যুবককে গুম করে দিয়েছেন তার শ্যালক। অভিযোগ উঠেছিল এমনটাই। যুবকের মৃত্যু হয়েছে ভেবেও শোকে বিহবল হয়ে পড়েছিল তাঁর পরিবার। কিন্তু সেই যুবককেই নাকি খুঁজে পাওয়া গেল সম্প্রতি, তাও তাঁকে দেখতে পেলেন তাঁর শ্যালকই। ঘটনায় তাজ্জব সকলেই। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
দোকানে বসে সাধ মিটিয়ে মোমো খাচ্ছেন এক যুবক। আর তাঁকে দেখেই চোখ চড়কগাছ আরেকজনের। কেন-না, তিনি তো জানতেন এই যুবক মারা গিয়েছেন। তার চেয়েও বড় কথা, ওই যুবকের মৃত্যুর দায়ে অভিযোগের আঙুল উঠেছিল তাঁরই দিকে। এহেন পরিস্থিতিতে ওই যুবককে বহালতবিয়তে মোমো খেতে দেখে একেবারেই তাজ্জব হয়ে গিয়েছেন তিনি।
কী ঘটেছে ঠিক? তাহলে খুলেই বলা যাক।
আরও শুনুন: বিয়ের খরচ প্রায় ৫০ লক্ষ, বছর দুই ঘুরতেই বাড়ির সব পরিচারককে নিয়ে উধাও স্বামী
নিশান্ত কুমার আদতে বিহারের নবগছিয়া ধ্রুবগঞ্জের বাসিন্দা। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। ভাগলপুরের সুলতানগঞ্জের গনগনিয়া গ্রামে তাঁর শ্বশুরবাড়ি থেকেই নিখোঁজ হন ওই যুবক। চার মাস ধরে ছেলের শোকে মুহ্যমান পরিবারের লোকজন। শ্বশুর এবং শ্যালক মিলে তাঁর ছেলেকে গুম করে দিয়েছেন, এই অভিযোগে সরাসরি পুলিশেরও দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁর বাবা। সুলতানগঞ্জ থানায় ওই যুবকের শ্যালক রবিশঙ্কর সিং এবং শ্বশুর নবীন সিং-এর বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তাঁর বাবা সচ্চিদানন্দ সিং। তবে এতদিনেও ছেলের খোঁজ না পেয়ে সকলে ধরেই নিয়েছিলেন যে তিনি আর বেঁচে নেই। যুবকের এহেন পরিণতি মেনে নিতে পারেননি কেউই। যাঁকে সবাই মৃত বলেই ধরে নিয়েছেন, তিনি যে কখনও ফিরে আসতে পারেন, এমনটা তাঁরা ভাবতেও পারেননি।
আরও শুনুন: মেয়ের প্রথম বিয়েতে আপত্তি, ফের বিয়ের আয়োজন পরিবারের, পাত্রকে রাখি পরালেন কনে
অথচ বাস্তবে ঘটেছে ঠিক তেমনটাই। জানা গিয়েছে, নয়ডার একটি মোমোর দোকানে খেতে গিয়েছিলেন যুবকের শ্যালক রবিশঙ্কর সিং। আর সেই দোকানেই দাঁড়িয়ে ছিলেন এক ভিখারি। দোকানি তাঁকে গালিগালাজ করে তাড়ানোর চেষ্টা করছিলেন। ময়লা পোশাক দেখে ভিখারিকে এড়িয়ে যাচ্ছিলেন অনেকেই। তবে রবিশঙ্কর তেমনটা করেননি। উলটে দোকানিকে বলেন ওই ভিক্ষুককে এক প্লেট মোমো দিতে। কিন্তু খাওয়ার সময় তাঁর দিকে ভাল করে তাকাতেই হতবাক হয়ে যান রবিশঙ্কর। তাঁকে নিশান্ত বলে চিনতে পারেন তিনি। এরপরে তাঁকে নিয়েই সরাসরি স্থানীয় পুলিশের কাছে যান রবিশঙ্কর। নিশান্তকে বিহার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করার পর তাঁকে আদালতেও পেশ করা হয়েছে। তাঁকে আদৌ অপহরণ করা হয়েছিল, নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কাহিনি রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে নিশান্তকে খুঁজে পাওয়ার দরুন তিনি নিজে অভিযোগের নিশানা থেকে মুক্তি পেলেন বলেই মনে করছেন তাঁর শ্যালক।