সরকারি যোজনায় মুসলিম পরিবার কেন ঘর পাবে? এই অভিযোগে সরব গুজরাটের কিছু হিন্দু পরিবার। সমস্যা মেটাতে নাজেহাল প্রশাসন। কারণ আইন অনুযায়ী, সরকারের সুবিধা পাওয়ার অধিকার সবার। কী হল শেষমেশ? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
সরকারি আবাস যোজনা। তাতে ঘর পাওয়ার অধিকার সমস্ত যোগ্য নাগরিকের। কিন্তু সরকারি হিসাবে যোগ্যতার মাপকাঠি যাই হোক, সমাজ যোগ্যতা মাপবে ধর্মের ভিত্তিতেই। সম্প্রতি এমনই ইস্যুতে উত্তাল গুজরাটের এক আবাসন। সরকারি অনুদানে তৈরি ওই আবাসনে কেন মুসলিম পরিবার ঘর পাবে, সেই প্রশ্নেই সরব হয়েছেন সেখানকার হিন্দুরা।
আরও শুনুন: পর্ন ছাড়লেও পর্নস্টার! শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সানির শো বাতিলে উঠছে প্রশ্ন
নানা ভাষা, নানা মত, নানা পরিধান, বিবিধের মাঝে দেখ মিলন মহান… একসময় দেশকে বোঝানোর জন্য এই গানের লাইনই যথেষ্ট ছিল। তবে আজকের ভারতে দাঁড়িয়ে এই গান গাইতে বাধে অনেকেরই। কারণ অবশ্য একাধিক। বিশেষ কোনও ধর্মের প্রতি ঘৃণাভাব প্রকাশ্যে উগরে দিতেও দুবার ভাবেন না বহু নেতা। তা নিয়ে বিতর্কও হয়। কিন্তু লাভের লাভ হয় না কিছুই। মোটের উপর অনেকেই ধরে নিয়েছেন, এমনটাই হয়তো স্বাভাবিক। সম্প্রতি গুজরাটের এই ঘটনাও সে কথা মনে করিয়ে দিল। ঘটানটি ভদোদরার এক আবাসনের। যা তৈরি হয়েছে সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের সাহায্যে। এমনিতে এই ধরনের প্রকল্পের সুবিধা রাজ্যের সকলেই পেতে পারেন। সরকারের তরফে কিছু নিয়ম নির্দিষ্ট করা থাকে। তাও রোজগার বা বয়স সংক্রান্ত, ধর্মের ভিত্তিতে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা বণ্টন কখনই হয় না। সেইমতো এই আবাসনে একটি ঘর পেয়েছিলেন বছর ৪৪-র মুসলিম মহিলা। তবে তিনি ছাড়া এখানকার সব ঘরুই হিন্দু পরিবারের নামে। কাজেই এই আবাসনকে হিন্দু আবাসন হিসেবেই ধরে নিয়েছিলেন সকলে। সেখানে কীভাবে একজন মুসলিম ঠাঁই পায়, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হিন্দু বাসিন্দারা।
আরও শুনুন: রাস্তা জুড়ে নমাজ পাঠ নয়, বিশেষ নিয়ম কোরবানিতেও, কড়া নির্দেশ যোগী আদিত্যনাথের
তাঁদের দাবি, এই আবাসনের সকলেই প্রায় হিন্দু। কাজেই এখানে কোনও মুসলিমের থাকা তাঁরা পছন্দ করছেন না। এর জন্য সরকারি আধিকারিকদেরই দোষ দিচ্ছেন হিন্দুরা। তাঁদের গাফিলতিতেই এমনটা হয়েছে বলে মনে করছেন সকলে। এই নিয়ে সরকারি দপ্তরে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন ওই হিন্দু আবাসিকরা। তাতেও কাজ না হলেও, ধর্নায় বসার হুঁশিয়ারি অবধি দিয়েছেন। কিন্তু এমনটা যে গাফিলতির ফলে হয়নি তা নিশ্চিত ভাবে জানেন সংশ্লিষ্ট সরকারি আধিকারিকরা। ঘর পাওয়ার বিষয়টা ঠিক হয় লটারির মাধ্যমে। সেখানে যে কেউ অংশ নিতে পারেন। তাতে কোনও হাত থাকে না কারও। একইভাবে লটারিতে কার নাম উঠবে সেটাও কেউ জানেন না। এক্ষেত্রেও তাই লটারিতেই মুসলিম মহিলার নাম উঠেছিল। সেই হিসাবে তিনি ঘর পেয়েছেন। আইন অনুযায়ী তাঁকে বঞ্চিত করা সম্ভব না। এমনকি তাঁকে অন্য কোথাও চলে যাওয়ার নির্দেশও দিতে পারেন না কেউ। কিন্তু সেসব মানতে নারাজ সেখানকার হিন্দুরা। কাজেই মুসলিম মহিলাকে অনুরোধ করা ছাড়া সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজে পাননি আধিকারিকরা। কেবলমাত্র মহিলা যদি নিজের ইচ্ছায় এই আবাসনে থাকতে না চান, তাহলেই সমস্যা মিটবে।