‘ আপনার নম্বর বন্ধ করে দেওয়া হবে…’, ইদানীং অচেনা নম্বর থেকে আসা ফোন ধরলে এমনটা শুনতে হচ্ছে। আর এই ফোন আসছে কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রক থেকে। আদৌ কি এই তথ্য সঠিক? নাকি সরকারি দপ্তরের নামে শুরু হয়েছে নতুন জালিয়াতি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
অচেনা নম্বর থেকে ফোন। ধরলেই শুনতে হবে ভয়ঙ্কর হুমকি। তার থেকেও বড় কথা, ফোনের ওপারে থাকা ব্যক্তি নিজের পরিচয় দেবেন কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রকের অফিসার হিসেবে। কাজেই সেই পরিচয় বিশ্বাস করছেন অনেকেই। আর এতেই বাড়ছে বিপদ।
আরও শুনুন: ভোটের মুখে বড় বড় নেতার থেকে ফোন পাচ্ছেন? সাধু সাবধান!
ইন্টারনেটের যুগে সাইবার জালিয়াতি নেহাতই কম হয় না। মেসেজ বা ফোন করে ব্যাঙ্কের তথ্য চান অনেকেই। সেক্ষেত্রে নিজেদের আসল পরিচয় লুকিয়ে এমনভাবে ভয় দেখানো হয়, যা সহজেই বিশ্বাস করে নেন কেউ কেউ। ভুল করে একবার ব্যাঙ্কের তথ্য দিলেই ফাঁকা হবে অ্যাকাউন্ট। তবে সম্প্রতি আরও এক নতুন জালিয়াতি শুরু হয়েছে। ফোন করে কোনও ব্যাঙ্কের তথ্য চাওয়া হচ্ছে না। বরং বলা হচ্ছে, এটি সরকারি দপ্তরের ফোন। ওপারে থাকা ব্যক্তি সরাসরি দাবি তুলছেন, এই নম্বরের পরিষেবা বিচ্ছিন্ন করা হবে। কারণ ওই নম্বর ব্যবহার করেই বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বেআইনি কাজ চালাচ্ছে। সেই খোঁজ পেয়েছে দেশের সরকার। তাই নম্বর বন্ধ করে দেওয়ার পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এমন হুমকি শুনলে স্বাভাবিক ভাবেই অনেকে ঘাবড়ে যাবেন। আর সেই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে প্রতারকরা। ফাঁদে পা দিয়ে অনেক সময় আর্থিক প্রতারণার শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। কখনও বা ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি ইতিমধ্যেই নজরে এসেছে কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রকের। সেখান থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এমন কোনও ফোন তাঁদের দপ্তর থেকে করা হচ্ছে না।
আরও শুনুন: বেতন কমলে আপত্তি নেই ৬৪ শতাংশ ভারতীয়ের! নেপথ্যে কী কারণ?
আসলে, এই ধরনের ভুয়ো নম্বর চেনার অন্যতম উপায় তার বিন্যাস। ভারতীয় কোড অর্থাৎ +৯১ রয়েছে এমন কোনও নম্বর থেকে সাধারণত এমন জালিয়াতি হয় না। তবে এক্ষেত্রে সেটুকুও চেনার উপায় নেই। কারণ অচেনা নম্বরের শুরুতে রয়েছে +৯২। এই কোড ভারতীয় না হলেও প্রায় কাছাকাছি। তাই অনেকেই বুঝতে না পেরে ফোন ধরছেন। ব্যস, বাকিটা প্রতারকদের দায়িত্ব। কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের তরফে এই +৯২ কোডের ব্যাপারেই বিশেষভাবে সাবধান করা হয়েছে। না বুঝে ফোন ধরলেও কোনও ব্যক্তিগত তথ্য যেন না বলা হয়। সরকারের তরফে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ফোন করে নম্বর বন্ধ করার হুমকি বা অন্য কোনও নির্দেশ দেওয়া হয় না। এমন কিছু হলে তা জানানোর পদ্ধতি আলাদা। তাই ফোনে কেউ এই ধরনের কথা বলছে শুনলেই বুঝে নিতে হবে ব্যাপারটা ভুয়ো। এক্ষেত্রে সাবধান হওয়ার প্রথম পদক্ষেপ কোনও ব্যক্তিগত তথ্য না প্রকাশ করা। দ্বিতীয়ত যে নম্বর থেকে ফোন এসেছে সেটি সাইবার ক্রাইম বিভাগকে জানানো। এর জন্য সরকারি পোর্টাল রয়েছে। সেখানে অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি, একই নম্বর অন্য কেউ ব্যবহার করছে কি না সেই খোঁজও নেওয়া যাবে। সন্দেহ হলে সেই নিয়েও জানানো যাবে অভিযোগ। তাই জালিয়াতি কমাতে বারবার চোখ কান খোলা রাখার পরামর্শ দিয়েছেন টেলিকম মন্ত্রকের কর্তারা।