অনলাইনে পর্ন দেখার অভ্যেস আছে! থাকলে আশু সাবধান হোন। আপনি কিন্তু নজরদারির বাইরে নন। আচমকা ফোন চলে আসতেই পারে। জানেনই এই কাজ আইনত অপরাধ। মুখোমুখি হতে পারেন, জরিমানার। আপনি চক্ষুলজ্জার ভয়ে আশা করি তড়িঘড়ি জরিমানাও দিয়ে দেবেন। কিন্তু যদি একদিন জানতে পারেন, গোটা ব্যাপারটাই ভুয়ো। মানে পুলিশ, জরিমানা, আইনি নোটিশ, সবই। তখন কী মনের অবস্থা হবে আপনার!
‘আপনাকে অনলাইনে পর্ন দেখতে দেখা গিয়েছে। ভারতের আইনে এত দণ্ডনীয় অপরাধ। হয় জরিমান দিন, অথবা হাজতবাস করুন।’
অনেকেই কমবেশি পর্ন দেখেন, একথা তাঁরাও জানেন। কিন্তু কোন দৈব বলে, দিল্লি পুলিশ জানতে পারল তাঁরা ফোনে বা কম্পিউটারে পর্ন দেখছিলেন! নাহ্ এই প্রশ্ন তাঁরা করতেন না। বরং পর্ন দেখার অভিযোগে হাজতবাস হলে সমাজে মুখ দেখাবেন কি করে! সামাজিক ইমেজের মুখে একেবারে চুন কালি লেপে যাবে, এই ভয়েই তাঁরা সম্মত হতেন, মানে মানে জরিমানা দিতে। প্রতারণাকারীরা তাঁদেরকে ধরিয়ে দিত, পুলিশের একটা নকল নোটিশ। বেশি নয় ন্যূনতম জরিমানা দিলেই হবে। সেটা কত! এই তিন হাজার। কীভাবে দেব? কোন থানা বা কোন আদালতে যেতে হবে! উত্তরে প্রতারণাকারীরা জানাতেন, কোনও থানা বা আদালতে আসার দরকারই নেই। অপরাধ যখন অনলাইনেই করেছেন, জরিমানা অনলাইনেই হবে। তাঁরা ‘অভিযুক্ত’ ব্যাক্তিদের ইমেল বা হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দিতেন কিউআর কোড বা ইউপিআই আইডি, সেখানে টাকা দিলেই, দোষমুক্তি। এইভাবে বেশ চলছিল। তাঁরা কামাচ্ছিলেনও বেশ।
আরও শুনুন: নগ্নতাই যখন পেশা, কেমন কাটে ন্যুড মডেলদের দিন?
কিন্তু বাধ সাধল কিছু সচেতন মানুষ। তাঁরা বললেন, না পর্ন তো আমি দেখিনি। আপনি কোন থানা থেকে বলছেন! আর জরিমানা যদি দিতেই হয় থানায় যাব বা আদালতে। তার আগে আইনি নোটিশ পাঠান। কেউ বলেন আমি থাকি হায়দ্রাবাদে। দিল্লি পুলিশ কেন আমায় জরিমানা করবে! প্রতারকরা এইসব বেমক্কা প্রশ্নে বেশ থতমত। তাঁরা এইসব টার্গেটদের বলত, আপনাকে জরিমানা দিতে হবেই না হলে আরও কড়া ব্যবস্থা হবে, সেই বন্দোবস্ত করছি ইত্যাদি বলে শাসিয়ে ছেড়ে দিত। এরকম কিছু সচেতন মানুষ দিল্লি সাইবার সেলে অভিযোগ দায়ের করেন। দিল্লি পুলিশের সাইবার সেল তো অভিযোগ শুনে, আকাশ মাথায় ভেঙে পড়ার জোগাড়। তাঁরা অনলাইনে এরকম কোনও কার্যক্রম কোনওদিনও করেননি। এই বিষয়ে তাঁরা কিছুই জানেন না।
আরও শুনুন: পর্নে আসক্ত Osama bin Laden, কুখ্যাত জঙ্গির পর্নের কালেকশন কেমন ছিল জানেন?
শুরু হয় অপরাধীর খোঁজে তল্লাশি। প্রায় ছ-মাস, তদ্দিনে এই গ্যাংয়ের শিকার প্রায় হাজার খানেক মানুষ। কম করে তাঁদের ঝুলিতে জমা পড়েছে অন্তত তিরিশ লক্ষ টাকা। তামিলনাড়ুতে অভিযুক্তদের খোঁজে চষে ফেলা হয় প্রায় দু হাজার কিলোমিটার। জানা যায়, এই প্রতারণা চক্রের মূল পাণ্ডাটি বসে আছেন কম্বোডিয়ায়। সেখান থেকেই তিনি এইসবের কলকাঠি নাড়েন। আর দেশের মধ্যে তামিলনাড়ু থেকেই চলত এইসব অপারেশন।
বাকিটা ক্লিক করে শুনে নিন।