বাড়িতে বসেই কাজের সুযোগ মিলবে। এই ভাবনাতেই সংস্থায় যোগ দিয়েছিলেন। বাস্তবে সেই সুবিধা দিয়েও এসেছে সংস্থা। কিন্তু আর না! নামজাদা এক কম্পিউটার নির্মান সংস্থা ঘোষণাই করে দিয়েছে, ওয়ার্ক ফ্রম হোম করলে মিলবে না কোনও প্রমোশন। ঠিক কী জানাচ্ছে ওই সংস্থা? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
অফিস নয়। কাজ করা যাবে বাড়িতে বসেই। করোনা অতিমারির পর গোটা বিশ্বে ছড়িয়েছিল এই ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোমের’ রেওয়াজ। কিছু সংস্থা পাকাপাকি ভাবে কর্মীদের সেই সুবিধা দিয়েওছিল। কিন্তু সেসব এখন অতীত। ফের অফিসে ফিরুক কর্মীরা, এমনটাই চাইছে নামজাদা কিছু আইটি সংস্থা। তার জন্য প্রমোশন আটকে যাওয়ার হুমকিও শুনতে হচ্ছে বাড়িতে বসা কাজ করা কর্মীদের।
আরও শুনুন: ভোটপ্রচারের কাজে শিশুদের ব্যবহার! কাঠগড়ায় কর্নাটকের স্কুল, কী বিধি কমিশনের?
আইটি সংস্থায় ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ প্রচলিত এক রেওয়াজ। বাড়ি কিংবা নিজের পছন্দের কোনও জায়গা থেকে স্রেফ কাজটুকু করে দিলেই হবে। এক্ষেত্রে দু রকমের নিয়ম চালু করেছিল অধিকাংশ আইটি সংস্থা। প্রথম নিয়ম অনুযায়ী, মাত্র ৩ দিন অফিস যেতে হত কর্মীদের। বাকি দিনগুলো বাড়িতেই কাজ। আর দ্বিতীয় নিয়মে রোজই বাড়িতে বসে কাজের সুযোগ মিলত। স্বাভাবিক ভাবে বেশিরভাগ কর্মীর প্রথম পছন্দ ছিল পাকাপাকি ভাবে বাড়িতে বসে কাজ করা। এতদিন সেই নিয়ে তেমন অসুবিধা ছিল না সংস্থারও। কিন্তু অতিমারি কেটেছে বহুদিন হল। নতুন করে অফিসে গিয়ে কাজের ক্ষেত্রে রোগ ছড়ানোর ভয় নেই বললেই চলে। তাই নামজাদা এক কম্পিউটার নির্মান সংস্থার দাবি ফের অফিসে ফিরুক কর্মীরা। সপ্তাহে নির্দিষ্ট কয়েকদিন নয়, রোজই অফিসে আসতে হবে কর্মীদের এমনটাই চাইছে ওই সংস্থা। এর জন্য রাতারাতি জারি হয়েছে নোটিশ। আর সেখানেই অদ্ভুত এক ‘হুমকি’র কথা লেখা রয়েছে। সংস্থার সাফ দাবি, ওয়ার্ক ফ্রম হোম করলে কোনও প্রোমোশন মিলবে না। এমনকি অন্যান্য কিছু সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হবেন ওই কর্মীরা।
আরও শুনুন: ঘর আলো করুক কন্যাসন্তান, দত্তকের নতুন ঝোঁক চেনাল সরকারি তথ্য
আর এতেই মাথায় হাত সংস্থার অধিকাংশ কর্মীদের। মনে হতে পারে, অফিস যাওয়ায় এতো সমস্যা কোথায়? আসলে সমস্যাটা অফিস যাওয়া নয়, দির্ঘদিনের অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসা। প্রায় সকলেরই দাবি, বাড়িতে একা একা কাজ করে এমন অভ্যাস তৈরি হয়েছে, কারও সামনে বসে কাজ করতে বেশ অস্বস্তিতে পড়বেন তাঁরা। মহিলারা তো বটেই, পুরুষ কর্মীরাও এই অভিযোগ তুলেছেন। এমনকি একই টিমে কাজ করেছেন এতদিন এমন মানুষজনের সঙ্গেও সামনাসামনি বসে কাজ করতে স্বচ্ছন্দ নন প্রায় কেউই। এখানেই শেষ নয়। এমন অনেকেই রয়েছেন যাঁদের বাড়ি অন্য রাজ্যে। সেই শহরে সংস্থার দপ্তর নেই। তাই কাজের জন্য নিজের বাড়ি ছেড়ে এতদূরে এসে থাকাও প্রায় অসম্ভব বলে মনে করেছেন অনেকেই। তাই এই নিয়মের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তাঁরা। এদিকে, সংস্থা কাউকে বলেনি কাজ ছেড়ে দেওয়ার কথা। এমনকি ওয়ার্ক ফ্রম হোম করা যাবে না এই কথাও বলেনি। কিন্তু যে নিয়ম তৈরি করেছে তা এর থেকেও ভয়ঙ্কর তা বলাই বাহুল্য!