ইনজেকশন দিয়েছেন চিকিৎসক। তাতেই যত বিপত্তি। অভিযোগ, ভুল ইনজেকশনের জেরেই অসুস্থ হয়েছে খুদে। আর সেই অসুস্থতা মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে তাকে। অভিযোগের আঙুল উঠেছে চিকিৎসকের দিকেই। কোথায় ঘটল এমন কাণ্ড? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
চিকিৎসার গাফিলততিতে মৃত্যু। এমন অভিযোগ হামেশাই শোনা যায়। রোগীমৃত্যুর কারণ হিসেবে চিকিৎসকের ভুলকেই চিহ্নিত করেন অনেকে। সেই নিয়ে বিস্তর ঝামেলা হয়। হাসপাতালে ভাঙচুর অবধি হতে পারে এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে। সম্প্রতি এক খুদের মৃত্যুর কারণ হিসেবেও উঠে এসেছে চিকিৎসকের গাফিলতি।
ঘটনা কর্নাটকের। চিকামাগালুরু জেলার কাঞ্চাপুরা গ্রামের বাসিন্দা অশোক। সম্প্রতি নিজের সাত বছরের সন্তান, সোমেশকে নিয়ে স্থানীয় এক ডাক্তারখানায় গিয়েছিলেন। কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছিল সোমেশ। ডাক্তারকে সেকথা বলতেই তড়িঘড়ি একখানা ইনজেকশন দিয়ে দেন খুদে সোমেশকে। এমনিতে খুদেরা ইনজেকশন দেখলে ভয় পায়। এক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম হয়নি। তবে জ্বরের ঘোরে খুব বেশি প্রতিবাদ করেনি সোমেশ। জানা গিয়েছে, সেদিন খুদে সোমেশের পিঠে ইনজেকশন দিয়েছিলেন ওই চিকিৎসক। এরপর তাকে নিয়ে বাড়ি চলে যেতেও বলেন। চিকিৎসকের কথা মতো ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন অশোক। এরপরই শুরু হয় সমস্যা। কিছুক্ষণের মধ্যেই সোমেশের সারা গায়ে ফোস্কা দেখা দিতে শুরু করে। সেইসঙ্গে তীব্র যন্ত্রণা। ছেলের অবস্থা দেখে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন অশোক ও পরিবারের বাকি সদস্যরা। তক্ষনি কাছের এক বেসরকারি হাসপাতালে সোমেশকে নিয়ে যান তাঁরা। কিন্তু ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে সোমেশকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে পরিবারের। সকলেই ধরে নেন, যত বিপত্তি ওই ইনজেকশন থেকেই হয়েছে। সরাসরি থানায় গিয়ে ওই চিকিৎসকের নামে অভিযোগ দায়ের করেন অশোক। তাঁর দাবি ছিল, ইনজেকশনের ভুল প্রয়োগেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর সন্তানের।
অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। জানা যায়, অভিযুক্ত চিকিৎসকের নাম বরুণ। আয়ুর্বেদ বিদ্যায় স্নাতক এই বরুণ, নিজেকে চিকিৎসক বলেই প্রচার করতেন। তবে ইনজেকশন দেওয়ার অনুমতি তাঁর ছিল না। সেসবের তোয়াক্কা না করেই নিজের মতো চিকিৎসা চালিয়ে যেতেন। মনে করা হচ্ছে, সেই কারণেই এমন বিপত্তি। না বুঝে ইনজেকশনের অতিরিক্ত ডোজ দিয়েছিলেন সোমেশকে। তাতেই মৃত্যু হয়েছে খুদের। প্রাথমিক তদন্তের পর বরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আগামীদিনে এই নিয়ে আরও তদন্ত হবে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ কর্তারা। আইনি পথেই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, আশ্বাস প্রশাসনের। তবে এই একটি ঘটনা নয়। এর আগেও চিকিৎসার গাফিলতিতে মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। কিছু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে অভিযোগ ভিত্তিহীন। ইচ্ছা করেই চিকিৎসকদের কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে সত্য প্রমাণিত হয় অভিযোগ। তাতে শাস্তিও পান অভিযুক্ত। এই ঘটনার ক্ষেত্রেও তেমনটাই হবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। যদিও শেষ কথা বলবে আদালত।