ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে লাউডস্পিকারে গান চালিয়ে, তার সঙ্গে নাচ জুড়েছেন একদল ছাত্রী। আনন্দে নয়, প্রতিবাদে। শব্দের ঠেলায় অতিষ্ঠ হয়ে শব্দেই জব্দ করতে চেয়েছেন তাঁরা।
শব্দেই জব্দ! শব্দ শুনে শুনে কান ঝালাপালা, এদিকে প্রতিবাদের শব্দ যেন কর্তৃপক্ষের কান অব্দিই পৌঁছয় না। তাই কর্তৃপক্ষ যাতে এ বিষয়ে কর্ণপাত করতে বাধ্য হন, সেই লক্ষ্যে শব্দকেই পালটা হাতিয়ার করলেন বাংলাদেশের ছাত্রীরা। বিষয়টা ঠিক কী? তাহলে আসুন, শুনেই নেওয়া যাক।
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে লাউডস্পিকারে গান চালিয়ে, তার সঙ্গে নাচ জুড়েছিলেন একদল ছাত্রী। হুল্লোড়ে গানের সঙ্গে উদ্দাম নাচের সে ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যা দেখে মনে হতে পারে যে কোনও আনন্দের উদযাপন হিসেবেই বোধহয় এই নাচের আসর। তবে শোনা গিয়েছে, আদতে এই ঘটনা কোনও আনন্দের বহিঃপ্রকাশ নয়। বরং প্রতিবাদের মাধ্যম। হ্যাঁ, প্রতিবাদ করতেই এই পথ বেছে নিয়েছেন ওই ছাত্রীরা। আসলে তীব্র শব্দের জোয়ারে গার্লস হোস্টেলের ছাত্রীরা রীতিমতো অসুবিধায় পড়েন। তাঁদের হোস্টেল লাগোয়া এলাকায় এই শব্দদূষণ একেবারে নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। এ নিয়ে উপাচার্যের কাছে বারবার নালিশ জানিয়ে, প্রতিবাদ করেও কোনও লাভ হয়নি। রোকেয়া হলের আবাসিকরা জানাচ্ছেন, টিএসসিতে অনেক রাত পর্যন্ত বিভিন্ন কনসার্ট হয়। আওয়াজের চোটে পড়াশোনা করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই টিএসসি এবং রাজু ভাস্কর্য এলাকায় মাইকে উচ্চ শব্দ নিষিদ্ধ করার দাবিতে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপিও জমা দিয়েছেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সে কথায় কান দেননি। আর তাই, তাঁরা যাতে এ বিষয়ে কর্ণপাত করেন, সেই লক্ষ্যেই শব্দের জোর বাড়িয়েছেন ওই ছাত্রীরা। মুখের কথার বদলে লাউডস্পিকারের জোরালো গানই হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁদের প্রতিবাদ।
আরও শুনুন: নালিশ শুনছে না প্রশাসন, অভিযোগের মালা গলায় পরেই বেনজির প্রতিবাদ ব্যক্তির
মজার কথা হল, বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যতই ভারতবিদ্বেষের আঁচ উসকে উঠুক, এই ছাত্রীরা যে গান চালিয়েছেন, তা কিন্তু এ দেশের একটি হিন্দি গান। হরিয়ানা থেকে বিগ বসে অংশ নেওয়া শিল্পী স্বপ্না চৌধুরির হিট গান ‘তেরি আঁখিয়া কা যো কাজল’ গানেই নেচেছেন তাঁরা। প্রতিবাদের ধরনে তো বটেই, তাঁদের এই গান নির্বাচন দেখেও মজাই পেয়েছেন এ দেশের নেটিজেনেরা।