উত্তরপত্রে কেবলমাত্র একটি বানান ভুল লিখেছিল এক দলিত ছাত্র। আর সেই অপরাধেই জুটল চরম প্রহার। ‘উচ্চবর্ণের’ শিক্ষকের সেই বেধড়ক মারের দরুনই শেষ পর্যন্ত মৃত্যু হল তার। ঘটনার জেরে বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে যোগীরাজ্যে। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
সম্প্রতি এক বছর ১৫-র দলিত ছাত্রের মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে যোগীরাজ্যে। অভিযোগ, বিদ্যালয়ের এক উচ্চবর্ণের শিক্ষকের হাতে বেধড়ক মার খাওয়ার জেরেই ঘটেছে এহেন কাণ্ড। পরীক্ষার উত্তরে একটি মাত্র বানান ভুল করার অপরাধেই নাকি এমন ভয়ানক শাস্তি পেতে হয়েছে তাকে। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।
আরও শুনুন: ৩০০ পুরুষের সঙ্গে ৩০০ ভঙ্গিতে যৌনতার রেকর্ড! পর্ন তারকার যুগ শেষ বলে দাবি করলেন সেই অভিনেত্রীই
ঘটনার কেন্দ্র উত্তরপ্রদেশের আউরাইরা জেলা। সেখানকার স্থানীয় একটি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল নিখিত কুমার নামের ওই কিশোর। কিছুদিন আগে স্কুলের সমাজবিজ্ঞানের পরীক্ষায় সে ‘সামাজিক’ বানানটি ভুল করে ‘সামাজক’ লিখে ফেলে। আর এহেন ভুল দেখেই বেজায় চটে যান সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক অশ্বিনী কুমার। রীতিমতো চুলের মুঠি ধরে তাকে বেধড়ক মারধর করেন ওই শিক্ষক। মারের চোটে সংজ্ঞা হারায় ওই পড়ুয়া। শেষ পর্যন্ত হাসপাতালেও নিয়ে যেতে হয়েছিল তাকে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর জানা যায়, অত্যধিক মারের ফলে তার শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরপরই ওই ছাত্রের পরিবার স্কুলে গিয়ে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করে। চাপের মুখে পড়ে ছাত্রটির চিকিৎসার খরচ বহন করতেও রাজি হন ওই শিক্ষক। সেই হিসেবে দুটি কিস্তিতে ছাত্রটির বাবার হাতে নগদ ৪০ হাজার টাকাও তুলে দেন তিনি। কিন্তু এরপর আর কোনও টাকা দেওয়া দূরে থাক, দলিত পরিবারটিকে রীতিমতো জাত তুলে অপমান করে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন ওই শিক্ষক, এমনটাই অভিযোগ করেছে নিহত কিশোরের পরিবার। টাকার অভাবে যথাযথ চিকিৎসা না পেয়েই প্রাণ হারিয়েছে ওই কিশোর, এই মর্মে বিক্ষোভে সরব হয়েছে তার পরিবার।
আরও শুনুন: ‘কৃপাণ’ রাখার অপরাধে গ্রেপ্তার শিখ পড়ুয়া, ক্ষোভ প্রকাশ নেটিজেনদের
কিশোরের মৃত্যুর পর ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দারাও। কিশোরের মৃতদেহ স্কুলের বাইরে রেখে স্লোগান দিতে শুরু করেন তাঁরা। পথ অবরোধ করে শুরু হয় বিক্ষোভ। ক্রমেই তা হিংসাত্মক চেহারা নেয়। পুলিশের গাড়িতেও আগুন জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। এমনকি পুলিশের উপর পাথর ছোঁড়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। অভিযুক্ত শিক্ষককে অবিলম্বে গ্রেফতার করার দাবি জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে কিশোরের দেহ গ্রামে নিয়ে গিয়ে শেষকৃত্যে সম্মত হয় পরিবার। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে অভিযুক্তকে এখনও ধরা যায়নি বলেই খবর।