ম্যাট্রিমনিয়াল সাইট দেখে হয়েছিল বিয়ে। বিয়ের পর পেরিয়েছে মাস ছয়েক। আর তখনই সামনে এল এক মারাত্মক তথ্য। জানা গেল, স্ত্রী দাগি আসামি। বেজায় বেকায়দায় পড়ে এখন বিচ্ছেদের কাতর আরজি জানিয়েছেন স্বামী। আসুন শুনে নিই সেই ঘটনা।
বিয়ে যে এমন দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠবে তা ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি গুজরাটের বিমল কারিয়া। মাত্র মাস ছয়েকের বিবাহিত জীবন। সব ঠিকঠাকই চলছিল। হঠাৎ বিমল জানতে পারেন, রীতা দাস নামে যে মহিলাকে তিনি বিয়ে করেছিলেন, তিনি আসলে ঘাঘু অপরাধী। মামলা চলছে তাঁর নামে। আর মহিলার নাম আদৌ রীতা দাস নয়, বরং দাগি আসামি রীতা চৌহানই তাঁর স্ত্রী। ঘটনার আকস্মিকতায় রীতিমতো হকচকিয়ে গিয়েছেন গুজরাটের ওই ব্যক্তি। নিরুপায় হয়েই বিচ্ছেদের আরজি জানিয়েছেন তিনি।
আরও শুনুন: মৃত ছেলের স্বপ্ন পূরণে গ্রামের স্কুলে ১ লক্ষ টাকা দান, নজির দিনমজুরের
অথচ ম্যাট্রিমনিয়াল সাইট দেখে যখন রীতার সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল বিমলের, তখন এসবের কিছুই জানতে পারেননি তিনি। রীতা জানিয়েছিলেন, তাঁর আগে একবার বিয়ে হয়েছিল, তবে ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে। সেই বিয়ে সম্পর্কে বিশদে জানতে চাইলেও, বিমলকে তেমন কিছু জানাতে চাননি রীতা। বরং জানিয়েছিলেন যে, গরিব ঘরের মেয়ে তিনি। মায়ের শরীরও ভাল যাচ্ছে না। তাই যোগাযোগের পর বেশিদিন অপেক্ষা করতে রাজি ছিলেন না তিনি। রীতার জোরাজুরিতেই কয়েকদিনের মধ্যেই বিমলের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। বিমল অবশ্য একটা বিষয়ে একটু অবাকই হয়েছিলেন। রীতা নিজেকে গরিব বলে পরিচয় দিলেও, তাঁর চালচলনে অবশ্য সে ছাপ ছিল না। বরং পোশাক থেকে প্রসাধন ব্যবহারে বেশ বিলাসীই ছিলেন রীতা। খটকা লাগলেও বিষয়টি নিয়ে আর মাথা ঘামাননি বিমল।
আরও শুনুন: প্রধানমন্ত্রীর মায়ের মৃত্যুতে সমবেদনা জানিয়ে চিঠি খুদে পড়ুয়ার, জবাব দিলেন মোদিও
এভাবেই কেটে গিয়েছে মাস ছয়েক। রীতা একদিন বিমলকে বলেন, যে তাঁকে একবার অসমে যেতে হবে। সেখানে জমিজমা সংক্রান্ত একটা সমস্যা আছে, তা সমাধানের জন্যই যাওয়া জরুরি। ফোনে তাঁদের কথাবার্তা হত। হঠাৎ ফোনে যোগাযোগ একদিন বন্ধ হয়ে যায়। আচমকা রীতার আইনজীবীর থেকে ফোন পেয়ে অবাক হয়ে যান বিমল। তাঁকে জানানো হয় যে, রীতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, জামিনের জন্য এক লক্ষ টাকা দরকার। এই শুনে তো আকাশ ভেঙে পড়ে বিমলের মাথায়। তখনই তিনি খোঁজখবর শুরু করেন। জানা যায়, রীতার আসল নাম রীতা চৌহান। তাঁর স্বামীর নাম অনিল চৌহান। দুজনেই দামি গাড়ি চুরি-সহ একাধিক অপরাধে অভিযুক্ত। নাম-পরিচয় ভাঁড়িয়েই যে রীতা বিয়ে করেছে, তা বুঝতে আর বাকি থাকে না বিমলের। রীতার অপরাধের কথা নিশ্চিত করেছে গুয়াহাটি পুলিশও। একটি বিএমডব্লিউ চুরির কেসেই রীতাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
স্ত্রী-র এই পরিচয় জেনে তো রীতিমতো স্তম্ভিত বিমল। রীতার কাজকর্মের সঙ্গে তাঁর বিন্দুমাত্র যোগাযোগ নেই। অথচ স্বামী হওয়ার সুবাদে তিনিও পাকেচক্রে জড়িয়ে পড়েছেন এই সব কিছুর সঙ্গে। প্রশাসনের কাছে তাই তাঁর আরজি, রীতার সঙ্গে তাঁর বিয়েকে অবৈধ ঘোষণা করা হোক। দুঃস্বপ্নের বিয়ে থেকে বেরিয়ে আসতে আপাতত প্রশাসনের পদক্ষেপের অপেক্ষাতেই নিরুপায় বিমল।