প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিপুল প্রশংসা করার খেসারত দিতে হল ব্যক্তিকে। গাড়ির চাকায় পিষে দেওয়া হল তাঁকে। ঘটনাচক্রে ওই ব্যক্তি হিন্দু, আর ঘাতক গাড়িটির চালক মুসলিম। ফলে ঘটনায় উসকে উঠেছে সাম্প্রদায়িক বিতর্কও। শুনে নেওয়া যাক।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশংসা করায় এক যাত্রীকে খুনের অভিযোগ উঠল ট্যাক্সিচালকের বিরুদ্ধে। যোগীরাজ্যের এই ঘটনার জেরে রাজনৈতিক শোরগোলের পাশাপাশি উসকে উঠেছে সাম্প্রদায়িক বিতর্কও। জানা গিয়েছে, নিহত ব্যক্তি হিন্দু, নাম রাজেশ দুবে। আর ঘাতক গাড়িটির চালক ধর্মে মুসলিম, নাম আমজাদ। উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরে ঘটেছে এই ঘটনা।
আরও শুনুন: ‘স্ত্রীর কাছে হারলে নিশ্চয়ই খারাপ লাগবে না?’ রসিকতা খোদ প্রধানমন্ত্রীর
কী ঘটেছে ঠিক? পুলিশ সূত্রে খবর, বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফিরছিলেন রাজেশ। বাড়ি ফেরার জন্য একটি ট্যাক্সিতে উঠেছিলেন তিনি। ওই ট্যাক্সিতে ছিলেন ধীরেন্দ্র প্রতাপ নামে আরও এক যাত্রী। পথে কথায় কথায় রাজনৈতিক আলোচনা শুরু হয় ট্যাক্সিচালক এবং রাজেশের মধ্যে। কিন্তু এক কথা দু কথায় সেই আলোচনা গড়ায় বিতর্কের দিকে। দুজনের আলোচনায় উঠে আসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের প্রসঙ্গ। দেখা যায়, দুই হেভিওয়েট নেতার প্রতিই তীব্র ক্ষোভ রয়েছে মুসলিম চালকের। মোদি ও যোগীর সম্পর্কে কটূক্তি করে বসেন তিনি। যা আবার মেনে নিতে পারেননি ওই যাত্রী। সে কথার পালটা দেন তিনিও। একইসঙ্গে মোদি ও যোগীর সমর্থনেই সুর চড়ান রাজেশ। সব মিলিয়ে উত্তপ্ত বাদানুবাদ শুরু হয় দুজনের মধ্যে। এই অবস্থায় তাঁদের থামানোর চেষ্টা করেন গাড়ির অন্য যাত্রী। তিনি জানিয়েছেন, সেই সময়ে আপাতত বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে গিয়েছিল।
কিন্তু আদতে যে দ্বন্দ্ব মেটেনি, তার প্রমাণ মেলে এরপরেই। ধীরেন্দ্র নামের অন্য যাত্রীকে তাঁর গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দেওয়ার পর রাজেশকে পৌঁছে দিতে যান আমজাদ। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁকে বাড়ির সামনে না নামিয়ে কিছু দূরে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দেন ট্যাক্সিচালক। সেখান থেকে হেঁটে ফিরছিলেন রাজেশ। সেই সময় পিছন দিক থেকে তাঁকে গাড়িচাপা দিয়ে পালিয়ে যান আমজাদ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় রাজেশের।
আরও শুনুন: গোমাংস খাওয়ার বিরোধিতা! মুসলিমদের নিরামিষ খাওয়ার পরামর্শ খোদ মুসলিম আধিকারিকের
ঘটনার প্রতিবাদে রাজেশের দেহ নিয়েই মির্জাপুর-প্রয়াগরাজ হাইওয়ে অবরোধ করেছিলেন তাঁর পরিবার ও গ্রামের লোকজন। তাঁদের দ্রুত তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হবে বলেও জানিয়েছেন আধিকারিকেরা। যদিও অভিযুক্ত আমজাদ এখনও পর্যন্ত ফেরার। তাঁর খোঁজে এলাকা জুড়ে তল্লাশি চালাচ্ছে যোগীরাজ্যের পুলিশ।