পরীক্ষার হলে ঢুকতে হলে খুলে ফেলতে হবে মঙ্গলসূত্র। বিবাহিতা হিন্দু মহিলাদের ক্ষেত্রে এমন নির্দেশ দেওয়া হলেও, মুসলিম মহিলাদের ক্ষেত্রে বোরখা নিয়ে কোনও আপত্তি জানানো হয়নি। এই মর্মেই এবার অভিযোগে সরব হল গেরুয়া শিবির। কোথায় ঘটেছে এই ঘটনা? শুনে নেওয়া যাক।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রীরা হিজাব পরতে পারবে কি না, সেই ইস্যুতে মামলার জল গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। যে মামলার রায়ে এখনও পর্যন্ত একমত হতে পারেননি শীর্ষ আদালতের বিচারপতিরাও। আর সেই হিজাব বিতর্কের মাঝেই এবার ধর্মীয় চিহ্ন নিয়ে উসকে উঠল নয়া বিতর্ক। অভিযোগ, পরীক্ষার হলে প্রবেশ করার আগে হিন্দু মহিলাদের মঙ্গলসূত্র খুলে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অথচ মুসলিম মহিলাদের ক্ষেত্রে বোরখা নিয়ে কোনও আপত্তি জানানো হয়নি বলে খবর। তেলেঙ্গানায় ঘটা ওই ঘটনার ভিডিও ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যা নিয়ে সরব বিজেপি নেতৃত্ব।
আরও শুনুন: মক্কায় আছেন স্বয়ং মক্কেশর মহাদেব! পুরীর শঙ্করাচার্যের দাবিতে শুরু জোর চর্চা
ঠিক কী ঘটেছে তেলেঙ্গানার ওই পরীক্ষাকেন্দ্রে?
জানা গিয়েছে, তেলঙ্গানার আদিলাবাদ অঞ্চলের বিদ্যার্থী জুনিয়র এবং ডিগ্রি কলেজে রাজ্য সরকারের পাবলিক সার্ভিস কমিশনের গ্রুপ ওয়ান প্রিলিমিনারি পরীক্ষা চলছিল। টোকাটুকি আটকানোর জন্য রাজ্য বা কেন্দ্র সরকারের পরীক্ষাগুলির ক্ষেত্রে সাধারণত কিছু নিয়মবিধি থাকে। ওই নির্দেশিকা অনুযায়ীই, পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার সময় শরীরে কোনোরকম ধাতব বস্তু রাখা নিষেধ। সেইমতোই এই পরীক্ষাকেন্দ্রটিতেও গেটেই আটকে দেওয়া হয়েছিল বিবাহিত হিন্দু মহিলাদের। নিরাপত্তারক্ষীদের তরফে জানানো হয়, গলায় মঙ্গলসূত্র থাকলে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। অনেক হিন্দু মহিলাই বিবাহের চিহ্ন হিসেবে এই অলংকার ধারণ করে থাকেন। কিন্তু পরীক্ষার হলে ঢোকার আগে নিয়ম মেনে কেবল মঙ্গলসূত্রই নয়, শরীরে থাকা অন্যান্য অলংকারও খুলে ফেলতে হয়েছে তাঁদের। এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর সূত্রে দেখা যাচ্ছে, ওই একই সেন্টারে হিজাব-বোরখা পরেই ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে মুসলিম মহিলাদের। আর এর প্রতিবাদেই আক্রমণ শানিয়েছেন বিজেপি নেতাকর্মীরা। সে রাজ্যের টিআরএস সরকারের বিরুদ্ধে মুসলিম তোষণের অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। ওই ভিডিওটি নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে ভাগ করে বিজেপি নেত্রী প্রীতি গান্ধী লিখেছেন, “বোরখা, হিজাব পরে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করা গেলেও মঙ্গলসূত্র পরিহিত হিন্দু মহিলাদের পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হচ্ছে না। তোষণমূলক রাজনীতি চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছে গিয়েছে।” যদিও এই অভিযোগের পালটা একটি ভিডিয়ো শেয়ার করে টিআরএস নেতা কৃষ্ণণ দেখিয়েছেন, এক মুসলিম পরীক্ষার্থীকেও একইভাবে বোরখা খুলে ঢুকতে বলছেন নিরাপত্তারক্ষী। তেলেঙ্গানা সরকার জাতি-ধর্ম নিয়ে পক্ষপাতিত্ব করে না বলেই দাবি ওই নেতার। সব মিলিয়ে ধর্মের সূত্র ধরেই ফের নয়া বিতর্ক ঘনিয়ে উঠল দেশে।