মুসলিমদের কাছে ভোট চেয়ে অপমানিত হতে পারবেন না। এক সাক্ষাৎকারে ঠিক একথাই জানিয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তবে এই দাবির নেপথ্যে বিশেষ এক কারণও দেখিয়েছেন তিনি। কী সেই কারণ? আসুন শুনে নিই।
অধিকাংশ রাজনীতিবিদ মনে করেন, ভোটারের কোনও ধর্ম পরিচয় হয় না। একটি ভোটও মহামূল্যবান। তাই যে কারও কাছেই ভোটভিক্ষা চাওয়া যেতে পারে। কিন্তু অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এর ব্যতিক্রম। নিজেই দায়িত্ব নিয়ে সে কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। তাঁর সাফ দাবি, মুসলিমদের কাছে তিনি ভোট চাইতে পারবেন না।
আরও শুনুন: মাতৃগর্ভ কি ‘চাষের জমি’! জনসংখ্যা নিয়ে মুসলিম নেতাকে তুলোধোনা অসমের মুখ্যমন্ত্রীর
নিজের রাজ্য হোক বা দেশ, বিজেপির বিরুদ্ধাচরণ একেবারেই সহ্য করেন না হিমন্ত বিশ্বশর্মা। বিরোধী শিবিরের কেউ মোদি বিরোধী মন্তব্য করলে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সবার আগে সরব হতে দেখা যায় হিমন্তকে। একইসঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে মুসলিম বিরোধী মন্তব্য করতেও শোনা যায় তাঁকে। এমনকি শ্রদ্ধা-আফতাব কাণ্ডের পর ‘লাভ জিহাদ’ নিয়েও তোপ দেগেছিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তবে এবার তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন, মুসলিমদের কাছে তিনি ভোট চাইতে যাবেন না। এতে তাঁর অপমান হবে বলেই দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
কিন্তু কেন?
আরও শুনুন: নায়িকা ভুলে, রামেই মজে মন! রামমন্দিরে ১১ কেজি সোনা-হিরের মুকুট দিতে চান ঠগ সুকেশ
আসলে হিমন্তের এই দাবি নেপথ্যে রয়েছে বেশ কিছু আক্ষেপ। এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে সে প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়েই মুসলিমদের কাছে ভোট না চাওয়ার দাবি তোলেন হিমন্ত। তাঁর কথায়, মুসলিম ভোট মূলত যায় কংগ্রেস আর এআইইউডিএফ-এর ঝুলিতে। কটাক্ষের সুরে বলেন, এই দুই দলের সঙ্গে মুসলিমদের সম্পর্ক স্রেফ ভোট আদানপ্রদানের। অথচ মুসলিমদের জন্য কাজ করে মূলত বিজেপি, এমনটাই দাবি হিমন্তের। তিনি আরও বলেন, অসলে মুসলিমদের জন্য বেশ কিছু ফ্রি পরিষেবা রয়েছে। একইসঙ্গে যে কোনও বাজারে গেলেই ১০ জনের মধ্যে ৭ জন মুসলমান দোকানি দেখা যাবে বলেও দাবি করেন হিমন্ত। তবু এঁরা কেউই বিজেপিকে ভোট দেয় না। তাই মুসলিমদের প্রতি হিমন্তের যথেষ্ট আক্ষেপ রয়েছে বলেই জানিয়েছেন তিনি। এরপরই হিমন্ত বলেন, নিজের আত্মসম্মান যথেষ্ট গুরুত্ব দেন তিনি। তাই মুসলিমরা যখন তাঁকে ভোট দেবেনই না, তখন তিনিও অপমানিত হতে ভোট চাইতে যাবেন ন। যদিও এরসঙ্গে তিনি ফের যোগ করেন, সরকারের চোখে সকলেই সমান। মুসলিমদের জন্যও সমান গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হবে। তবে তার বদলে মুসলিমরা ভোট দেবেন না। সচারচর কোনও রাজনীতিবিদকে সরাসরি এই ধরনের মন্তব্য করতে দেখা যায় না। কিন্তু নিজের আত্মসম্মনাকে সামনে রেখে হিমন্তের এমনটা বলেছেন। তাই ওয়াকিবহাল মহলের অনেকেই মনে করছেন, এর বিশেষ প্রভাব পড়তে পারে হিমন্তের রাজনৈতিক ক্যেরিয়ারেও।