বিয়েবাড়ির আনাচে কানাচে দাঁড়িয়ে রয়েছে পুলিশ। এক দুজন নয়, প্রায় ৬০ জন পুলিশকর্মী ছড়িয়ে আছেন বিয়ের আসরে। এভাবেই বিয়ে হল এক দলিত কন্যার। কিন্তু এত পুলিশ থাকার কারণ কী? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
কনের আবদার মেটাতে বিয়েতে হাজির পুলিশ। তাও একসঙ্গে ৬০ জন! না, এখানে পাত্রী কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের মেয়ে নন। কিংবা তিনি নিজেও কোনও সেলেব্রিটি নন। তবু তাঁর বিয়েতে এমন কড়া পাহারার ব্যবস্থা করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
আরও শুনুন: নিয়মের রক্তচক্ষু, তবু খোলামেলা পোশাকেই কাতার কাঁপাচ্ছেন ক্রোয়েশিয়ার সুন্দরী
ব্যাপারটা আসলে কী?
সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের সম্বল জেলার লোহামাই গ্রামে এমনই দৃশ্য ধরা পড়েছে। গ্রামের এক দলিত কন্যা রবিনার বিয়েতে একসঙ্গে ৬০ জন পুলিশকর্মী উপস্থিত ছিলেন। উদ্দেশ্য সুষ্ঠু ভাবে বিবাহ সম্পন্ন করানো। আসলে ওই গ্রামের কিছু তথাকথিত উচ্চবর্ণের মানুষ দলিতদের জন্য বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করেছিলেন। বিশেষত দলিত পরিবারের কোনও অনুষ্ঠানের সময় বিভিন্ন অসুবিধার সৃষ্টি করতেন তাঁরা। সেই অভিযোগ নিয়েই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিল রবিনার পরিবার। তাঁদের অনুরোধেই এই দলিত কন্যার বিয়েতে উপস্থিত ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। ফলত বিয়ের অনুষ্ঠানে কোনও সমস্যায় পড়তে হয়নি ওই পরিবারটিকে। রীতিমতো দায়িত্ব নিয়েই রবিনার বিয়ে দেন ওই পুলিশকর্মীরা।
আরও শুনুন: লটারিতে স্বামী জিতেছেন ১.৩ কোটি, টাকা নিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে ঘর বাঁধতে চললেন স্ত্রী
প্রথমে দুই দলে ভাগ হয়ে যান পুলিশ কর্মীর। একদল ছিলেন বরপক্ষের সঙ্গে। আর অন্যদল ছিল মেয়ের বাড়িতে। প্রথম দলটিতে ছিলেন সম্বল থানার ৪ জন পুলিশ কনস্টেবল, ১৪ জন সাব-ইনস্পেক্টর, ১ জন ইনস্পেক্টর এবং ১ জন সার্কেল অফিসার। তাঁরাই ঘোড়ায় চাপিয়ে বরকে বিবাহের মঞ্চে নিয়ে আসেন। তারপর নিয়মমাফিক বিয়ের বাকি অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। পুলিশ সুত্রে বলা হয়েছে, কিছুদিন আগে রবিনার পরিবার এই গ্রামের উচ্চবর্ণ প্রবর্তিত নিয়মগুলি নিয়ে অভিযোগ করতে থানায় আসেন। সেই নিয়ম অনুযায়ী দলিতদের বিয়েতে নাকি কোনও ধূমধাম করা যাবে না। এমনকি দলিত পরিবারের বিয়েতে মিছিল করে বর নিয়ে যাওয়াতেও নিষেধাজ্ঞা ছিল। পুলিশের কাছে সেই পরিস্থিতি বদলানোর অনুরোধই করেছিল ওই পরিবার। তাঁদের অনুরোধের ভিত্তিতেই এদিন সংশ্লিষ্ট গ্রামে বিশাল পুলিশবাহিনী পাঠান সম্বল থানার এসপি চক্রেশ মিশ্র। তাঁদের উপস্থিতিতে বিয়ের অনুষ্ঠানে কোনও সমস্যা হয়নি। বিয়ের পর আশীর্বাদ হিসেবে বর-কনেকে চাঁদা তুলে ১১ হাজার টাকা উপহারও দিয়েছেন সম্বল থানার ওই পুলিশকর্মীরা।