প্রধানমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে চাঁদের হাট বসেছিল রাষ্ট্রপতি ভবনে। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান সহ, নামীদামী তারকারা উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে। ছিল এক চারপেয়ে জন্তুও! ক্যামেরায় আবছাভাবে যার ছবি দেখে অনেকেই ভেবেছিলেন, এ নির্ঘাত চিতা কিংবা বিগ ক্যাট ফ্যামিলির কেউ! আসলে কী? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন মোদি। ভোটের ফল ঘোষণার কয়েকদিনের মধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেই শপথ বাক্য পাঠ করেছেন বিজেপি-সহ এনডিএ জোটের অন্যান্য নেতারা। অনুষ্ঠানের মাঝেই ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল, এক জন্তুর অবয়ব। যার পরিচয় জানতে নেটদুনিয়ায় বেজায় শোরগোল পড়ে।
আরও শুনুন: ধর্ম নয়, সংস্কার! বাদ পড়লেন ৩৭ জন, খামতি ঢেকে এবার উন্নয়নেই মন সরকারের
গত ৯ জুন রাষ্ট্রপতি ভবনে শপথ নিয়েছেন মোদি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ৭ দেশের প্রধান। সেইসঙ্গে আরও একাধিক গণ্যমান্য অতিথি। একদিকে যেমন ছিলেন আদানি-আম্বানির মতো ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে তেমনই শাহ্রুখ-অক্ষয়ের মতো তারকাও উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে। যদিও মধ্যমণি ছিলেন খোদ মোদিই। নীলসাদা পোশাকে তৃতীয়বার শপথগ্রহণ করে নেহেরুকে ছুঁয়ে ফেললেন মোদি। একইসঙ্গে চমক হিসেবে মঞ্চে ছিলেন একাধিক নতুন মুখ। এনডিএ জোটের শরিকরাও মন্ত্রিত্ব পেয়েছেন। গোটা অনুষ্ঠান ভরা ছিল আলোর রোশনাই-এ। নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও কোনও খামতি ছিল না। একে তো রাষ্ট্রপতি ভবনের অন্দরমহল, তার ওপর ক্যাবিনেটের শপথগ্রহণের মতো অনুষ্ঠান। অনুমতি ছাড়া একটি মাছিও গলার উপায় ছিল না।
আরও শুনুন: ভোট যুদ্ধ নয়, সমাজে বিভেদও বাড়িয়েছে! ভাগবতের সমালোচনায় বদলাবে ভোটের হাওয়া?
প্রথমদিকে সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল। একের পর এক মন্ত্রীকে শপথ পাঠ করাচ্ছিলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। একসময় মঞ্চে এলেন বিজেপি সাংসদ দুর্গাদাস উই। অন্যদের মতো তাঁকেও শপথ পাঠ করানো শুরু করেছেন রাষ্ট্রপতি মুর্মু। অনুষ্ঠানের সরাসরি সম্প্রচার চলছিল। সেখানে শুধুমাত্র মন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতিকে না দেখিয়ে, অনুষ্ঠানের ইতিউতি দেখানো চলছিল। এমন সময় দেখা যায় রাষ্ট্রপতি ভবনের সিঁড়ির সামনে দিয়ে এক চারপেয়ে জন্তু হেটে যাচ্ছে। সম্প্রচার অনুষ্ঠানে কেউই সেভাবে লক্ষ করেনি সেই জন্তুকে। উপস্থিত অতিথিরাও নন। কিন্তু নেটিজেনদের অনেকেই এই ধরনের ঘটনার অপেক্ষায় থাকেন সবসময়। তাই তাঁরা এই সুযোগ হাতছাড়া করেননি। শপথ অনুষ্ঠান শেষ হতে না হতেই ওই জন্তুর চলাফেরার ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায় নেট্মহলে। ব্যস, আর কী চাই! সকলেই বিভিন্ন মন্তব্য করতে শুরু করে দেন। কেউ বলেন, ওই জন্তু আসলে চিতাবাঘ। কেউ আবার জন্তুটিকে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের তকমা দিয়ে ফেলেন। এর মাঝে বুদ্ধিজীবীরা প্রশ্ন তোলেন, এমন ভয়ঙ্কর জন্তু রাষ্ট্রপতি ভবনে এল কোত্থেকে? শুধু তাই নয়, কোনওভাবে ওই জন্তু আক্রমণ করলে কী হত, সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করে। সবমিলিয়ে বিষয়টা বেশ জটিল জায়গায় পৌঁছয়। বাধ্য হয়েই মাঠে নামতে হয় প্রশাসনকে। আসলে, ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নিরাপত্তায় গাফিলতির দিকেই আঙুল উঠছিল। সেই বিভ্রান্তি দূর করতেই বিষয়টা পরিষ্কার করে সকলকে জানিয়ে দেয় মুম্বই পুলিশ। তাঁদের দাবি, এই জন্তু কোনওভাবেই বাঘ বা হিংস্র প্রজাতির নয়। বরং সাধারন এক বিড়াল। এ দেশে রাস্তাঘাটে এমন বিড়ালের দেখা পাওয়া খুবই স্বাভাবিক। তাই রাষ্ট্রপতি ভবনে এমন কিছু থাকায় কোনও অস্বাভাবিকতা দেখছেন না পুলিশ কর্তারা। তবু নেটদুনিয়ায় এখনও এই জন্তুটিকে নিয়ে উত্তেজনা কমেনি বললেই চলে।