নির্বাচনের আগেই মধ্যপ্রদেশে ফের মহিলা সংরক্ষণের ঘোষণা বিজেপি সরকারের। সে রাজ্যে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য বরাদ্দ করা হবে ৩৫ শতাংশ চাকরি। কিন্তু বিজেপির এহেন পদক্ষেপকে স্রেফ ভোট টানার চেষ্টা বলেই পালটা তোপ দেগেছে কংগ্রেস। শুনে নেওয়া যাক।
লোকসভা নির্বাচন তো আছেই, সঙ্গে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তার আগে ভোট টানার লক্ষ্যে জোরদার প্রচারে নেমেছে সব দলই। এর মধ্যেই মহিলাদের সংরক্ষণ নিয়ে একের পর এক বড় ঘোষণা বিজেপির। সম্প্রতিই জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষেত্রে ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করার লক্ষ্যে মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ হয়ে গিয়েছে সংসদে। এরপরেই ফের ভোটমুখী মধ্যপ্রদেশে মহিলাদের জন্য নয়া সংরক্ষণের কথা শোনাল সে রাজ্যের বিজেপি সরকার। সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য ৩৫ শতাংশ আসন সংরক্ষিত রাখা হবে, এমনটাই জানিয়েছে শিবরাজ সিং চৌহান সরকার। কিন্তু ঠিক ভোটের মুখে হঠাৎ করেই এহেন ঘোষণা করাকে সন্দেহের চোখেই দেখছে বিরোধী শিবির। মহিলাদের উন্নতির কথা ভেবে নয়, স্রেফ ভোট টানার লক্ষ্যেই এহেন পদক্ষেপ বিজেপির- এই মর্মে ইতিমধ্যেই গেরুয়া শিবিরকে তোপ দেগেছে কংগ্রেস। ভোটের আগে দেওয়া সুবিধাকে ‘ললিপপ’-এর সঙ্গেও তুলনা করতে ছাড়েননি মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস সাংসদ রণদীপ সুরজেওয়ালা। কোনও শিশু বায়না জুড়লে তাকে যেমন ললিপপ ধরিয়ে ভোলানো হয়, তেমন করেই মূল সমস্যার সমাধান না করে, সমস্যা থেকে নজর ঘোরাতেই মহিলাদের জন্য সংরক্ষণের ঘোষণা করা হচ্ছে- এমনই মত প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস নেতা।
আরও শুনুন: নিয়োগে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি, ফাঁস হয় রাজনৈতিক নেতাদের নামও… কী ঘটেছিল তারপর?
শিবরাজ সিং চৌহান সরকারের আগে মধ্যপ্রদেশে ১৮ বছর ধরে ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস। এমনকি ২০১৮-তেও বিধানসভা ভোটে জয় পায় হাত শিবিরই, পরে বিধায়কদের দলে টেনে সরকার ফেলে দেয় বিজেপি। কিন্তু সাম্প্রতিক পরিস্থিতি অন্য কথাই বলছে। গত কয়েক মাসে একের পর এক বিজেপি নেতা কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। বিভিন্ন জনমত সমীক্ষা বলছে, সে রাজ্যে এবার বিজেপিকে চাপে ফেলতে পারে কংগ্রেস। এই পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রদেশে কয়েক লক্ষ নেতা-কর্মীকে নিয়ে ‘কার্যকর্তা মহাকুম্ভ’ কর্মসূচি নিয়েছিল বিজেপি, যার সূচনা করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর এবার ‘মধ্যপ্রদেশ সিভিল সার্ভিসেস’ বিধি, ১৯৯৭-এর একটি সংশোধনীর মাধ্যমে একমাত্র বন দপ্তর ছাড়া অন্য সরকারি ক্ষেত্রগুলিতে মহিলাদের জন্য ৩৫ শতাংশ চাকরি সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিল সে রাজ্যের সরকার। বিধানসভার পরবর্তী অধিবেশনেই এ সংক্রান্ত বিল পাশ করানো হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। আর তা নিয়েই পালটা আক্রমণ শানিয়েছে হাত শিবির। এমনকি ব্যাপম কাণ্ডে যে খোদ মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান, বিজেপি নেতা তথা মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী লক্ষ্মীকান্ত শর্মা প্রমুখের নাম জড়িয়েছিল, সেই ইস্যু টেনে সুরজেওয়ালার তোপ, সেই সময়েই তো সব চাকরি বিক্রি হয়ে গিয়েছে। এখন চাকরি কোথায় যে সংরক্ষণ থাকবে? আর সেই সংরক্ষণের সুবিধা তাহলে এতদিন চালু করা হয়নি কেন? এমনই একাধিক প্রশ্ন তুলে কংগ্রেস নেতার সাফ দাবি, ভোট টানতে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন শিবরাজ সিং। আর এই সংরক্ষণের ঘোষণাকে হাতিয়ার করেই এবার মধ্যপ্রদেশে বিজেপির বিরুদ্ধে পালটা তোপ দাগল হাত শিবির।