নষ্ট হয়েছে দুধ। আর্থিক ক্ষতিও হয়েছে। এর জন্য দায়ী রাহুল গান্ধী। এমনই দাবি বিহারের এক দুধ বিক্রেতার। ইতিমধ্যেই তিনি কংগ্রেস নেতার নামে মামলা দায়ের করেছেন আদালতে। ঠিক কী অভিযোগ? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
বিরোধী দলনেতা। তাই শাসকদলের বিরুদ্ধে মন্তব্য করতেই হয় রাহুল গান্ধীকে। কিন্তু নিজের অজান্তেই অনেক সময় মাত্রা ছাড়িয়ে ফেলেন। তাতে বিপদের মুখেও পড়তে হয় তাঁকে। বেফাঁস মন্তব্যের জেরে মানহানির মামলাও হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এমনই এক ঘটনায় ফের নিশানায় রাহুল গান্ধী। এবার অবশ্য সরকার পক্ষের কেউ নন, রাহুলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন বিহারের এক ব্যক্তি।
আরও শুনুন:
আম্বেদকরকে সম্মান, বিজেপিকে একহাত, নীল টি-শার্টে খোলতাই রাহুলের রং-রাজনীতি
পেশায় দুধ বিক্রেতা মুকেশ কুমার চৌধুরীর, রোজের রুটিন বাড়ি বাড়ি গিয়ে দুধ বিলি করা। সকাল থেকে দুপুর অবধি চলতে থাকে সেই কাজ। দিনশেষে যেটুকু রোজগার হয় তার বেশিরভাগটাই খরচ হয়ে যায়। হাতে পড়ে থাকা লাভ দিয়ে কোনওক্রমে সংসার চালানো। এবার কোনওদিন যদি বিলি করার সময় দুধ নষ্ট হয়, তাহলে তো সমস্যাই সমস্যা। লাভ তো হবেই না উলটে ক্ষতি। অথচ ঠিক তেমনটাই হয়েছে মুকেশের। মাঝরাস্তায় হাত ফসকে থেকে পড়ে যায় দুধের ক্যান। তাঁর দাবি, ওই ক্যানে অন্তত ৫ লিটার দুধ ছিল। প্রতি লিটার ৫০ টাকা হিসাবে প্রায় ২৫০ টাকা ক্ষতি হয়েছে। অনেকের কাছেই টাকার অঙ্কটা কম মনে হতে পারে। কিন্তু মুকেশের কাছে ওই টাকাই ছিল অনেক। তাই রীতিমতো চটে যান বিহারের মুকেশ। আসলে, এই ক্ষতির জন্য তিনি নিজেই যে দায়ী এমন নয়। অন্তত তাঁর দাবি তেমনটাই। বরং এর দায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর ঘাড়ে চাপিয়েছেন তিনি। প্রশ্ন উঠতেই পারে, কংগ্রেস সাংসদ এত বড় মাপের একজন নেতা হয়ে কেন ওই সাধারণ দুধ বিক্রেতার এমন ক্ষতি করলেন?
আরও শুনুন:
‘বাড়িতে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে?’ প্রশ্ন রাহুলের, ‘আপনার বিয়ে কবে?’ পালটা দিলেন ছাত্রীরাও
বিষয়টা আসলে অন্যরকম। রাহুল নিজে এসে ওই দুধ বিক্রেতাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেননি। কিংবা কাউকে নির্দেশও দেননি এমনটা করার। এই কাজ করেছে রাহুলের বলা কিছু কথা। যা শোনার পর সম্বিত হারিয়ে সব দুধ ফেলেছেন মুকেশ নিজে। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গীতে কিছুদিন আগেই রাহুল মন্তব্য করেছেন, দেশের সমস্ত স্বয়ংশাসিত সংস্থা বিজেপি এবং আরএসএস কবজা করে নিচ্ছে! যা দেশের জন্য অন্তত আশঙ্কার কারণ হতে পারে বলেই ইঙ্গিত কংগ্রেস নেতার। এই মন্তব্য শুনেই রীতিমতো চমকে ওঠেন বলে দাবি বিহারের দুধ বিক্রেতা মুকেশের। ঘটনাচক্রে সেইসময় তাঁর হাতে দুধের ক্যান ছিল। যা ভুল করে পড়ে যায়, এবং তাতেই দুধ নষ্ট, আর্থিক ক্ষতি, ইত্যাদি ইত্যাদি…। যেহেতু রাহুলের মন্তব্য শুনে এই কাণ্ড, তাই সব দায় কংগ্রেস নেতার। ইতিমধ্যেই রাহুলের নামে আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছেন বিহারের মুকেশ। তাঁর অভিযোগ, এই ধরনের মন্তব্য করে রাহুল সার্বভৌমত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন!। পাশাপাশি তাঁর আর্থিক ক্ষতির দায়ও কংগ্রেস নেতার এই দাবি মুকেশের। যদিও রাহুলের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এই প্রথম নয়। এর আগেও মানহানি সহ বিভিন্ন মামলায় নাম জড়িয়েছে কংগ্রেস নেতার। এমনকি তাঁর সাংসদ পদও বাতিল হয়েছিল স্রেফ বেফাঁস মন্তব্যের জেরে। তবে মুকেশ যে যুক্তি সাজিয়ে অভিযোগ এনেছেন তা অভিনব বলাই যায়। আদৌ এই অভিযোগে কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ হয় কি না, তা দেখা এমন সময়ের অপেক্ষা।