এক ধর্মের প্রতি বিশ্বাস রেখেও যে অন্য ধর্মকে তার প্রাপ্য সম্মানটুকু দেওয়া চলে, সম্প্রতি মুম্বই শহরের এক গণেশ পূজার ক্ষেত্রে তারই প্রমাণ রাখলেন ভক্তরা। কী ঘটেছে ঠিক? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
ধর্মের দিক দিয়ে বিচার করলে তাঁরা আলাদা সম্প্রদায়ের মানুষ। অথচ একই এলাকার অধিবাসী তাঁরা। কথাও বলেন একই ভাষায়। তাই, কেবল ধর্ম যাতে তাঁদের পৃথক করতে না পারে, সে দিকেও খেয়াল রেখেছেন তাঁরা। সম্প্রতি নিজেদের কাজের মধ্যে দিয়ে সে কথাই প্রমাণ করলেন মুম্বই শহরের একটি অঞ্চলের মানুষেরা।
আরও শুনুন: ইসলামি ছোঁয়ায় আপত্তি! যোগীরাজ্যের ওয়ার্ডে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নামও বাতিলের সুপারিশ
গণেশ পূজার শেষে, ঠাকুর বিসর্জনের শোভাযাত্রা নিয়ে বেরিয়েছিল মুম্বই শহরের একটি পূজা কমিটি। শোভাযাত্রার যাওয়ার পথেই পড়ে একটি মসজিদ। মালাড অঞ্চলের সেই মসজিদের সামনে এসেই দাঁড়িয়ে পড়ে ওই শোভাযাত্রা। না, কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি সেখানে। কেউ কোনওভাবেই শোভাযাত্রা রুখে দেয়নি। কোনও নির্দেশ বা অনুরোধেরও বালাই ছিল না। এ সিদ্ধান্ত একান্তভাবেই ওই শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া ভক্তদেরই। তাঁরাই ওই মসজিদটির সামনে শোভাযাত্রা থামিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এমনকি ওই সময়ে শোভাযাত্রায় যে ভজন চলছিল, তাও থামিয়ে দেন তাঁরা। পরিবর্তে সেখানে বেজে ওঠে কাওয়ালি গান, ভর দো ঝোলি মেরি ইয়া মুহম্মদ। স্পষ্টতই, মসজিদের সামনে এসে ইসলাম ধর্মকে সম্মান জানাবার উদ্দেশ্যেই এহেন আচরণ করেছেন ওই ভক্তরা। আর এভাবেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অভিনব নজিরও সকলের সামনে তুলে ধরেছেন তাঁরা।
আরও শুনুন: মুসলিম ডেলিভারি বয়ের হাত থেকে খাবার নিতে নারাজ ব্যক্তি, বিদ্বেষের প্রতিবাদে সরব মহুয়া
এক ধর্মের নামে আরেক ধর্মের মানুষের প্রতি বিদ্বেষ উসকে দেওয়ার খেলা জারি রাখে কেউ কেউ। দেশ জুড়েই শুধু নয়, গোটা পৃথিবী জুড়েই মাঝে মাঝে অসহিষ্ণুতা ছড়িয়ে দেয় ধর্মীয় হিংসা। সম্প্রতি গণেশ পূজার মরশুমেও এ দেশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল তেমন ঘটনা। কর্ণাটকে ইদগাহ ময়দানে গণেশ পুজো করার ইস্যুতে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছিল হিন্দুত্ববাদী সংগঠন এবং ওই ময়দানের ওয়াকফ বোর্ড। এদিকে এই বিতর্কের আবহেই একেবারে উলটো ছবি তুলে ধরল মুম্বই শহরের এই ঘটনাটি।