ভোটের আগে আরও বিপাকে অরবিন্দ কেজরিওয়াল। আদালতের নির্দেশে ১৫ দিনের জেল হেফাজতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। তবে সেখান থেকেই দেশের প্রধানমন্ত্রীরা কীভাবে সিদ্ধান্ত নেন, তা বুঝতে চাইছেন আপ সুপ্রিমো। ঠিক কী করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
শিয়রে নির্বাচন। এদিকে দলের সুপ্রিমো জেলে। ভোটের আগে কার্যত বেহাল অবস্থা আম আদমি পার্টির। দলের কথা বাদ রাখলেও, কেজরিওয়াল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। কাজেই দিল্লির প্রশাসনিক কাজকর্ম কিভাবে সামলানো হবে, সেই নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠছে।
আরও শুনুন: AI সহায়ে গান্ধী-নেহরু এসেও কি সামলাতে পারবেন পদ্ম শিবিরের আক্রমণ?
প্রথমে আবগারি দুর্নীতি মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন আম আদমি পার্টির সুপ্রিমো। সেই হেফাজতের মেয়াদ ফুরোলে তাঁকে ১৫ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। জানা যাচ্ছে, তিহাড় জেলেই রাখা হবে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে। এই আবহে সামনে এসেছে আরও একটা বিষয়। যা কেজরিওয়ালের আগামী পরিকল্পনার আভাস দিচ্ছে। জেলে ঢোকার আগে কেজরিওয়াল সঙ্গে রাখতে চেয়েছেন বিশেষ কিছু জিনিস। যার মধ্যে রয়েছে প্রয়োজনীয় ওষুধ, চেয়ার টেবিল এবং কয়েকটা বই। চেয়ার টেবিল বা ওষুধ নিয়ে কারও তেমন মাথা ব্যাথা নেই। তবে কেজরি যে বিশেষ কয়েকটা বই সঙ্গে রাখতে চেয়েছেন তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। জেলে নিজের সঙ্গী হিসেবে ভাগবত, রামায়ণ এবং ‘হাউ প্রাইম মিনিস্টারস ডিসাইড’ (How Prime Ministers Decide) এই তিনটি বই রাখতে চেয়েছেন। প্রথম দুটি বই সকলেরই চেনা। এর আগে বহু রাজনৈতিক বন্দী তাঁদের সঙ্গে রামায়ণ বা ভগবত রাখতেন বলেই জানা যায়। তবে তৃতীয় বইটিতে ধর্মের কোনও প্রসঙ্গ নেই। বিখ্যাত সাংবাদিক নীরজা চৌধুরীর লেখা এই বইয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রীদের কথা লেখা রয়েছে। বই-এর নাম থেকেই বোঝা যায়, একেবারে সাধারন জীবনলিপি বা প্রধানমন্ত্রীদের রচনা লেখা নেই এই বইতে। বরং তাঁরা কীভাবে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতেন, সেই সম্পর্কিত আলোচনাই করা হয়েছে এই বইয়ে।
আরও শুনুন: ভোট বড় বালাই! চলছে কু-কথায় শোকজের মরশুম, কিন্তু অন্য সময়?
মোট ৬ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর কথা এই বইয়ে রয়েছে। প্রথমেই ইন্দিরা গান্ধী। রাজনীতির ইতিহাসে ইন্দিরার শাসনকাল বরাবরই বেশ জনপ্রিয়। তাঁর আমলে এমন অনেক কিছু সাক্ষী থেকেছে ভারতবর্ষ যা নিয়ে এখনও আলোচনা হয়। এমনকি সরকার পক্ষ কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার সময়ও ইন্দিরা প্রসঙ্গ টানেন। দেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক জীবনের খুঁটিনাটি লেখা রয়েছে এই বইয়ে। রয়েছে একাধিক সাক্ষাৎকার। বিভিন্ন ঘটনার উল্লেখ, আরও অনেক কিছুই। এছাড়া এই বইয়ে আলোচনা করা হয়েছে রাজীব গান্ধী, ভি পি সিং, পি ভি নরসিমহা রাও, অটল বিহারী বাজপেয়ী এবং মনমোহন সিং-এর কথা। তাঁরা প্রত্যেকেই কীভাবে দেশের বিভিন্ন জটিল বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেন তার আভাস এই বই পড়লে মিলবে। আসলে, ইতিহাস থেকেই আগামীয় পথ চলার শিক্ষা মেলে। এই বই পড়ে হয়তো এমনই কিছু অজানা জিনিস বুঝতে চাইছেন কেজরি। তবে দলের সুপ্রিমোর এহেন জেল হাজত বাস দেশের রাজনীতিতে আম আদমি পার্টির ভবিষ্যৎ ঠিক কোথায় নিয়ে যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।