স্বাদ বদল করতে প্রায়শই রেস্তোরাঁয় যান? পকেটের স্বাস্থ্য ভাল না হলে কিন্তু বেজায় সমস্যায় হতে পারে। এবার বাড়ছে রেস্তোরাঁয় খাবার খরচও। ইতিমধ্যেই বেঙ্গালুরুর একাধিক হোটেল ১০ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছে। নেপথ্যে ঠিক কী কারণ দেখিয়েছেন তাঁরা? আসুন শুনে নিই।
ছুটির দিন মানেই রেস্তোরাঁ যেতে হবে। এই অভ্যেস অনেকেরই রয়েছে। স্রেফ স্বাদবদল নয়, রোজকার রুটিনে একটু বদল আনতে প্রায়শই রেস্তোরাঁয় ঢুঁ মারেন কেউ কেউ। সেইসঙ্গে নতুন খাবার চেখে দেখা, কিংবা আয়েশ করে খাবার খাওয়ার আনন্দ তো রয়েছেই। কিন্তু এই সব কিছু করার আগে ভাবতে হবে পকেটের কথাও। কিছুদিন আগেও যে টাকায় গোটা পরিবারের নৈশভোজ হয়ে যেত, এবার মাত্র একজনের পেট ভরাতেও হয়তো সেই টাকা যথেষ্ট হবে না।
আরও শুনুন: নামে ‘ইন্ডিয়া’ অথচ জাতীয় স্বার্থ বোঝে না! জোট বিরোধীদের একহাত নিলেন জয়শংকর
সম্প্রতি বেঙ্গালুরুর হোটেল পরিচালন সমিতি এ প্রসঙ্গে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। সেখানকার প্রায় সমস্ত রেস্তোরাঁয় এক ধাক্কায় ১০ শতাংশ দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। বেশ কিছু রেস্তোরাঁ ইতিমধ্যেই নিজেদের প্রয়োজন মতো ৫-১০ শতাংশ হারে খাবারের দাম বাড়িয়েছিল। তবে সম্প্রতি পরিচালন সমিতি সামগ্রিকভাবে সেখানকার সমস্ত রেস্তোরাঁয় ১০ শতাংশ দাম বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে। তবে যেসব রেস্তোরাঁ আগে ভাগেই দাম বাড়িয়ে ফেলেছে, তাদের আর নতুন করে দাম বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়নি। চলতি বছরে, অগাস্টের শুরুতেই এই মূল্যবৃদ্ধি কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে পরিচালন সমিতি। এর নেপথ্যে তাদের যুক্তি, যে ভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে, সেখানে খাবারের দাম না বাড়িয়ে উপায় নেই। টম্যাটো, লঙ্কা থেকে শুরু করে অধিকাংশ সবজির দামই বর্তমানে আকাশছোঁয়া। তাই এত বেশি দাম দিয়ে সবজি কিনে, পুরোনো দাম অনুয়ায়ী খাবার বিক্রি করা রেস্তোরাঁগুলোর পক্ষে কোনওভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। শুধু তাই নয়, সবজির পাশাপাশি দাম বেড়েছে দুধেরও। তাই যেসব খাবারে দুধ বা দুগ্ধজাত উপকরণ ব্যবহার করা হয়, সেগুলির দামও বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। সবমিলিয়ে রেস্তোরাঁর সমস্ত খাবারেই ১০ শতাংশ হারে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
আরও শুনুন: ভিন জাতে বিয়ে করলে প্রাণহানির আশঙ্কা! রাজস্থানে যুগলদের সুরক্ষা দেবে পুলিশ
তবে এ সমস্যা স্রেফ বেঙ্গালুরুর নয়। মূল্যবৃদ্ধির চাপে হাঁসফাঁস করছে গোটে দেশ। কোথাও ২০০ টাকা কিলো দরে টম্যাটো বিক্রি হচ্ছে। তো কোথাও ৩৫০ টাকা কেজি আদা। লঙ্কা, পেয়াজ, আলুর দামও যথেষ্ট চড়া। হাতে গোনা কিছু মরশুমি সবজি বাদ দিলে প্রায় সব সবজির দামই যথেষ্ট বেশি। সেইসঙ্গে দুধ, ডিম, মাংস কিনতেও বেগ পাচ্ছেন মধ্যবিত্তরা। এই পরিস্থিতিতে রেস্তোরাঁয় খাবারের দাম বাড়া একেবারেই স্বাভাবিক বলে মনে করছেন অনেকেই। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, শীঘ্রই দেশের অন্যান্য প্রান্তে এই একইভাবে দাম বাড়াবে হোটেল, রেস্তোরাঁগুলি। তাই পকেটের স্বাস্থ্য জোরদার না হলে, ইচ্ছা হলেই স্বাদবদল করতে সমস্যা হবে অনেকেরই। বিশেষত মধ্যবিত্তদের পক্ষে এই বাজারদর সামলে রেস্তোরাঁ বিলাসিতা করতে যাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠতে পারে বলেই মনে করছেন কেউ কেউ। যদিও এমনটাও অনেকে মনে করছেন, মূল্যবৃদ্ধির সমস্যা খুব শীঘ্রই মিটে যেতে পারে। তবে সেক্ষেত্রেও রেস্তোরাঁর দাম বৃদ্ধি আটকানো যাবে কি না বলেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ।