লোকসভা ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ক্ষমতায় ফেরার ডাক দিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু মোদি ফের প্রধানমন্ত্রী হলেও, সংখ্যাগরিষ্ঠতা মেলেনি। আর সেই অভিমানেই নিজেকে শেষ করে দিলেন বিজেপি কর্মী।
নরেন্দ্র মোদি তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন বটে। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে নয়। জোটসঙ্গীদের কাঁধে ভর করেই মসনদের দখল পেয়েছেন মোদি। আর এই পুরো বিষয়ে মর্মাহত হয়ে নিজেকেই শেষ করে দিলেন হরিয়ানার এক বিজেপি কর্মী। মোদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ার খবরে চূড়ান্ত অবসাদে ডুবে গিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি, এমনটাই জানাচ্ছেন তাঁর আত্মীয়রা। কিন্তু সেই অবসাদ যে এমন মর্মান্তিক পরিণতি ডেকে আনবে, তা হয়তো কেউই ভাবতে পারেননি। অথচ রাজনীতিই এখানে বড় হয়ে দাঁড়াল প্রাণের চেয়ে।
আরও শুনুন:
বিচারপতিকে ‘ভগবান’ মনে করলেই সর্বনাশ! হুঁশিয়ারি খোদ প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের
এমনিতে চলতি বছরের লোকসভা ভোটকে শক্তিপরীক্ষা হিসেবেই দেখেছিল বিজেপি। দুবার সরকার গড়ার পর তৃতীয়বার মসনদে ফেরা নিয়ে কোনও সংশয় কারও মনেই ছিল না। তাই ভোটের আগের অন্তর্বর্তী বাজেট ঘোষণায় যেমন বিশেষ কোনও বড় প্রতিশ্রুতি ছিল না, তেমনই ভোটপ্রচারে বারবার সরকার গড়ার পর কী কী করা হবে তার ব্লুপ্রিন্ট দিয়েছেন মোদি। গোড়া থেকেই বিরোধীদের দুরমুশ করে ৪০০ পার-এর হুংকার দিয়েছেন তাবড় নেতারা। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে বিজেপির পরিকল্পনায় অনেকখানিই জল ঢেলে দিয়েছেন বিরোধীরা। ৪০০ দূরে থাক, গত লোকসভার থেকেও অনেক ভোট কমে মাত্র ২৪০ আসনেই থেমে গিয়েছে বিজেপির জয়যাত্রা। ফলে বিজেপির পক্ষে এককভাবে সরকার গড়ার পথ ছিলই না। মোদি জমানায় এনডিএ সরকার মোদি সরকারে পর্যবসিত হয়ে গেলেও, এবার ম্যাজিক ফিগার ছোঁয়ার জন্য সেই এনডিএ জোটের উপরেই নির্ভর করতে হয়েছে মোদিকে। অবশেষে নীতীশ-নাইডুর সমর্থনে ভর করেই তৃতীয়বার মসনদে ফিরতে পেরেছেন তিনি।
আরও শুনুন:
বিরোধী বলে কি ভালো বলতে নেই! যোগীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ কংগ্রেসের মুসলিম সাংসদ
বলার অপেক্ষা রাখে না, বিজেপি শিবিরের কাছে এই অভিজ্ঞতা আদৌ সুখের নয়। তবে সেই ঘটনাকেই এই ব্যক্তি যে এতখানি বড় করে দেখবেন, তাও ভাবা যায়নি। হরিয়ানার ওই বাসিন্দার নাম সুখবিন্দর। বছর ৪৫ বয়সের সুখবিন্দর কাজ করতেন পরিবহণ দপ্তরে। পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, ৪ জুন ভোটের ফলপ্রকাশের পর থেকেই গুম হয়ে ছিলেন তিনি। বাড়ির সকলের বোঝানোতেও কোনও কাজ হয়নি। সম্প্রতি হিসার এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন। আর সেখানেই বিষ খেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন সুখবিন্দর। তবে পরোক্ষভাবে রাজনীতিই যে তাঁর মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াল, একবাক্যে সে কথাই বলছে ওই বিজেপি কর্মীর পরিবার।