আসন্ন লোকসভায় কংগ্রেসের হয়ে প্রচারে নামছেন গান্ধী-নেহরু। সবটাই AI-র কারসাজি। জানা যাচ্ছে, মোদী সরকারের নানা অভিযোগের পালটা প্রশ্ন তুলবেন দুই দেশনায়ক। কিন্তু এত কিছু করেও কী বিজেপির আক্রমণ ঠেকাতে পারবে হাত শিবির? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
শিয়রে নির্বাচন। কুর্সি দখলের লড়াইয়ে ব্যস্ত রাজনৈতিক নেতারা। সরকার পক্ষ হোক বা বিরোধী, প্রচারে অভিনবত্ব আনতে চাইছেন সকলেই। তবে আসন্ন নির্বাচনে যে অভিনবত্বের দিকে ঝোঁক প্রায় সমস্ত দলেরই, তা হল AI। ইতিমধ্যেই বিজেপি কিংবা বাম শিবির AI এর সাহায্যে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছে। এবার সেই তালিকায় নাম লেখাল কংগ্রেস। AI-র সাহায্যে মহাত্মা গান্ধী এবং জওহরলাল নেহরুকে হাজির করছে হাত শিবির।
নির্বাচন মানেই নিজের কথা প্রচার। বলা ভালো নিজের দলের কথা। সেইসঙ্গে চলে অন্য দলকেই নিশানা করে নানা মন্তব্য। আসন্ন নির্বাচনেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই পরিবারতন্ত্রের অভিযোগে সরব হচ্ছে বিজেপি। প্রচার সভায় কংগ্রেস প্রসঙ্গ উঠলে ছেড়ে কথা বলছেন না মোদী থেকে নাড্ডা কেউই। পালটা জবাব দিচ্ছেন কংগ্রেস নেতারাও। সেই নিয়ে দানা বাঁধছে বিতর্ক। তবে লাভের লাভ হচ্ছে না বললেই চলে। রাজনৈতিক মহলের দাবি, বিজেপির আক্রমণ ঠেকাতে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে হাত শিবির। এই সমস্যা মেটাতেই এবার AI-র দ্বারস্থ হচ্ছেন রাহুলরা। মাঠে নামছেন গান্ধী এবং নেহরু। আসলে, তাঁদের মতাদর্শ এবং চিন্তাধারাকে সকলের সামনে নতুন করে তুলে ধরতেই এই ব্যবস্থা।। সেইসঙ্গে বিজেপি শিবিরের আনা অভিযোগের জবাব দেওয়া। এ যুগে গান্ধী-নেহরু বেঁচে থাকলে ঠিক কীভাবে মোদীর বাক্যবাণ সামলাতেন সেটাই দেখাতে চলেছে কংগ্রেস। বিশেষ অভিযানের নামও দেওয়া হয়েছে সেভাবেই। শুধু তাই নয়, কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আনা বিভিন্ন অভিযোগের সওয়াল করার পাশাপাশি, মোদী সরকারের কর্মপদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন তুলবে গান্ধী-নেহরুর AI অবতার। ঠিক কতটা এগিয়েছে দেশ সেই খতিয়ান চাওয়া হবে ওইভাবে। এছাড়া ক্ষমতায় আসার আগে এবং পরে বিজেপি সরকার যা কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সেসব কতটা রাখা হয়েছে সেই হিসাব চাইবে হাত শিবির। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এতকিছু পরিকল্পনা ঠিক কতটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে?
এমনিতে ভোটের আগে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে নানা কথা বলেই থাকেন হাত নেতারা। সেখানে গান্ধী-নেহরুর মতাদর্শ টেনেও বিভিন্ন মন্তব্য করা হয়। নতুন AI অবতারেও হয়তো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সেই কথাই বলানো হবে। সেক্ষেত্রে বিজেপির আক্রমণে কতটা প্রভাব পড়বে তা বলা কঠিন। সত্যিই যদি গান্ধী-নেহরুর পথে হেঁটে নির্বাচনে লড়তে চায় কংগ্রেস তার জন্য আলাদা AI অবতার হয়তো প্রয়োজন নেই। কথার ওজন থাকলে তা যেই বলুন কার্যকর হবেই। এদিকে একই কথা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে যদি খোদ গান্ধীও এসে বলেন, তাহলে তার ফল আলাদা কিছু হবে না। সেইসঙ্গে আরও একটা প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, ঠিক কীভাবে এই অবতার দিয়ে প্রচার চালানো হবে? একেবারে রাস্তাঘাটে মোড়ে মোড়ে মাইক চালিয়ে তাঁদের কথা শোনানো হবে না বলেই প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে প্রচার কতটা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছবে তা বোঝা কঠিন। সুতরাং মোদী সরকার যেভাবে সকলের সামনে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরে, তা একইভাবে কতটা ঠেকাতে পারে কংগ্রেসের নতুন গান্ধী-নেহরু অবতার সেটাই দেখার বিষয়।