হাড়কাঁপানো শীতের পর এবার প্রচণ্ড গরমের আশঙ্কা দেশে। মার্কিন সংস্থার প্রতিবেদনে চিন্তা উসকে উঠল আরও। ভারতে ফের আসতে পারে এল নিনো, এই মর্মে দেশকে সতর্ক করেছে ওই সংস্থাটি। এমনিতেই গরম দেশ ভারত। এবার কি আরও তীব্রতা বাড়াবে তাপমাত্রা? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
কথায় বলে, মাঘের শীত বাঘের গায়ে। অর্থাৎ এই মাসে এমনই হাড়কাঁপানো ঠান্ডা পড়ার কথা যে তা থেকে মানুষ তো দূর, বাঘেরও রেহাই মিলবে না। কিন্তু কোথায় কী! চলতি বছরে পৌষ হোক কি মাঘ, শীতের কামড় যেন সেভাবে টেরই পেলেন না গড় বঙ্গবাসী। তবে গোটা ভারতের ছবিটা কিন্তু একরকম ছিল না। অনেক জায়গাতেই আবার শীত পড়েছে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। যার সঙ্গে তাল মেলাতে হিমশিম খেয়েছেন সাধারণ মানুষ। বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে আবহাওয়ার এহেন মুড স্যুইং-এর সঙ্গে এখন সড়গড় আমরা। তবে সেই শীতের মরশুম কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবহাওয়া নিয়ে নয়া আশঙ্কার খবর শুনল দেশ। জানা গিয়েছে, ভারতে এবার ফিরে আসতে পারে এল নিনো। আর তার জেরে গোটা দেশের তাপমাত্রায় যে বড় পরিবর্তন হতে পারে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
আরও শুনুন: বিশ্বে ক্রমশ ঘনাচ্ছে সংকট! ফেব্রুয়ারিতেই চাকরি হারিয়েছেন ১৭,৪০০ প্রযুক্তি-কর্মী
সম্প্রতি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে আমেরিকার ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ওরফে নোয়া। তাদের দাবি, জুন, জুলাই এবং আগস্ট মাসে দেশে তৈরি হতে পারে এহেন পরিস্থিতি। তার ৫০ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট সংস্থা। এমনকি জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে সেই সম্ভাবনা ৫৮ শতাংশ হয়ে যাবে বলেও দাবি করেছে সংস্থাটি। আর এই দাবির জেরেই আপাতত সিঁদুরে মেঘ দেখছে দেশ।
ঠিক কী এই এল নিনো?
আরও শুনুন: পৃষ্ঠপোষক আদানি গোষ্ঠী, জানা মাত্রই সাহিত্য সম্মান প্রত্যাখান মহিলা দলিত কবির
আক্ষরিক অর্থে এল নিনো মানে ছোট্ট ছেলে। স্প্যানিশ ভাষায় বলা হয় ছোট্ট যিশু। ১৬০০ সালে দক্ষিণ আমেরিকার মৎস্যজীবীরা প্রথম প্রশান্ত মহাসাগরে এই আবহাওয়ার পরিবর্তনের বিষয়টি নজরে আনেন। বায়োস্ফিয়ারের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার জেরে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়। এল নিনোর প্রভাবে গড় বৃষ্টিপাতের তুলনায় বেশি বৃষ্টি হতে শুরু করে। আবার ঘটতে পারে তার বিপরীত ঘটনাও। নেমে আসতে পারে খরা। এমনিতেই নাসা জানিয়েছিল, উনিশ শতকের শেষ দিকে এই পৃথিবী যতটা উষ্ণ ছিল তার তুলনায় ২০২২ সালে পৃথিবীর তাপমাত্রা প্রায় ১.১ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বেশি। এই পরিস্থিতিতে এল নিনো তৈরি হলে উষ্ণতা যে মাত্রা ছাড়াবে তা বলাই বাহুল্য। গত বছরেই দেশের অন্তত নটি শহরে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়ে ফেলেছিল। শোনা গিয়েছিল হিট ওয়েভ-এর আশঙ্কার কথাও। আর চলতি বছর শুরু না হতেই ফের সেই আশঙ্কা উসকে দিল মার্কিন পরিবেশ সংস্থার রিপোর্ট।