সোশ্যাল মিডিয়ার নেশায় মজেছি আমরা অনেকেই। অনেকেই আবার এই নেশা কাটিয়ে উঠতে চান, কিন্তু নেশা কাটানো তো সহজ কথা নয়। তাঁদের জন্য অভিনব এক উপায় বাতলে দিয়েছেন এক ইন্দো-আমেরিকান ব্যবসায়ী। কী উপায়? শুনে নিন।
কাজ করতে বসেছেন, এদিকে পাশে রাখা মোবাইল, কিংবা ল্যাপটপে কোনও উইন্ডোতে খোলা রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। আর বারবারই অবাধ্য হাত এবং চোখ চলে যাচ্ছে সেদিকে। ফল অনিবার্য। ছেদ পড়ছে কাজে। অন্যদিকে যাওয়া মনকে আবার কাজে ফিরিয়ে আনতে আরও খানিক সময় নষ্ট।
আরও শুনুন: খালি পায়েই পদ্ম সম্মানের মঞ্চে, দেশবাসীকে চমকে দেওয়া এই পরিবেশবিদকে চেনেন?
খুব চেনা ছবি, না? হ্যাঁ, আমাদের অধিকাংশের জীবনেই আজকাল এমনটা ঘটেই থাকে। সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে আমরা যেভাবে জড়িয়ে গিয়েছি, প্রয়োজন থাক বা না থাক, সেদিকে বারবার হাজির না হলে আমাদের বড়ই অস্বস্তি হয়। একই অস্বস্তির শরিক ছিলেন মনীশ শেঠিও। এই ইন্দো-আমেরিকান ব্যবসায়ী একটি নামকরা ব্র্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা। সোশ্যাল মিডিয়ার মোহে আপাদমস্তক মজে ছিলেন তিনিও। এমনকি অফিসের কাজের মধ্যেও বারবার সেদিকে মন চলে যেত তাঁর। অবশেষে এই নেশা থেকে রেহাই পাওয়ার একটি উপায় ভেবেচিন্তে বের করেন তিনি।
আমেরিকার একটি বিজ্ঞাপন সংস্থার ওয়েবসাইটে একজন কর্মী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেন মনীশ। সেই কর্মীর কাজ আর কিছুই না, তাঁকে চড় মারা। চমকে উঠলেন তো? আজ্ঞে হ্যাঁ, ঠিক এমনটাই চেয়েছিলেন মনীশ শেঠি। তাঁর এই নবনিযুক্ত সহকারীর কাজ হবে সারাক্ষণ তাঁর পাশে বসে থাকা। তা সে অফিস, বাড়ি, কিংবা কোনও ক্যাফে, যেখানেই হোক। মনীশ যতক্ষণ কাজ করবেন, ততক্ষণ তিনি কেবল নজর রাখবেন মনীশের কম্পিউটারের স্ক্রিনের দিকে। আর যেই মুহূর্তে মনীশ কাজ ফেলে সোশ্যাল মিডিয়ার দিকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করবেন, তাঁকে রীতিমতো ধমকধামক দেবেন ওই সহকারী। আর তাতেও কাজ না হলে? কষিয়ে চড় মারার ঢালাও অনুমতি দিয়ে রাখছেন মনীশ।
আরও শুনুন: উদ্দেশ্য মহৎ, নগ্ন হয়ে ফটোশ্যুটেও তাই রাজি কেমব্রিজের পড়ুয়ারা
এই কাজের জন্য প্রতি ঘণ্টায় ৮ ডলার বেতন দেওয়ার ঘোষণা করেছিলেন ওই ব্যবসায়ী। বিজ্ঞাপনে ফল মেলে। কারা নামের একটি মেয়েকে ওই কাজে নিযুক্ত করেন মনীশ। তিনি জানিয়েছেন, এই পরীক্ষার ফল চমকে দিয়েছে তাঁকে। তাঁর কার্যক্ষমতা যেখানে অধিকাংশ দিনে ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশের আশেপাশে ঘোরাফেরা করত, কারা পাশে বসে থাকলে তা একলাফে পৌঁছে যেত ৯৮ শতাংশে।
২০১২ সালে এই বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন মনীশ। ন’বছর পরে তা আবার প্রকাশ্যে এল এলন মাস্কের দৌলতে। টেসলা এবং স্পেসএক্স সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা এই ঘটনাটিকে নিজের টুইটারের পাতায় ভাগ করে নিয়েছেন দুটি আগুনের ইমোজি সহ। তবে কি সোশ্যাল মিডিয়ার আসক্তি কাটিয়ে উঠতে চান তিনিও? সে ইশারা নাহয় সমঝদারেরাই বুঝে নিন।