প্রকৃতির দুর্যোগের সামনে তুচ্ছ হয়ে গেল জাতি আর ধর্মের বিভেদ। পাকিস্তানে বন্যাবিধ্বস্ত মুসলিম পরিবারগুলির জন্য আশ্রয়ের দরজা খুলে দিল হিন্দু মন্দির। গড়ল অভিনব সম্প্রীতির নজির। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
ভয়ানক বন্যায় রীতিমতো বিপর্যস্ত পড়শি দেশ পাকিস্তান। ঘরছাড়া অগণিত মানুষ। এই পরিস্থিতিতেই জাতি ধর্মের বিভেদ ভুলে মুসলিম পরিবারগুলির পাশে দাঁড়ালেন সে দেশের হিন্দুরাও। নিরাশ্রয় নিঃসম্বল মানুষদের আশ্রয় দিতে নিজেদের মন্দিরের দরজা পর্যন্ত খুলে দিলেন তাঁরা। মনুষ্যত্ব যে ধর্মের গণ্ডিকে ছাপিয়ে যেতে পারে অনায়াসেই, সে কথাই যেন আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন এই মানুষেরা।
আরও শুনুন: ব্রেক আপ পার্টি! বিবাহবিচ্ছেদের পর একসঙ্গে উদযাপনে শামিল ১৮ জন ব্যক্তি
আগে কখনও বন্যার এমন ভয়াবহ তাণ্ডব দেখেনি পাকিস্তান, এমনটাই বলছেন সে দেশের মানুষেরা। বন্যার জেরে আর্থিক ক্ষতির অঙ্ক ইতিমধ্যেই ১৮০০ কোটি ডলার ছুঁয়ে ফেলেছে। নষ্ট হয়ে গিয়েছে প্রায় ৮০ লক্ষ একর জমির ফসল। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধার অভিযান চালানো হলেও আটকানো যায়নি মৃত্যুমিছিল। বিভিন্ন মহলের দাবি, পাকিস্তানে এখন যা পরিস্থিতি, তাতে বলা চলে যে দেশের তিন ভাগই জলের নিচে। কিন্তু এইরকম সময়েই অভিনব সম্প্রীতির নজির দেখা গিয়েছে বালুচিস্তানের কাছি জেলার এক ছোট গ্রামে। নারি, বোলান আর লেহরি নদী ছাপিয়ে যাওয়ার দরুন বাকি জেলার থেকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল এই গ্রামটি। এই অবস্থায় অসহায় ঘরছাড়া গ্রামবাসীদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়। ওই মুসলিম পরিবারগুলিকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাবা মাধোদাস মন্দিরের দরজা খুলে দেন তাঁরা। মন্দিরটি তুলনায় উঁচু জমিতে অবস্থিত হওয়ার দরুন সেখানে জল ঢোকেনি। তা ছাড়া মন্দিরের বড় পাকা বাড়িটি অনেক মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার পক্ষেও উপযোগী।
আরও শুনুন: অতিরিক্ত সুন্দরী তাই আটক করেছে পুলিশ, অদ্ভুত দাবী মহিলার
জানা গিয়েছে, দেশভাগের আগেকার এক হিন্দু সন্ন্যাসী বাবা মাধোদাসকে ওই অঞ্চলের হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে সকলেই শ্রদ্ধা করেন। স্থানীয় লোকশ্রুতি অনুযায়ী, কোনোরকম ধর্মীয় গণ্ডি না মেনে মানবতার আলোয় সকলকে সমদৃষ্টিতে দেখতেন এই হিন্দু সন্ন্যাসী। তাঁর সেই আদর্শকে স্মরণ করেই এহেন বিপর্যয়ের দিনে অনন্য সম্প্রীতির নজির গড়লেন ওই এলাকার মানুষ।