সম্ভাবনাও থেকে যায় ষোলআনা। কথা হচ্ছে, যাঁর আধার তিনি তা বুঝবেন কী করে?
আরও শুনুন: জরিমানা বাবদ ১১ মাসে আদায় ১ কোটি, নজির গড়লেন রেলের এই টিকিট পরীক্ষক
তারও উপায় আছে। বেশ সহজ সেই পদ্ধতি। আধার অন্য কেউ ব্যবহার করেছে বা করতে পারে, এরকম সন্দেহ হলে সোজা চলে যান UIDAI-এর ওয়েবসাইটে। অর্থাৎ uidai.gov.in-এর ঢুকে পড়তে পারলেই এ ব্যাপারে নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে। সাইটে ঢুকে প্রথমে খুঁজে নিন ‘মাই আধার’ অপশনটি। সেখান থেকে চলে যান ‘আধার অথেনটিকেশন হিস্ট্রি’ অপশনটিতে। এই পর্যন্ত পৌঁছালে আপনাকে আপনার আধার নম্বর, অর্থাৎ ১২টি ডিজিট সাবমিট করার জায়গা দেবে সাইটটি। আপনি আপনার আধার নম্বর যথাযথ জায়গায় লিখে ফেলুন। এর পরের পর্ব হল ভেরিফিকেশন। ক্যাপচা কোড ঠিকঠাক টাইপ করে আপনি ভেরিফিকেশনের জন্য আবেদন জানাতে পারেন। তা হবে ওটিপি বা ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে। অর্থাৎ আপনি ভেরিফিকেশন করতে চাইলে, আধারের সঙ্গে আপনার যে মোবাইল নম্বরটি সংযুক্ত রয়েছে সেখানে একটি পাসওয়ার্ড বা কোড আসবে। এই কোডটি দিলে আপনার সামনে একটি ট্যাব খুলে যাবে। সেখানে কোনও নির্দিষ্ট তারিখ দিয়ে আপনি সেদিনের আধার ব্যবহারের হিস্ট্রি অর্থাৎ বিস্তারিত তথ্য পেয়ে যাবেন। অর্থাৎ যখনই আপনার মনে সন্দেহ জাগবে যে, এইদিন এখানে আধার জমা দেওয়ার পর তার অপব্যবহারের সম্ভাবনা থাকছে, সেদিনের তারিখ দিয়ে আপনি আধার কোথায় ব্যবহৃত হয়েছে তার খুঁটিনাটি জেনে নিতে পারবেন সহজেই।
আরও শুনুন: অফিসে এক জায়গায় বসে একটানা কাজ! ঘাড়-পিঠের ব্যথা এড়াতে কী করবেন?
এই পদ্ধতির দুটি সুবিধা। এক তো, আপনার আধার কোথায় ব্যবহার হচ্ছে তা জেনে যাবেন। অপব্যবহার হল কি-না সে ব্যাপারেও নিশ্চিত হতে পারবেন। দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন জায়গায় আধার দেওয়া নিয়ে যদি আপনার কোনও সংকোচ কাজ করে তা-ও দূর হবে। কেননা আধারের ভুল ব্যবহার হলে তা-ও তো আপনার নখদর্পণেই থাকছে। তাই নিজের এই বিশেষ পরিচয়পত্রটির ব্যবহার যেমন করছেন তা অবশ্যই করুন, সেইসঙ্গে নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়েও সচেতন থাকুন।