বেকারত্বের জেরে ক্রমশ বাড়ছে দেশে আত্মহত্যার সংখ্যা। ২০২১ সালে গোটা দেশের মোট আত্মহত্যার পরিসংখ্যান বিচার করে সে কথাই জানাচ্ছে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো-র সাম্প্রতিক রিপোর্ট। কোন কোন শহরের পরিস্থিতি সবচেয়ে আশঙ্কাজনক? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
বেকারত্বের জেরে দেশের অবস্থা ক্রমেই টালমাটাল। কাজের খোঁজে নিজেদের ভিটেমাটি ছেড়ে গ্রাম থেকে শহরে, কিংবা শহর থেকে অন্য কোনও শহরের পথে, এমনকি অন্য কোনও দেশেও নিয়ত অভিবাসন চলছে। তবুও কাজ না পাওয়া, অথবা কাজ হারানোর অভিশাপ লেগেই রয়েছে। বিগত দু’বছরের করোনা পরিস্থিতি আরও খানিক প্রভাব ফেলেছে এই দশায়। যার জেরে একাধিক কর্মহীন মানুষ বাধ্যত আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। ২০২১ সালে গোটা দেশের মোট আত্মহত্যার পরিসংখ্যান বিচার করে সম্প্রতি সে কথাই জানাল ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো-র রিপোর্ট। এমনিতেই প্রতি বছরে সারা দেশে এক লাখের চেয়েও বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে এনসিআরবি। এবার জানা গেল, সরকারি হিসেবে এই এক বছরেই বেকারত্বের কারণে দেশ জুড়ে ১০১২টি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। আরও আশঙ্কার কথা হল, এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরুর মতো মহানগরগুলি, যেখানে কাজের সংস্থান অনেক বেশি বলেই মনে করা হয়।
আরও শুনুন: বন্ধু যদি ধনী হয় ভবিষ্যতে বাড়ে রোজগারের মাত্রা, চমকপ্রদ তথ্য উঠে এল সমীক্ষায়
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এক বছরে দেশ জুড়ে ঘটা আত্মহত্যার ঘটনাগুলির মধ্যে ৪০ শতাংশই ঘটেছে রাজধানী দিল্লি এবং বাণিজ্যনগরী মুম্বই শহরে। এর মধ্যে দিল্লিতে ঘটেছে ২৮৩টি আত্মহত্যা, মুম্বইয়ে ১৫৬টি, চেন্নাইতে ১১১টি এবং বেঙ্গালুরুতে ৯৬টি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। যারা এই পথ বেছে নিয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশেরই বয়স ১৮ থেকে ৩০-এর মধ্যে বলেই জানিয়েছে ওই রিপোর্ট। এ ছাড়াও পুনেতে ৭৯টি এবং বেঙ্গালুরুতে আরও ৭৪টি আত্মহত্যা ঘটেছে, জীবিকাগত অনিশ্চয়তার কারণেই।
আরও শুনুন: রোজ পর্যাপ্ত খাবার জোটাতেই হিমশিম খান দেশের ৭১ শতাংশ মানুষ, জানাল সমীক্ষা
এই রিপোর্ট মোতাবেক এ কথা স্পষ্ট, কাজ পাওয়ার আশায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যেসব শহরে পাড়ি দেয় মানুষ, সেইসব শহরগুলিই কারও কারও কাছে দুঃস্বপ্নের মতো। কারণ সেই স্বপ্ননগরীতেও এসেও জীবনে ভালভাবে বাঁচার স্বপ্নটা অধরাই থেকে গিয়েছে তাদের কাছে। রুটিরুজি জোটাতেই হিমশিম খেতে হয়েছে তাদের। আর এদেরই কেউ কেউ হতাশার সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে হেরে গিয়েছে একদিন। নিজের হাতেই শেষ করে দিয়েছে নিজেকে। বস্তুত দেশের কর্মসংস্থানের সামগ্রিক চেহারাটিকেই তুলে ধরেছে এই রিপোর্ট, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের।