নির্বাচন জিতলে তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হবেন মোদি। বিজেপি ভক্তরা সেই আশায় বুক বেঁধেছেন ইতিমধ্যেই। কিন্তু অগ্নিবীর প্রকল্পের আওতায় সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া যুবকরা এই নিয়ে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ। ঠিক কেন মোদির বিরুদ্ধে চটে লাল তাঁরা? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
নির্বাচনের পাঁচটি দফা পেরিয়েছে। ভোটকুশলীরা ইতিমধ্যেই নির্বাচনের ফল নিয়ে ভবিষ্যৎবাণী করতে শুরু করেছেন। কেউ বলছেন আবারও ক্ষমতায় ফিরবেন সেই মোদি। কেউ আবার উলটো সুরে গাইছেন। কিন্তু নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তার সঠিক খোঁজ দিতে পারেন সাধারণ ভোটাররাই। তাই দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম আমজনতার সঙ্গে কথা বলেই বোঝার চেষ্টা চালাচ্ছে, আগামী ৫ বছর দেশের ভবিষ্যৎ কোন দলের হাতে যেতে চলেছে।
আরও শুনুন: সমীক্ষা বলছে দেশের ৮৩ শতাংশ যুবই বেকার, মোদি বলছেন…
এমনই এক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে ধরা পড়ল মোদির বিরুদ্ধে সরব হওয়া কিছু সাধারণ যুবকের কথা। যদিও রাষ্ট্রের কাছে তাঁরা সাধারণ নন। প্রত্যেকেই সেনাবাহিনীর অংশ। সদ্য অগ্নিবীর প্রকল্পের আওতায় এই সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু এই চাকরিতে মোটেও খুশি নেই অগ্নিবীর যুবকদের অনেকেই। বিশেষ করে হরিয়ানার বেশ কিছু অঞ্চলের মানুষ অগ্নিবীর প্রকল্পের কিছু নিয়মের কারণে মোদির উপর চটে লাল। হরিয়ানা, বিহার বা উত্তর প্রদেশে গ্রামে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া চল লক্ষ করা যায় ভালমতো। সেখানকার বহু যুবক ছোট থেকেই স্বপ্ন দেখেন দেশের সেনায় যোগ দেওয়ার। তাঁদের কাছে হাতে চাঁদ পাওয়ার ব্যবস্থা করেছিল বিজেপি সরকার। অগ্নিবীর প্রকল্প, যার আওতায় দেশের বহু যুবক সেনায় যোগদানের সুযোগ পেয়েছিল। প্রকল্প নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। কারণ এই প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী সেনার চাকরি মাত্র চার বছরের! যা হরিয়ানার জাঠ যুবকরা ভাবতেই পারেন না। আসলে সেনায় যোগ দেওয়ার জন্য এঁদের প্রত্যেককে দিনরাত পরিশ্রম করতে হয়। ভোররাতে উঠে শরীরচর্চা, দিনভর চাষের কাজ, রাতে সেনায় যোগ দেওয়ার জন্য পড়াশোনা। এই তাঁদের রুটিন। বছরের পর বছরের পরিশ্রমের পর যদি চাকরি জোটে মাত্র ৪ বছরের জন্য, সেটা যে কারও পক্ষেই মেনে নেওয়া কঠিন। তাই কেন্দ্রের এই ‘চার বছরের নোকরি’ তাই একেবারে নাপসন্দ হরিয়ানার। আর সেই প্রসঙ্গ ধরেই মোদিকে বিঁধেছেন সে রাজ্যের যুবকরা। তাঁদের সাফ প্রশ্ন, “৭৩ সাল কা বুজুর্গ আদমি তিসরি বার প্রধানমন্ত্রী বন সকতা হ্যায়, বিশ সাল কা যুবা সির্ফ চার সাল কে নকরি কিউ করে?” অর্থাৎ ৭৩ বছর বয়সেও কেউ তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন, এদিকে ২০ বছরের যুবক চাকরি করবে মাত্র তিন বছর?
আরও শুনুন: যোগীরাজ্যে বাম! জিতবেন না জানেন, তবু কেন ভোটে লড়ছেন? বামকর্মী বললেন…
ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, চলতি নির্বাচনে হরিয়ানার যুবকদের এই ক্ষোভ বিজেপির কাঁটা হতে পারে। সুযোগ হাতছাড়া করেনি কংগ্রেসও। হরিয়ানায় প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে অগ্নিবীরকেই রেখেছেন হাত নেতৃত্ব। বাধ্য হয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে অন্যভাবে প্রচার সারতে হয়েছে হরিয়ানায়। সব মিলিয়ে দেশের অন্যান্য প্রান্তে মোদির জয় নিয়ে যতই আশা, সম্ভাবনা জন্মাক, হরিয়ানার যুবকরা একেবারে উলটো কথাই ভাবছে। যে চাকরির জন্য এত পরিশ্রম করেছেন, সেই চাকরি থেকেই যদি মাত্র ৪ বছরের মাথায় অবসর নিতে হয়, তাতে কার ভালো লাগে! আর সেই ক্ষোভের কারণেই প্রধানমন্ত্রী মোদির প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সে রাজ্যের অগ্নিবীর যুবকরা।