ভারতের ‘মিসাইল ম্যান’ বলেই পরিচিত বিজ্ঞানী তথা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালাম। আর সেই বিজ্ঞানী কালামের স্মৃতিই ফের ফিরে আসছে চন্দ্রযানের যাত্রা শেষের আগে। সম্প্রতি চন্দ্রযান প্রকল্পে আব্দুল কালামের অবদানের কথা মনে করিয়ে দিলেন এক প্রযুক্তিবিদ। ঠিক কী বলেছেন তিনি? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
সফল হয়েছিল উৎক্ষেপণ। তারপর একে একে যাত্রার অনেকগুলি ধাপই সফলভাবে পেরিয়ে গিয়েছে চন্দ্রযান-৩। এখন অপেক্ষা কেবল শেষ পর্যায়ের, যেখানে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করবে চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম এবং একইসঙ্গে চাঁদে পৌঁছবে রোভার প্রজ্ঞানও। গতি কমিয়ে চাঁদে সফটল্যান্ডিংয়ে আদৌ সফল হবে কি না ল্যান্ডার বিক্রম, সেই অপেক্ষায় প্রহর গুনছে গোটা দেশ। চড়ছে উত্তেজনার পারদ। আর এই আবহেই বিজ্ঞানী তথা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালামের কথা মনে করালেন চেন্নাইয়ের এক প্রযুক্তিবিদ।
আরও শুনুন: প্রার্থনায় এক মন্দির থেকে মাদ্রাসা, ‘চন্দ্রযান-৩’ যেন ফেরাল সম্প্রীতির সেই আবহমান ভারতবর্ষ
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেন শনমুগা সুব্রাহ্মনিয়াম নামের ওই ইঞ্জিনিয়ার। যেখানে চন্দ্রযান প্রকল্পে কালামের কথা মনে করিয়েছেন তিনি। মনে করিয়ে দিয়েছেন, কালামের পরামর্শ মেনেই চন্দ্রযান-১-এর সঙ্গে মুন ইমপ্যাক্ট প্রোব জুড়েছিল ইসরো। যার ফলে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অভিযান আগের চেয়ে সুগম হয়েছে। আর ২০০৮ সালে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, চন্দ্রযান ৩-এর অবতরণ সেই ধারাবাহিকতারই ফল, এমনটাই মনে করেন ওই ইঞ্জিনিয়ার।
মজার কথা হল, চন্দ্রযানের সঙ্গে একরকমভাবে জুড়ে গিয়েছে তাঁর নিজের নামও। ২০১৯ সালে চাঁদ ছোঁয়ার মুহূর্তেই ভেঙে পড়েছিল চন্দ্রযান-২-এর ল্যান্ডার বিক্রম। সেবারও চাঁদের দক্ষিণ মেরুতেই নামার কথা ছিল ল্যান্ডারের, কিন্তু পরিকল্পনামাফিক সফট ল্যান্ডিং সফল হয়নি। সেই ঘটনার মাসখানেক পরে চন্দ্রপৃষ্ঠে বিক্রমের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পান সুব্রাহ্মনিয়াম। যদিও সেই সময়ে একটিমাত্র ল্যাপটপ ছাড়া মহাকাশ গবেষণার কোনও অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ছিল না তাঁর কাছে। কেবলমাত্র ছবির পিক্সেল খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেই এই আবিষ্কার করেছিলেন ওই ইঞ্জিনিয়ার, যার জন্য তাঁকে বড় কৃতিত্ব দেয় নাসা।
আরও শুনুন: রাষ্ট্রপতি বলে বিনামূল্যে প্রাপ্তি নয়, উপহারেরও দাম মিটিয়েছিলেন আবদুল কালাম
সেই ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়েই এবার ফের চাঁদ ছোঁয়ার চেষ্টা ভারতের। চার বছর আগের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবারের চাঁদ-সওয়ারিকে যোগ্য করে তুলতে ইসরোর বিজ্ঞানীরা যে চেষ্টার কোনও কসুরই রাখেননি, সে বিষয়ে ইতিমধ্যেই শিলমোহর দিয়েছেন বহু বিজ্ঞানী। গত ১৪ জুলাই শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে রওনা দিয়েছিল চন্দ্রযান ৩। ৩ লক্ষ ৮৪ হাজার কিলোমিটারের যাত্রাপথে এখনও পর্যন্ত যাত্রার প্রতিটি ধাপ সে সফলভাবে পেরিয়েছে। ইতিমধ্যেই তার চাঁদের ল্যান্ডিং সাইটের ডিজিটাল মডেল বানিয়ে ফেলেছেন ওই ইঞ্জিনিয়ার। মহাকাশ গবেষণায় ভারত এবার নতুন মাইলস্টোন তৈরি করতে পারবে কি না, আপাতত গোটা দেশের মতোই সেদিকে তাকিয়ে রয়েছেন তিনিও।